Samakal:
2025-02-06@00:56:06 GMT

শুকনো কাশি হলে কী করবেন

Published: 6th, February 2025 GMT

শুকনো কাশি হলে কী করবেন

প্রকৃতিতে হালকা শীত অনুভূত হচ্ছে। শীত জাঁকিয়ে বসলেও অনেকে নানা রকম শীতের সমস্যায় আক্রান্ত হচ্ছেন। এর মধ্যে অ্যালার্জি, সর্দি-কাশি অন্যতম। এ সময় কাশি হলে সহজে সারতে চায় না। কাশির সঙ্গে কফ বের হয় না বললেই চলে। কাশির কারণে ঘুমানো কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়। গলার মধ্যে অস্বস্তি লাগে।

কাশতে কাশতে গলায় ব্যথা হয়ে যায়। শীতের দিনে ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ে, রাস্তাঘাটে বাড়ে ধুলাবালি। এসব কারণে কাশি বাড়ে। ধূমপায়ী ও হাঁপানি আক্রান্তদের শীতে কাশির তীব্রতা বাড়ে। এ ছাড়া শিশুরা ব্রঙ্কিওলাইটিস, বয়স্করা ব্রঙ্কোনিউমোনিয়া ও ব্রঙ্কিয়েকটেসিসে আক্রান্ত হলেও কাশি বাড়ে। এসব ক্ষেত্রে কাশির সঙ্গে কফ থাকে। জ্বরও থাকতে পারে। 

সাধারণ কাশি নির্দিষ্ট সময় পর আপনাআপনি ভালো হয়ে যায়। ঠান্ডা লাগলে কাশি বাড়ে। তাই ঠান্ডা পরিহার করতে হবে। বাইরে বেরোলে পর্যাপ্ত গরম কাপড় পরুন। বেশি ঠান্ডা পড়লে মাথায় টুপি বা মাফলার পরতে ভুলবেন না। ধুলাবালি এড়িয়ে চলুন। বাইরে গেলে মাস্ক পরে নিন। কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করুন। খুব ভোরে বা বেলা পড়ে গেলে গোসল করা থেকে বিরত থাকুন। ফ্রিজের ঠান্ডা খাবার খাবেন না। কুসুম গরম পানি পান করতে পারলে ভালো। 

কাশি হলে কুসুম গরম পানি, আদার রস, তুলসী পাতার রস, লবঙ্গ, লেবুর রস, মধু মিশিয়ে পান করলে উপকার পাওয়া যাবে। বিশ্রাম নিলেও কাশি কমে যায়। কাশি বেশি হলে ব্রঙ্কোডায়লেটর (ব্রডিল), অ্যান্টিহিস্টামিন, কফ সাপ্রেসেন্ট ওষুধ সেবন করলে কাশি তাড়াতাড়ি ভালো হয়। এ ধরনের কাশিতে সাধারণত অ্যান্টিবায়োটিক সেবনের প্রয়োজন পড়ে না। তবে জ্বর এলে, শ্বাসকষ্ট বেশি হলে, লালচে বা হলুদ রঙের কফ, কাশির সঙ্গে রক্ত পড়লে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন, ধূমপান বাদ দিন। কাশি প্রতিরোধ বা এর তীব্রতা কমানোর জন্য নিউমোনিয়া (তিন বছর পরপর) ও ফ্লুর (প্রতিবছর) টিকা বয়স্করা নিতে পারেন। বাংলাদেশের সর্বত্র এ টিকা পাওয়া যায়।

শীতের শুরুতে হাঁপানি আক্রান্তদের কাশি সাধারণত ব্যাকটেরিয়া দিয়ে হয়। তাই অ্যান্টিবায়োটিক সেবনের প্রয়োজন হয়। তবে ভাইরাস দিয়েও কোনো কোনো সময় তাদের কাশি হতে পারে। এতে অ্যান্টিবায়োটিক সেবনের প্রয়োজন পড়ে না। হাঁপানি নিয়ন্ত্রণের জন্য কাশির তীব্রতা অনুযায়ী স্টেরয়েড ইনহেলার পরিমাণ বাড়িয়ে দেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে এবং সালবিউটামল ইনহেলার ঘন ঘন নেওয়ার প্রয়োজন হয়। কাশি দীর্ঘমেয়াদি হলে, ঘুমাতে সমস্যা হলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।

লেখক : সহকারী অধ্যাপক, ডিপার্টমেন্ট অব ইন্টারভেনশনাল নিউরোলজি, নিনস।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের দুই পক্ষের হাতাহাতি

ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দু’পক্ষের মধ্যে কথাকাটাকাটির জেরে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি আশরাফুল আলম সোহান আহত হয়েছেন। গতকাল বুধবার সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, বুধবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে চলছিল ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আহতদের যাচাই-বাছাইয়ের কার্যক্রম। এই যাচাই-বাছাই কমিটির আহ্বায়ক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সদস্য সচিব উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা। এ ছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন প্রতিনিধিসহ আরও তিনজন সরকারি কর্মকর্তা রয়েছেন কমিটিতে। ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে রয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ময়মনসিংহ জেলা কমিটির সদস্য থেকে জুলকার নাইন। কিন্তু সম্প্রতি তিনি এই কমিটি থেকে পদত্যাগ করেছেন বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেন। পদত্যাগের পরও জুলকার নাইন কমিটিতে থাকায় অন্য প্রতিনিধিরা অসন্তোষ প্রকাশ করেন। যাচাই-বাছাই কার্যক্রম শেষে বেশ কয়েকজন ছাত্র প্রতিনিধি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যান। এ সময় বাগবিতণ্ডা সৃষ্টি হলে জুলকার নাইন কমিটিতে থাকা নিয়ে ব্যাখ্যা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলীনূর খান। সেই সঙ্গে বিষয়টি অন্য প্রতিনিধিদের সঙ্গে সমন্বয় করে দেন। পরে ছাত্র প্রতিনিধিরা নির্বাহী কর্মকর্তার কক্ষ থেকে বের হয়ে চলে যাওয়ার সময় সিঁড়ির নিচে ছাত্র প্রতিনিধি আশিকুল ইসলামের সঙ্গে আরেক প্রতিনিধি আশরাফুল আলম সোহানের বাগবিতণ্ডা হয়। এ সময় দু’পক্ষে বিভক্ত হয়ে পড়েন প্রতিনিধিরা। পরে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। আশরাফুল আলম সোহানকে থাপ্পড় মারেন আশিকুল ইসলাম। এতে অজ্ঞান হয়ে পড়েন তিনি। পরে সোহানকে উপজেলা স্বাস্ব্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জুলকার নাইন বলেন, ‘যাচাই-বাছাই কমিটির একটি বোর্ড সভা হয়। সভা শেষে তারা জানতে চান আমি এখানে কেন? এ নিয়ে বাগবিতণ্ডা হয়। আমি শুরু থেকেই এই আন্দোলনে জড়িত। তাদের সঙ্গে আমার দীর্ঘদিন ধরে রেষারেষি চলছে। তারা মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে যাচ্ছে আমার নামে। আজ (বুধবার) নতুন যাচাই তালিকা তৈরি এবং কমিটিতে আমার থাকা নিয়ে তাদের সমস্যা থেকে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।’

আশিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমাকে নিয়ে তিন-চার মাস ধরে আজেবাজে মন্তব্য করছে। আজ ইউএনও অফিসে সবার সামনে বলে আমি নাকি আওয়ামী লীগের দালাল। তারপর মনের ক্ষোভে আমি তাকে একটা থাপ্পড় মারি, পরে সে অসুস্থ হয়ে পড়ে।’

আশরাফুল আলম সোহানের ভাষ্য, আশিকুল ইসলামের সঙ্গে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে তার (সোহান) বাম সাইডে কানের নিচে দুইটা থাপ্পড় মারে। এতে অজ্ঞান হয়ে যান তিনি। হালুয়াঘাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন তিনি। এ ব্যাপারে মামলা করবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আগামীকাল চিকিৎসা নিয়ে পরে চিন্তা করব।’
চিকিৎসক প্রাণেশ চন্দ্র পণ্ডিতের ভাষ্য, আহত অবস্থায় ভর্তি করা হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাড়িতে পাঠানো হয়েছে। আগামীকাল উন্নত চিকিৎসার জন্য একজন বিশেষজ্ঞ দেখানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। 

হালুয়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলীনূর খান জানান, আগেও কমিটিতে ছিলেন জুলকার। এই কমিটিও আগের করা। কয়েকজন প্রতিনিধি এসে অভিযোগ করলেন জুলকার কমিটিতে থাকার ব্যাপারে। তারা জুলকারকে চায় না এ নিয়ে তাদের মধ্যে উৎকণ্ঠা। পরে বিষটি সবার সঙ্গে কথা বলে সমন্বয় করে শান্ত করার চেষ্টা করা হয়। তারা কক্ষ থেকে চলে যাওয়ার পরে সিঁড়ির নিচে হাতাহাতি থেকে মারামারির ঘটনা ঘটে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