দণ্ডিত অপরাধীকে ক্ষমার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির একক ক্ষমতা কমানোর সুপারিশ করেছে বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, সরকার এ বিষয়ে একটি বোর্ড করবে। বোর্ডের সুপারিশের ভিত্তিতে রাষ্ট্রপতি দণ্ডিত ব্যক্তিকে ক্ষমা করতে পারবেন।

গতকাল বুধবার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে প্রতিবেদন জমা দেন কমিশনের প্রধান আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি শাহ আবু নাইম মোমিনুর রহমান।

সংস্কার প্রস্তাব তৈরিতে বিরাজমান সমস্যা, সংবিধানে বিচার বিভাগ-সংক্রান্ত বিধান, সংশ্লিষ্ট আইন, প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো, জনবল, আর্থিক এবং ভৌত ও লজিস্টিক বিষয়াদির দিকে নজর দেওয়া হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

কমিশন পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় প্রতিষ্ঠা, প্রধান বিচারপতি ছাড়া অন্য বিচারক নিয়োগে কমিশন, সব প্রশাসনিক বিভাগে হাইকোর্টের স্থায়ী বেঞ্চ, জেলা পর্যায়ে বাণিজ্যিক আদালত, উপজেলায় দেওয়ানি ও ফৌজদারি আদালত, স্থায়ী অ্যাটর্নি সার্ভিস গঠনসহ একগুচ্ছ প্রস্তাব করেছে।

বিচারপতি নিয়োগ ও শৃঙ্খলা

আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠতম বিচারপতিকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ ও প্রধান বিচারপতিকে প্রধান করে ৯ সদস্যের বিচারপতি নিয়োগ কমিশন গঠনে আইন করার সুপারিশ রয়েছে প্রতিবেদনে। পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগে বিচারকের সংখ্যা নির্ধারণে প্রধান বিচারপতির সিদ্ধান্ত প্রাধান্য দিয়ে কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী বিচারপতি নিয়োগের কথা বলা হয়েছে।

প্রস্তাবে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের মাধ্যমে বিচারক, সাবেক বিচারক ও সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের জন্য প্রযোজ্য পদ্ধতি ছাড়া অপসারণযোগ্য নন– এমন পদধারীদের জন্য আচরণবিধি করার সুপারিশ রয়েছে। রাষ্ট্রপতির অনুরোধ ছাড়াও স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে বিচারকদের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত পরিচালনা ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করার ক্ষমতা জুডিশিয়াল কাউন্সিলকে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয়

সংবিধান সংশোধন করে সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় স্থাপন এবং অধস্তন আদালতের বিচারকদের বদলি, পদোন্নতি, ছুটি মঞ্জুর নির্বাহী বিভাগের কাছ থেকে সুপ্রিম কোর্টের অধীনে আনার সুপারিশ করা হয়েছে। বাজেটে বিচার-কর্মবিভাগের বিচারক ও কর্মচারীদের পারিশ্রমিকের জন্য পৃথক অর্থ বরাদ্দের প্রস্তাব রয়েছে।

বিচার বিভাগের আর্থিক স্বাধীনতা সম্পর্কে বলা হয়েছে, বিচার বিভাগের বাজেট নির্ধারণের জন্য সুপ্রিম কোর্টের একটি কমিটি থাকবে এবং সে কমিটিতে নির্বাহী বিভাগের প্রতিনিধিরা সদস্য থাকবেন। বিচারপতিদের পারিতোষিক, বিশেষাধিকার ও অন্যান্য ভাতা নির্ধারণ, পরিবর্তন ও সংশোধন-সংক্রান্ত সুপারিশের জন্য প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে একটি কমিশন গঠনের সুপারিশও রয়েছে প্রতিবেদেন।

স্থায়ী অ্যাটর্নি ও স্বতন্ত্র ফৌজদারি তদন্ত সার্ভিস

সুপ্রিম কোর্ট এবং অধস্তন আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে দেওয়ানি ও ফৌজদারি মামলা পরিচালনার জন্য একটি স্থায়ী অ্যাটর্নি সার্ভিস গঠনের পাশাপাশি স্থায়ী পেনশনযোগ্য সরকারি চাকরি হিসেবে প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়েছে। প্রস্তাবিত সার্ভিসের সুপ্রিম কোর্ট অ্যাটর্নি সার্ভিস এবং জেলা অ্যাটর্নি সার্ভিস হিসেবে দুটি শাখা প্রস্তাব করা হয়েছে।

