২০১৮ সালে জেফ বেজোস জানিয়েছিলেন, সকালে ঘুম থেকে উঠে তিনি পত্রিকা পড়েন, কফি খান। পরিবারের সঙ্গে সারেন সকালের নাশতা। পরিবার বদলে গেলেও জেফ বেজোসের সকালের রুটিন একই আছে। ২০১৯ সালে স্ত্রী ম্যাকেনজির সঙ্গে ২৫ বছরের দাম্পত্য সম্পর্কে ইতি টানেন জেফ। সে বছর থেকেই ৬১ বছর বয়সী জেফ ও ৫৫ বছর বয়সী লরেন সানচেজ আছেন এক ছাদের নিচে। ২৪৭ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার নিয়ে বিশ্বের ধনীদের তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে আছেন জেফ বেজোস।

পিপল ম্যাগাজিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে লরেন সানচেজ বলেন, ‘আমরা দুজন সকালে ঘুম থেকে উঠে ফোন হাতে নিই না। আমরা কিছু নিয়ম মেনে চলি। এটা সেসবেরই একটা।’

জেফ বেজোসের রুটিনে ঘুম থেকে ওঠার পর প্রথম এক ঘণ্টা কোনো স্ক্রিনটাইম নেই। জেফ বেজোস জানান, এর ফলে তিনি জীবনকে আরও ভালোভাবে উপভোগ করতে পারেন। এই নিয়ম তাঁর মাথা ঠান্ডা বা শান্ত রাখতে সাহায্য করে। সারা দিনে তিনি সহজে ক্লান্ত হন না। দিনের চাপ সামাল দেওয়া, গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো নেওয়া এতে সহজ হয়ে যায়।

সকালে ঘুম থেকে উঠে ফোন হাতে নিলে কী হয়

স্ট্যামফোর্ড লাইফস্টাইল মেডিসিন প্রোগ্রামের নিউরোসায়েন্টিস্ট ম্যারিস লোয়েফলার বলেন, ‘সকালে ঘুম থেকে উঠে ফোন হাতে নেওয়ার অভ্যাস মানসিক স্বাস্থ্যে মারাত্মক প্রভাব ফেলে। আপনার মস্তিষ্ক সহজেই ক্লান্ত হয়ে পড়ে। নেতিবাচকতার সঙ্গে দিন শুরু করায় দিনভর আশাবাদী থাকা আপনার জন্য কঠিন হয়ে পড়ে। নিউরনজনিত রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। কম বয়সেই ডিমেনশিয়া বা পারকিনসনস ডিজিজ হতে পারে। স্মৃতি সংরক্ষণ করাও মুশকিল হয়ে পড়ে।’

এই নিউরোসায়েন্টিস্ট আরও জানান, শরীরের জন্য চিনি যেমন ক্ষতিকর, মস্তিষ্কের জন্য স্ক্রিনটাইমও তা–ই। আর সেটা যদি হয় সকালে ঘুম থেকে উঠেই, তাহলে এর নেতিবাচক প্রভাব সরাসরি ও সর্বোচ্চ। স্ক্রিনটাইম দিনে দুই ঘণ্টা বা তার বেশি হলেই মস্তিষ্কের ‘গ্রে ম্যাটার’ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

এ ছাড়া চোখের সমস্যা, ঝাপসা দেখা, চোখব্যথা, মাথাব্যথা, মেরুদণ্ডে ব্যথা, নেতিবাচক চিন্তা, ঘুমের সমস্যা এসব তো আছেই। স্ট্যামফোর্ড লাইফস্টাইল মেডিসিন প্রোগ্রামের পরামর্শ হলো, দিনের প্রথম এক ঘণ্টা স্ক্রিনটাইম একেবারে শূন্য রাখতেই হবে। আর দিনে স্ক্রিনটাইম এক থেকে দেড় ঘণ্টার মধ্যে রাখা গেলে ভালো।

আরও পড়ুনধনী লোকেরা কে কয় ঘণ্টা ঘুমান?২৪ মার্চ ২০২৩দিনের প্রথম এক ঘণ্টা কী করবেন

চলুন, চট করে নজর বুলিয়ে নেওয়া যাক ঘুম থেকে ওঠার পর প্রথম এক ঘণ্টা কেমন হতে পারে, সে তালিকায়।

ব্যায়াম করুন।

আত্মীয় বা কোনো কাছের বন্ধুকে ফোন করুন, তাঁদের খোঁজ–খবর নিন, গল্প করুন।

স্বাস্থ্যকর নাশতা করুন।

মেডিটেশন করুন।

গান শোনা যেতে পারে।

‘গ্রাটিটিউড লিস্ট’ বা আপনি কেন কৃতজ্ঞ বা কাদের প্রতি কৃতজ্ঞ, সে তালিকা তৈরি করুন। সারা দিনের গুরুত্বপূর্ণ কাজের তালিকাও করতে পারেন। 

কয়েক পৃষ্ঠা বই ও পত্রিকা পড়ুন।

কিছুটা সময় রোদে কাটান। প্রকৃতির সঙ্গে সময় কাটান। বাইরে হাঁটাহাঁটি করতে পারেন। 

সূত্র: মিডিয়াম ডটকম

আরও পড়ুনবিল গেটস ও জেফ বেজোস কেন থালাবাসন মাজেন?২৬ জুন ২০১৯.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

নরসিংদী কারাগারে কয়েদির মৃত্যু, নির্যাতনের অভিযোগ পরিবারের

নরসিংদী জেলা কারাগারে ‘নির্যাতনে’ এক কয়েদির মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন স্বজনেরা। মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) বিকেলে এই ঘটনা ঘটে। নিহতের নাম রুকন মিয়া (৩৫)। তিনি জেলার সদর উপজেলা নজরপুর ইউনিয়নের দিলারপুর গ্রামের মৃত মোহাম্মদ আলী ছেলে।

নিহতের ভাই রুবেল অভিযোগ করে বলেন, ‘‘রুকন একেবারে সুস্থ ও স্বাভাবিক ছিল। তার ডায়াবেটিকস ছাড়া কোনো শারীরিক সমস্যা ছিল না। কারাগারের ভেতরে তাকে নির্যাতন করে হত্যা করেছে। না হলে হঠাৎ সে কেন মারা যাবে?’’

তিনি আরো বলেন, ‘‘মঙ্গলবার বিকেলে রুকন অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে নেয় কারা কর্তৃপক্ষ। অথচ আমাদের এই বিষয়ে কিছুই জানায়নি। বুধবার সকালে অন্য মাধ্যমে খবর পেয়ে হাসপাতালে এসে দেখি, ভাই মৃত। এ বিষয়ে জানতে জেল সুপারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন।’’

আরো পড়ুন:

ধর্ষণের অভিযোগে গণপিটুনি, কারাগারে ইমামের মৃত্যু

গাজীপুরে বিস্ফোরণে একই পরিবারের ৫ জন দগ্ধ, সবার অবস্থা আশঙ্কাজনক

তবে, অভিযোগের বিষয় নাকচ করেছেন নরসিংদী জেলা কারাগারের জেল সুপার মো. শামীম। তিনি বলেন, ‘‘মাদক মামলায় আসামি রুকন নরসিংদী কারাগারে ছিলেন। গতকাল বিকেলে তিনি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। অন্য কয়েদিদের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরে তাকে নরসিংদী জেলা হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’’

তিনি আরো বলেন, ‘‘ধারণা করছি, শারীরিক অসুস্থতার কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। কারাগারে তাকে কোনো নির্যাতন করা হয়নি। মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির পর ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।’’

ঢাকা/হৃদয়/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