বেশ কিছু বড় টিলার সন্নিবেশে গড়া পাড়ায় অন্তত ২০০ মানুষের বাস। এসব মানুষের দৈনন্দিন ব্যবহারের পানির উৎস হিসেবে সেখানে আছে একটি মাত্র চাপকল। ৭ বছর আগে তিন মাসের চেষ্টায় প্রায় ৩০ ফুট গভীর একটি কূপ খনন করে তার ভেতর বসানো হয়েছে চাপকলটি। বর্ষাকালে এ চাপকলের পানিতে এখানকার মানুষের কোনোমতে চললেও গরমকাল এলেই শুরু হয় পানির তীব্র ভোগান্তি। পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় ফাল্গুন-চৈত্র মাসে এই চাপকলে আর পানি পাওয়া যায় না। তখন বাধ্য হয়ে এক-দেড় কিলোমিটার দূরের জনবসতি থেকে পানি সংগ্রহ করে ব্যবহার করতে হয় পাড়াবাসীর। সুপেয় পানির এমন সংকট মিরসরাই উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের ঘেড়ামারা গ্রামের আজিজনগর এলাকায়।

৪ ফেব্রুয়ারি দুপুরে সরেজমিনে আজিজনগর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বড় কয়েকটি টিলার ওপর আলাদা বাড়ি করে বসতি গড়েছে অন্তত ২০০ মানুষ। এসব মানুষের নিত্যদিনের পানির চাহিদা মেটাচ্ছে পাড়ার মাঝখানে ৩০ ফুট গভীরে খনন করা একটি কূপের নিচে স্থাপন করা একটি চাপকল। মাটির সিঁড়ির ধাপ বেয়ে নিচে নেমে পালা করে সে চাপকল থেকে পানি সংগ্রহ করতে দেখা যায় পাড়ার নারীদের।

সেখানে কথা হয় কূপের চাপকল থেকে পানি নিতে আসা পঞ্চাশোর্ধ্ব নারী রাবেয়া খাতুনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমাদের এলাকাটি কোনো বিচ্ছিন্ন জনপদ নয়। তবু এখানে কোনো ধরনের সরকারি সুযোগ-সুবিধা পৌঁছায় না। এখানে চলাচলের ভালো রাস্তা নেই, বিদ্যুৎ নেই , পানির সংকট নিত্যদিনের। টিলা প্রকৃতির এলাকা হওয়ায় এখানে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর কিছুটা নিচে। তাই পুরো পাড়ার মানুষের ব্যবহারের জন্য নিজেরা স্বেচ্ছাশ্রমে তিন মাস ধরে গভীর একটি কূপ খনন করে তার নিচে একটি চাপকল বসিয়েছি। বর্ষাকালে কোনোমতে চললেও গরমকাল আসতেই এই চাপকল থেকে পানি ওঠা বন্ধ হয়ে যায়। তখন দূরদূরান্ত থেকে পানি এনে রান্নাবান্না, খাওয়া, গোসলসহ সব ধরনের কাজ সারতে হয়। সত্যি কথা হচ্ছে, গরমকাল এলে পানির সংকটের কারণে পাড়ার মানুষ এক দিন পরপর গোসল করে। এখানে একটি গভীর নলকূপ স্থাপন করে দিলে আমাদের এই সংকটের অবসান হতো।’

এ বিষয়ে মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহফুজা জেরিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘করেরহাট ইউনিয়নের আজিজনগর এলাকায় একটি পাড়ায় মানুষের পানিসংকটের বিষয়টি সম্পর্কে জেনেছি। জায়গাটি পরিদর্শন করে দ্রুত সেখানে পানিসংকট নিরসনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব আমরা।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র এল ক চ পকল

এছাড়াও পড়ুন:

গরমে নিজেকে সুস্থ রাখবেন কীভাবে?

গরম বাড়ার সাথে সাথে শরীরে ক্লান্তিভাব বেড়ে যায়। এর ফলে কমে যায় কাজের ক্ষমতা। অনেক সময় খেতে ইচ্ছে হয় না। অনেকের পেটেও নানা সমস্যা দেখা দেয়। বেশি গরমে হঠাৎ হঠাৎ অনেকের তাপমাত্রা বেড়ে যেতে থাকে।  এটি শরীরের জন্য একদমই ভালো নয়। অনেক সময় পেট ফাঁপা, ত্বকের সংক্রমণ, হজমের সমস্যার কারণে এই সমস্যা দেখা দেয়। এই সমস্যা থেকে রক্ষা পেতে কিছু বিষয় মাথায় রাখতে পারেন। যেমন-

১. গরমকালে মসলাদার খাবার, ভাজা খাবার কিংবা জাঙ্ক ফুড, কোমল পানীয়, আইসক্রিম- এই ধরনের খাবার জন্যও শরীর অনেক সময় গরম হতে থাকে। এ কারণে এসব খাবার খাওয়া এড়িয়ে চলুন।

২. গরমকালে যতটা সম্ভব হালকা খাবার খান। খাদ্য তালিকায় সবুজ শাকসবজি, লেবু, পুদিনা পাতা, লাউ, শশা, তরমুজ, কমলা লেবু, আঙ্গুরের মতো মৌসুমি ফল যোগ করুন। এসব খাবার শরীরকে ঠান্ডা রাখতে সহায়তা করে।

৩.বেশি গরম পড়লে অনেকেই সরাসরি ফ্রিজের ঠান্ডা পানি খান। এটা ঠিক নয়। এই ঠান্ডা জল খেলে সর্দি-কাশির সমস্যা বাড়বে। এমনকি ঠান্ডা লেগে আপনার শরীরের তাপমাত্রা বাড়তে পারে। তাই এই সময়ে ঠান্ডা পানি খেতে চাইলে মাটির কলসি ব্যবহার করুন। এতে পানি অনেকক্ষণ ঠান্ডা থাকে।

৪. এই গরমের সময় মসলাদার খাবার, এমনকি বাইরের কোনও স্ট্রিট ফুড খাওয়া ঠিক নয়। এতে আপনার পেটের সমস্যা হতে পারে।

৫. অনেকের হয়তো জানা নেই, মানসিক চাপের কারণেও শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়। তীব্র মানসিক চাপের সঙ্গে শরীরের তাপমাত্রা হু হু করে বাড়তে থাকে। এ কারণে গরমকালে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমান। মাথায় চাপ কম নিন। শরীরকে ঠান্ডা রাখুন। সেই সঙ্গে ধ্যান করুন। এতে মানসিক চাপ কমবে। শরীরের তাপও কিছুটা হলে কমবে। 
৬. গরমেও স্কুল, কলেজ, অফিসে সকলকেই যেতে হয়। এই তীব্র সূর্যালোক ও তাপপ্রবাহের কারণ ও শরীরে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সময়ে সরাসরি সূর্যের আলো গায়ে লাগতে দেবেন না। ছাতা বা টুপি ব্যবহার করুন। হালকা রঙের পোশাক পরুন। ছায়াযুক্ত স্থানে থাকার চেষ্টা করুন। 

৭. প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন। শরীরকে হাইড্রেট রাখার চেষ্টা করুন। এসময়ে অতিরিক্ত পরিশ্রম করা ঠিক নয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, সঠিক সময়ে খাওয়া-দাওয়া করলে, শরীর হাইড্রেট থাকলে এবং স্বাস্থ্য বিধি মেনে চললে আপনার শরীর সুস্থ থাকবে। সেই সঙ্গে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কিছুটা হলেও কমবে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গরমে নিজেকে সুস্থ রাখবেন কীভাবে?