সুপারিশে নতুন আইনের মাধ্যমে বিদ্যমান বিভিন্ন তদন্ত ইউনিটে নিয়োজিত জনবলের সমন্বয়ে একটি পৃথক তদন্ত সার্ভিস গঠনের কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি ১৮৯৮ সালের ফৌজদারি কার্যবিধিসহ অন্যান্য আইন সংশোধন, ১৮৬১ সালের পুলিশ আইন ও ১৯৪৩ সালের পুলিশ প্রবিধান সংস্কারের প্রস্তাব করা হয়েছে। এ সার্ভিস পুলিশ বাহিনী থেকে সম্পূর্ণ আলাদা থাকবে। নিয়োগ, চাকরির শর্তাবলি, নিয়ন্ত্রণ, বাজেট, অবকাঠামো ও আনুষঙ্গিক বিষয়াদি একটি স্বতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোভুক্ত হবে। দায়িত্ব পালন ও ক্ষমতা ব্যবহারে সার্ভিস স্বাধীন থাকবে। রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখতে তদন্ত সার্ভিস স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পরিচালিত হলেও উচ্চতর কমিশনের অনুমতি ছাড়া কাউকে চাকরিচ্যুত করতে পারবে না।

আদালতের বিকেন্দ্রীকরণ

সংবিধান সংশোধন করে বিভাগীয় সদরে হাইকোর্ট বিভাগের স্থায়ী বেঞ্চ প্রতিষ্ঠার সুপারিশ করেছে কমিশন। তবে হাইকোর্ট বিভাগের এখতিয়ার কোনো ভৌগোলিক সীমারেখায় বিভাজিত করা যাবে না। অথবা রাষ্ট্রের একক চরিত্র ক্ষুণ্ন করা যাবে না। দেশের বিভিন্ন উপজেলায় সিনিয়র সহকারী জজ ও প্রথম শ্রেণির জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালত স্থাপনের কথা বলা হয়েছে। অধস্তন আদালতের সাংগঠনিক কাঠামোর বিষয়ে প্রস্তাবে বলা হয়, মামলা ও জনসংখ্যার আলোকে বিচারকের সংখ্যা বাড়ানো এবং পৃথক বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

বিচার কার্যক্রমে তথ্যপ্রযুক্তি

বিচার কার্যক্রমে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারের জন্য সংশ্লিষ্ট আইন সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে। ই-জুডিশিয়ারি প্রকল্প বাস্তবায়ন, দেওয়ানি আদালতে ই-ফাইলিং কার্যক্রম শুরু, ই-ফাইলিংয়ের মামলাগুলোকে কোর্ট ফি হ্রাস/ছাড় ও ফাস্ট ট্রাকের মাধ্যমে দ্রুত শুনানি করে নিষ্পত্তিতে অগ্রাধিকারের মাধ্যমে ই-ফাইলিংকে উৎসাহিত করতে বলা হয়েছে। সব আদালতে বর্তমান ব্যবস্থার পাশাপাশি ই-পেমেন্টের মাধ্যমে ই-ফাইলিংসহ সব কোর্ট ফি, খরচ, জরিমানাসহ অন্যান্য ফি পরিশোধের ব্যবস্থার সুপারিশ করা হয়েছে।

২৩ জেলা সদরে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ভবন নির্মাণ কার্যক্রম, ৩৪ উপজেলার ৫১ চৌকি আদালতের জন্য পৃথক ভবন নির্মাণ, আদালত প্রাঙ্গণে সাক্ষীদের অপেক্ষার জায়গা নির্ধারণ, এজলাসে বসার ব্যবস্থা, আদালতের হাজতে (নারী-পুরুষ) হাজতিদের বসার ব্যবস্থা, প্রতিটি আদালত প্রাঙ্গণে নারী-শিশুদের উপযোগী শৌচাগার ও অপেক্ষাগার স্থাপন, এজলাসে আসামিদের জন্য লোহার খাঁচা থাকলে অপসারণ ও বিচারপ্রার্থীদের সুবিধার্থে আদালত ভবনের নিচতলায় ‘তথ্য ডেস্ক’ স্থাপনের সুপারিশ করেছে কমিশন।

প্রকাশ্য আদালতে রায় ও আদেশ ঘোষণা এবং প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে ওয়েবসাইটে রায় বা আদেশের কপি আপলোড করা, শতভাগ ক্ষেত্রে সরকারি কর্মচারীদের সাক্ষ্য সুপ্রিম কোর্টের গাইডলাইন অনুসারে অনলাইনে গ্রহণ, সমন জারি কার্যকর করার জন্য পোস্টাল অ্যাক্টের সংশ্লিষ্ট ধারা সংশোধনের কথাও বলা হয়েছে।

