গোসল করতে নেমে কুমার নদে ভাই-বোন নিখোঁজ
Published: 6th, February 2025 GMT
মাদারীপুরের কুমার নদে গোসল করতে নেমে নিখোঁজ হয়েছেন ভাই-বোন। গতকাল বুধবার দুপুরে মাদারীপুর সদর উপজেলার তরমুগরিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।
নিখোঁজরা হলো- লিটন মাতুব্বরের মেয়ে কুলসুম আক্তার (১১) ও ছেলে মিনহাজ (৭)। তারা স্থানীয় একটি মাদরাসার শিক্ষার্থী। সন্ধ্যা পর্যন্ত তাদের সন্ধান পায়নি ফায়ার সার্ভিস।
স্থানীয়, পারিবারিক ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, মাদারীপুর শহরের তরমুগরিয়া এলাকায় বাসা ভাড়া করে থাকেন লিটন মাতুব্বর ও মিনু বেগম দম্পতি। তাদের তিন মেয়ে ও এক ছেলে। লিটন মাতুব্বর ভাঙ্গারি কেনা-বেচার কাজের জন্য বাইরে যান। মা গৃহস্থালির কাজে ব্যস্ত ছিলেন। তারা মাদরাসা থেকে ফিরে কুমার নদে গোসল করতে যায়। দুপুর একটার দিকে গোসল করতে নেমে দুজন নিখোঁজ হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় ফায়ার সার্ভিসের একটি ডুবুরির দল। তারা উদ্ধার কাজে নামলেও সন্ধ্যা পর্যন্ত দুই শিশুর সন্ধান পায়নি।
নিখোঁজদের মা মিনু বেগম বলেন, ‘আমাকে না বলেই ওরা গোসল করতে এসেছে। আশেপাশের লোকজন ওদের ডুবে যেতে দেখেছে। ডুবুরিরা খোঁজ করছেন।’
মাদারীপুর ফায়ার সার্ভিসের লিডার লিয়াকত হোসেন বলেন, ভাই-বোনের নিখোঁজের সংবাদ পেয়ে ডুবুরি দল উদ্ধার অভিযান শুরু করে। বিকেল ৫টা পর্যন্ত তাদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪ হল ও ১ স্কুলের নামফলক ভেঙে নতুন নামকরণ বিক্ষুব্ধদের
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারটি আবাসিক হল ও একটি স্কুলের নামফলক ভেঙে নতুন নামকরণ করেছেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। গতকাল বুধবার রাতে শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা সব নামফলক, গ্রাফিতি ও দেয়াললিখন মুছে দিতে এ কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের নাম পরিবর্তন করে ‘বিজয়-২৪ হল’, নির্মাণাধীন শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান হলের পরিবর্তে ‘শহীদ আলী রায়হান হল’, শেখ হাসিনা হলের পরিবর্তে ‘ফাতিমা আল-ফাহরিয়া হল’ ও শেখ ফজিলাতুন্নেছা হলের পরিবর্তে ‘নবাব ফয়জুন নেসা চৌধুরানী’ নাম দিয়ে ব্যানার ঝুলিয়ে দেন। এ ছাড়া শেখ রাসেল মডেল স্কুলের নাম পরিবর্তন করে ‘রিয়া গোপ মডেল স্কুল’ নাম দেন তাঁরা।
এর আগে রাত ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা চত্বর থেকে শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। এ সময় তাঁরা ‘স্বৈরাচারের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’, ‘মুজিববাদের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’, ‘আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’, ‘ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে, আগুন জ্বালো একসাথে’ প্রভৃতি স্লোগান দেন।
সরেজমিন দেখা যায়, রাত ৯টা ২০ মিনিটের দিকে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সামনে যান। পরে তাঁরা হলটির নামফলক, উদ্বোধনী ফলকসহ শেখ মুজিবের চিহ্ন–সংবলিত স্থাপনাগুলো রড, হাতুড়ি ও কোদাল দিয়ে ভেঙে দেন। এ সময় তাঁরা হলটির নতুন নাম ‘বিজয় ২৪’ ঘোষণা করে রং দিয়ে দেয়ালে দেয়ালে নাম লিখে দেন। পরে সেখান থেকে মিছিল নিয়ে নির্মাণাধীন এ এইচ এম কামারুজ্জামান, শেখ হাসিনা হল, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা হল ও শেখ রাসেল মডেল স্কুলের নামফলক ভেঙে দেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
এদিকে রাত সাড়ে ১০টার দিকে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা হলের নামফলক পরিবর্তনের সময় হলের ভেতর থেকে ছাত্রীরা ভুয়া ভুয়া স্লোগান দিতে থাকেন। একপর্যায়ে তাঁরা বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের দিকে স্যান্ডেল ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এ সময় বাইরে থেকেও কয়েকজন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী হলে অবস্থিত নারী শিক্ষার্থীদের দিকে ঢিল ছুড়ে মারেন। বিষয়টি নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে সেখানে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পরে ছাত্রীরা হল ফটকে টাঙানো নতুন নাম ফলকের ব্যানার ছিঁড়ে পুড়িয়ে ফেলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম এসে পরিস্থিতি শান্ত করেন।
হলের ভেতর থেকে শেখ ফজিলাতুন্নেছা হলের কয়েকজন আবাসিক শিক্ষার্থী সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের হলের নাম পরিবর্তন আমরা করব। বাইরে থেকে অন্য শিক্ষার্থীরা এসে কেন সেটি করবে? যেহেতু আগে থেকে ব্যানার নিয়ে আসা হয়েছে, এর মানে বিষয়টি পূর্বপরিকল্পিত। এ বিষয়ে আমাদের আগে থেকে কিছু জানানো হয়নি।’
সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান বলেন, সারা দেশের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের অংশ হিসেবে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা হলের নাম পরিবর্তন করেছেন। তবে এ মুহূর্তে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে হলের নাম পরিবর্তন নিয়ে কোনো মন্তব্য নেই। যদি নাম পরিবর্তন করা হয়, সেটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট ও অংশীজনদের আলোচনার মাধ্যমেই করা হবে।