বিবাদীর মেয়ে পুলিশ কর্মকর্তা, তাই আসামি গ্রেপ্তারে গরিমসি
Published: 6th, February 2025 GMT
সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার সিংগারপাড়া গ্রামে ফসলি জমি নিয়ে বিরোধে তিনজনকে কুপিয়ে জখমের ঘটনায় ১১ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। আসামির সন্তান পুলিশ কর্মকর্তা হওয়ায় ১৫ দিনে পেরিয়ে গেলেও কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। ক্ষোভ প্রকাশ করে এ অভিযোগ করেছে বাদী পক্ষ।
মামলা থেকে জানা গেছে, ২০১৮ সালে সুমিন তালুকদারের বাবা মারা যান। সিংগারপাড়া মৌজায় তাঁর রেখে যাওয়া ১৩ শতাংশ জমি একই গ্রামের কৃষক লীগ নেতা মোহাব্বত আলী দখলের পাঁয়তারা করছেন। বিষয়টি নিয়ে সালিশও হয়। সেখানে মোহাব্বত আলীর সঙ্গে সুমিন তালুকদারের বাগ্বিতণ্ডা হয়। এর পর মোহাব্বত আলী থানায় অভিযোগ করলে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এসে বিষয়টি মীমাংসার দায়িত্ব দেন গ্রামপ্রধানদের। সালিশে গ্রামপ্রধানরা সুমিন তালুকদারের পক্ষে রায় দেন। মোহাব্বত আলী এ রায় অস্বীকার করে ২০ জানুয়ারি লোকজন নিয়ে ওই জমি চাষ করতে যান। তখন সুমিনের ছোট ভাই বাধা দিলে মোহাব্বত আলীর নির্দেশে ছাত্রলীগ নেতা কামরুল হাসান কাজল কুড়াল দিয়ে তাঁকে কুপিয়ে জখম করে। খবর পেয়ে স্ত্রীকে নিয়ে সুমিন সেখানে গেলে তাদেরও রড দিয়ে এলোপাতাড়ি পেটানো হয়। স্থানীয়রা তাদের সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।
মামলার বাদী সুমিন তালুকদার জানান, চিকিৎসা শেষে কিছুটা সুস্থ হয়ে ২৩ জানুয়ারি আদালতে মামলা করি। আদালত পুলিশ কর্মকর্তাকে ৩২৬ ধারায় এফআইআর করার আদেশ দেন। কিন্তু এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও পুলিশ কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করেনি। তিনি বলেন, মামলার ১ নম্বর আসামি মোহাব্বর আলীর মেয়ে রংপুর জেলা পুলিশের কর্মকর্তা। তাঁর প্রভাবে তাড়াশ থানার পুলিশ আসামি গ্রেপ্তার করছে না। উল্টো আসামিরা নানাভাবে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। এতে পরিবারের নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় আছি।
এ অভিযোগ অস্বীকার করে তাড়াশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম হোসেন জানান, মামলার বাদীকে দু’দিন ফোনে ডেকেছি এজাহারে স্বাক্ষর করার জন্য। তিনি আসেননি। তার পরও আমরা আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স র জগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
ভিন্নমতের জায়গাগুলো নিয়ে আলোচনা হবে, এনসিপির সঙ্গে বৈঠকে আলী রীয়াজ
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, এক নতুন বাংলাদেশের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এখন আমাদের কাজ সবাই মিলে যেন একটি নতুন বাংলাদেশ গড়তে পারি। যেন বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদী শাসন ফেরত না আসে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় সংসদের এলডি হলে এই বৈঠক শুরু হয়।
এনসিপি নেতাদের উদ্দেশে আলী রায়ীজ আরও বলেন, সংস্কার কমিশনগুলোর পক্ষ থেকে যে সুপারিশ দেওয়া হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে আপনাদের কিছু একমত, কিছু ভিন্নমত আছে। আমরা একমতের জায়গাগুলো চিহ্নিত করতে পেরেছি, সেগুলো নিয়ে অগ্রসর হব। যেসব জায়গায় আংশিকভাবে একমত বা ভিন্নমত সেগুলো নিয়ে আজ আলোচনা করব এবং প্রয়োজনে আলোচনা অব্যাহত থাকবে। কেননা আমরা চাই, জাতির আকাঙ্ক্ষার জায়গা থেকে একটি জাতীয় সনদ তৈরি করতে।
বৈঠকে এনসিপি নেতাদের উদ্দেশে আলী রীয়াজ বলেন, ‘আপনারা প্রাণবাজি রেখে লড়াই করে ফ্যাসিবাদী শাসককে পলায়ন করতে বাধ্য করেছেন। সেই বিজয়ের পাশাপাশি আপনারা সুস্পষ্টভাবে বলেছেন, একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত চান এবং আপনাদের এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে মানুষের মধ্যে রাষ্ট্র সংস্কারের আকাঙ্ক্ষা উন্মত্ত হয়ে উঠেছে।’ তিনি বলেন, এ দেশের ইতিহাসে আমরা বারবার দেখেছি, গণতন্ত্রের আকাঙ্ক্ষাকে কীভাবে পর্যুদস্ত করা হয়, কী করে গণতন্ত্রের সংগ্রামের মধ্য দিয়ে যে বিজয় অর্জিত হয়, সে বিজয়কে বিভিন্নভাবে ভূলুণ্ঠিত করা হয়। রাষ্ট্রকে কীভাবে এক ব্যক্তির করতলগত করে একটি শাসনব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন‘মৌলিক সংস্কার’ বলতে কী বোঝাতে চাইছে জাতীয় নাগরিক পার্টি৩ ঘণ্টা আগেএখন এক নতুন বাংলাদেশের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করেন আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, ‘আমাদের কাজ সবাই মিলে যেন একটি নতুন বাংলাদেশ গড়তে পারি। যেন বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদী শাসন ফেরত না আসে, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো স্থায়ী রূপ নেয় এবং যেন মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়। গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যা এবং সমস্ত নিপীড়ন মোকাবিলা করতে পারি। সেই ব্যবস্থাগুলোকে অপসারণ করতে পারি।’
সভায় কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, ইফতেখারুজ্জামান ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এনসিপির ৮ সদস্যের প্রতিনিধিদলে ছিলেন আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্যসচিব আখতার হোসেন,
জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার, জাবেদ রাসিন, মূখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব নাহিদা সারোয়ার নিভা।