বিচার বিভাগের দুর্নীতি প্রতিরোধ

সুপ্রিম কোর্ট ও অধস্তন পর্যায়ে বিচারকদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য দুর্নীতিবিরোধী সুস্পষ্ট বিধান-সংবলিত আচরণ বিধিমালার পাশাপাশি তিন বছর পরপর সব পর্যায়ের বিচারকদের সম্পত্তির বিবরণ সুপ্রিম কোর্টে পাঠানো এবং ওয়েবসাইটের মাধ্যমে জনসাধারণের কাছে প্রকাশের প্রস্তাব করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ লিখিতভাবে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের কাছে পৌঁছানোর জন্য অভিযোগ বাক্স করতে বলা হয়েছে।

অধস্তন আদালতের বিচারকদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তের জন্য সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের সমন্বয়ে তিন সদস্যের প্রাথমিক তদন্ত কমিটি গঠন ও কমিটিকে প্রতি তিন মাস পরপর সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।

আইনজীবীদের দুর্নীতি প্রতিরোধের জন্য বার কাউন্সিলের মাধ্যমে প্রতি জেলায় পৃথক অভিযোগ গ্রহণ ও নিষ্পত্তির জন্য তদন্ত কমিটি, বিচারাঙ্গনে দুর্নীতি প্রতিরোধের জন্য একটি অভিযোগ প্রতিকার ব্যবস্থাপনা চালুর প্রস্তাব রয়েছে।

মামলাজট নিরসন ও মোবাইল কোর্ট

বিচারাধীন ফৌজদারি আপিল, ফৌজদারি রিভিশন, দেওয়ানি আপিল ও দেওয়ানি রিভিশন মামলা নিষ্পত্তির জন্য বিভিন্ন জেলার অবসরপ্রাপ্ত সৎ, দক্ষ এবং সুস্বাস্থ্যের অধিকারী জেলা জজদের ২-৩ বছর মেয়াদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের প্রস্তাব করা হয়েছে।

সর্বোচ্চ আদালতে বিচারাধীন মামলার সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে ভ্রাম্যমাণ আদালতের (মোবাইল কোর্ট) দণ্ড প্রদানের ক্ষমতা সংশোধন করে শুধু জরিমানার বিধান এবং জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটদের দিয়ে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার সুপারিশ করা হয়েছে।

মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা প্রতিরোধে একটি আইন প্রণয়নে ব্যাপক পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্তের সুপারিশ করা হয়েছে।

বিচারাঙ্গনকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করতে আদালত প্রাঙ্গণে আইনজীবী বা অন্য কোনো ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা দলের সব ধরনের সভা-সমাবেশ ও মিছিল নিষিদ্ধে আইন প্রণয়ন এবং বিচারাঙ্গনে আইনজীবীদের সক্রিয় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনায় নিরুৎসাহিত ছাড়াও বার সমিতি নির্বাচনে রাজনৈতিক দলের প্রভাব ও নিয়ন্ত্রণ বিলোপের প্রস্তাব রয়েছে।

আইন পেশা সংস্কার

আইনজীবীদের বিরুদ্ধে পেশাগত অসদাচরণের অভিযোগ নিষ্পত্তিতে ঢাকায় স্থায়ীভাবে পাঁচ এবং ঢাকার বাইরে প্রতিটি জেলায় একটি করে ট্রাইব্যুনাল স্থাপনের সুপারিশ করেছে কমিশন। আইনজীবীর ফি নির্ধারণে লিখিত চুক্তি অনুযায়ী প্রতিবার পরিশোধের পর মক্কেলকে একটি রসিদ দেওয়ার বিধানের প্রস্তাব করা হয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন র স প র শ কর র স প র শ কর ছ ব চ রকদ র ব র ব চ রকদ র র ষ ট রপত র ব যবস থ র জন ত ক ত র জন য র জন য প আইনজ ব পর চ ল ক ষমত রপত র তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

শেখ হাসিনার আমলেই চাকরি থেকে বঞ্চিত হয়েছি: আদালতকে তুরিন

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ আদালতে বলেছেন, ‘‘বলা হচ্ছে, আমি ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে সাপোর্ট করেছি। অথচ তার আমলেই চাকরি থেকে বঞ্চিত হয়েছি। ৬ বছর ধরে বঞ্চিত। বুঝলাম না, আমি কোন পক্ষের লোক।’’

মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসাইনের আদালতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আব্দুল জব্বার নামে এক শিক্ষার্থীকে হত্যাচেষ্টা মামলায় রিমান্ড শুনানিতে এসব দাবি করেন তুরিন আফরোজ।

এর আগে, সোমবার রাতে উত্তরার একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে তুরিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। মঙ্গলবার তাকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উত্তরা পশ্চিম থানার সাব-ইন্সপেক্টর সুমন মিয়া।

বেলা ১টার দিকে তুরিন আফরোজকে আদালতে হাজির করা হয়েছে। তাকে ঢাকার সিএমএম আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। শুনানিকালে তাকে এজলাসে তোলা হয়।

রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। তুরিন আফরোজের পক্ষে শুনানি করতে কয়েকজন আইনজীবী আদালতে উপস্থিত হন। তবে তুরিন আফরোজ জানান, তার আইনজীবী আছে। তখন বিচারক জানতে চান, কে আপনার আইনজীবী। তুরিন আফরোজ বলেন, ‘‘সাইফুল করিম।’’ তবে তাকে খুঁজে পাননি তুরিন আফরোজ।

তখন তুরিন আফরোজ বলেন, ‘‘মাননীয় আদালত, আমি আপনার অনুমতি নিয়ে কথা বলতে চাই।’’ আদালত তাকে অনুমতি দেন। তখন বিচারককে উদ্দেশ করে তুরিন আফরোজ বলেন, ‘‘আমি দুই, তিন, পাঁচ মিনিট, কতটুকু সময়ে শেষ করব বললে ভালো হয়।’’ আদালত বলেন, ‘‘বলেন আপনি।’’

তখন তুরিন আফরোজ বলেন, ‘‘গত ৪ তারিখে আমার বিরুদ্ধে নীলফামারীতে মামলা। পরদিন ৫ আগস্ট ঢাকায় মামলা।’’

তখন আদালত বলেন, ‘‘ঢাকায় মামলা হয়েছে ২৭ মার্চ। ঘটনা ৫ আগস্টের। নীলফামারীর তথ্য এখানে নেই।’’ তুরিন আফরোজ বলেন, ‘‘আচ্ছা, যাই হোক।’’

তিনি বলেন, ‘‘আমার লার্নেড ফ্রেন্ড (রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী) সাংঘর্ষিক কথা বলেছেন। নীলফামারীতে ৪ আগস্ট এবং ঢাকায় ৫ আগস্টের ঘটনায় মামলা। মামলাগুলো ফেব্রিকেটেড। ৫ আগস্টের আগে পুরো সময় কোথায় ছিলাম সব ডকুমেন্ট দিতে পারব। এ সময় আমার টিউমারের অপারেশন হয়।’’

তুরিন আফরোজ বলেন, ‘‘গত চার বছর আমি মিডিয়াতে কিছু বলিনি, লিখিনি। বলা হচ্ছে, ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে সাপোর্ট করেছি। ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে সাপোর্ট করলাম। আবার তার আমলেই চাকরি থেকে বঞ্চিত হয়েছি। ৬ বছর ধরে চাকরি থেকে বঞ্চিত। বুঝলাম না আমি কোন পক্ষের লোক।’’

তিনি বলেন, ‘‘আমি আইনের প্রতি আস্থাশীল। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে না। তদন্ত কর্মকর্তা ১০ দিনের রিমান্ড চেয়েছেন। আপনি ২০ দিন দিলেও দিয়ে দেন। কারণ আমি জানি, আমি কোনো অন্যায় করিনি। আমি ন্যায়বিচার পাব।’’

পরে আদালত তার চার দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।

জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শেষ দিন ৫ আগস্ট দুপুর ১২টার দিকে আবদুল জব্বার উত্তরা পশ্চিম থানাধীন ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ওপর বিএনএস সেন্টারের সামনে গুলিবিদ্ধ হন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন তিনি। গত ২৭ মার্চ উত্তরা পশ্চিম থানায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৫০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ১০০/১৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা মামলাটি দায়ের করেন। এজাহারনামীয় ৩০ নং আসামি তুরিন আফরোজ।

ঢাকা/মামুন/এনএইচ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সেনাবাহিনীর জন্য আলোচনার দরজা কখনো বন্ধ হয়নি: ইমরান খান
  • আদালতে নিজ আইনজীবীর ওপরে ক্ষোভ ঝাড়লেন হাজী সেলিম 
  • কাঠগড়ায় মেজাজ হারিয়ে চিৎকার-চেঁচামেচি হাজি সেলিমের, অন্যরা হতবাক
  • ডাকাতির পর হত্যা: ১০ জনের ১০ বছর করে কারাদণ্ড
  • তিন দিনের রিমান্ডে ওসি আবুল হাসান, ছিল না নিজের আইনজীবী
  • কাঠগড়ায় মেজাজ হারালেন হাজী সেলিম 
  • ‘কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট’ দেখা দিলে কী হবে, প্রশ্ন শুনানিতে
  • পটুয়াখালীতে হত্যা মামলায় ২৩ জনের যাবজ্জীবন
  • ‘জয় বাংলা ব্রিগেড তৈরি করে দেশ অস্থিতিশীলের চেষ্টা করছেন তুরিন আফ
  • শেখ হাসিনার আমলেই চাকরি থেকে বঞ্চিত হয়েছি: আদালতকে তুরিন