তোফায়েল আহমেদের বাসভবনে ভাঙচুর, আগুন
Published: 6th, February 2025 GMT
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও ভোলা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য তোফায়েল আহমেদের বাসভবনে ভাঙচুর ও আগুন দেওয়া হয়েছে। বুধবার রাত ১২টার পর এ ঘটনা ঘটে। রাত সোয়া তিনটায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বাসভবনের ভেতরে আগুন জ্বলছিল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বুধবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে ভোলা সদরের গাজীপুর সড়কে ‘প্রিয় কুটির’ নামের ফটক ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন একদল বিক্ষুদ্ধ লোক। পরে তারা ভবনটিতে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। তারা বাড়ির দরজা-জানালা ভেঙে দেয়ালে সাঁটানো বিভিন্ন ছবি, ক্রেস্ট ও কাগজপত্র রাস্তার এনে আগুন ধরিয়ে দেন।
বিক্ষুদ্ধরা জানালার কাঁচ ভেঙে ফেলে। কয়েকটি ফ্যান ও আসবাবপত্র লুট করে নিয়ে যান তারা। একপর্যায়ে কক্ষের ভেতরে থাকা কিছু আসবাবপত্র ভেঙে ঘরের ভেতর আগুন ধরিয়ে দেন। পরে বাড়ির সামনে থাকা একটি পুলিশ বক্স ভেঙে গুঁড়িয়ে দেন।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের পরে তোফায়েল আহমেদ এই বাড়িতে থাকেননি। তিনি বেশির ভাগ সময় বাংলাবাজারের বাড়িতে অবস্থান করতেন।
এ বিষয়ে জানতে ভোলা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) ফোন দেওয়া হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
ভোলার ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক লিটন আহমেদকে ফোন করলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, রাত সোয়া তিনটা পর্যন্ত তারা আগুনের কোনো ফোন পাননি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আহম দ
এছাড়াও পড়ুন:
দাবি পূরণের আশ্বাসে গভীর রাতে যমুনা থেকে সরলেন আহতরা
দাবি পূরণের আশ্বাসে গভীর রাতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে থেকে হাসপাতালে ফিরেছেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিরা।
সুচিকিৎসা, পুনর্বাসন ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতিসহ ৭ দফা দাবিতে রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) দিনভর বিক্ষোভ করেন তারা। পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে রাতে যমুনার সামনেও গিয়েও বিক্ষোভ করেন তারা। রাত সোয়া ১২টার দিকে যমুনার সামনে যান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহসহ আরো কয়েকজন ছাত্রনেতা। হাসনাত দাবি পূরণের আশ্বাস দিলে রাত পৌনে ২টার দিকে তারা হাসপাতালে ফিরে যান।
আহতদের দাবিদাওয়া পূরণ না হওয়ার জন্য প্রথমত আমলাতান্ত্রিক জটিলতাকে দায়ী করেন হাসনাত আবদুল্লাহ। বিক্ষুব্ধদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আমরা চাইছিলাম কী, দেশটা সুন্দরভাবে চলুক। এ জন্যই তো সৎ উপদেষ্টাদের আইন্যা দিলাম। কিন্তু সৎ উপদেষ্টারা যে এত আমলানির্ভর হবেন, তা আমরা বুঝি নাই। এখনো দেখি তাঁরা আরও বেশি নিয়মতান্ত্রিক। নিয়ম কী, একটা স্লিপ একবার দিছে, এটা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে দিছে, আরে ভাই আমি হসপিটালে ভর্তি, আমার আবার এই স্লিপ কী কাজে লাগবে?”
আহতদের নিয়ে রাজনীতি করা হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন হাসনাত আবদুল্লাহ। তিনি জানান, আহতদের দাবিগুলো নিয়ে সরকারের সঙ্গে তিনি আলোচনা করবেন। এই দাবি অন্য কোনো সরকার নয়, একমাত্র অন্তর্বর্তী সরকারই পূরণ করবে।
গতকাল সকালে তাঁরা আগারগাঁও ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট টিবি হাসপাতালের সামনে থেকে জাতীয় রাজস্ব ভবন পর্যন্ত সড়কের দুই পাশ আটকে দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। বেলা সোয়া ১১টার দিকে তাঁরা সেখান থেকে শ্যামলী শিশুমেলার সামনে এসে মিরপুর রোড অবরোধ করে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিক্ষোভ করেন। এরপর দাবিপূরণে তারা বিকেল ৪টা পর্যন্ত সময় বেধে দেন।
আন্দোলনকারীরা ওই সড়ক ছেড়ে দেন সন্ধ্যা ৬টার দিকে। এরপর তাঁরা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন অভিমুখে যাত্রা শুরু করেন। কেউ হেঁটে, কেউ রিকশায় রওনা হন। সাড়ে ৭টার পর রাজধানীর ভিআইপি সড়কে পৌঁছালে ব্যারিকেড দিয়ে তাদের আটকে দেয় পুলিশ। তা উপেক্ষা করে যমুনার সামনে যান তারা।
আন্দোলনকারীদের দাবি: আন্দোলনকারীদের অন্যান্য দাবির মধ্যে রয়েছে জুলাই আন্দোলনের যোদ্ধাদের সরকারি গৃহায়ণ বা বাসস্থানের ব্যবস্থা করা, তাঁদের পরিচয়পত্র দেওয়া ও রেশন কার্ডের ব্যবস্থা করা; যার যার যোগ্যতা অনুযায়ী সরকারি চাকরির ব্যবস্থা করা; নারী যোদ্ধাদের রাষ্ট্রীয় বিশেষ ঘোষণাপত্রে অন্তর্ভুক্ত করা; বিনা মূল্যে বিমান, রেল ও বাসে চলাচলের ব্যবস্থা, যানবাহন ক্রয়ে শুল্ক-কর পরিহার করা এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক রাষ্ট্রীয় অতিথিশালাসমূহ ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া।
এর আগে গত ১৩ নভেম্বর আহত ব্যক্তিদের দেখতে পঙ্গু হাসপাতালে গিয়েছিলেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম। তাঁর সঙ্গে ছিলেন ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক। স্বাস্থ্য উপদেষ্টা সবার সঙ্গে দেখা করেননি—এ অভিযোগে তাঁর গাড়ি আটকে বিক্ষোভ করেন আহত ব্যক্তিরা। পরে তাঁরা হাসপাতালের সামনের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। ওই দিন গভীর রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের চারজন উপদেষ্টা ও একজন বিশেষ সহকারী সেখানে গিয়ে আলোচনা করেন। এর পরদিন ১৪ নভেম্বর সচিবালয়ে আহত ব্যক্তিদের সঙ্গে সরকারের বৈঠক হয়। বৈঠকে সরকার জুলাই আন্দোলনে আহত ব্যক্তিদের সুচিকিৎসার পাশাপাশি পুনর্বাসন ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থার কথা জানিয়েছিল।
ঢাকা/রায়হান/ইভা