সিলেটে এবার এক্সকাভেটর দিয়ে ভেঙে ফেলা হয়েছে শেখ মুজিবের ম্যুরাল। বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে স্থাপিত ম্যুরালটির অবশিষ্ট অংশ দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।

এর আগে চট্টগ্রাম, রংপুর, কুষ্টিয়ায় শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ভাঙা হয়।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে মুসলিম জনতার ব্যানারে বঙ্গবন্ধুর আকৃতি ভেঙে ফেলা হয়। বুধবার রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা অবশিষ্ট অংশ  এক্সকাভেটর দিয়ে আরেক দফা ভেঙে ফেলে। এর আগে রাত ৯টার দিকে বন্দরবাজার এলাকায় অবস্থান নেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা। সেখানে বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে তারা এক্সকাভেটর নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে যান। প্রধান ফটক তখন বন্ধ ছিল। পরে তারা তালা খুলে ভেতরে প্রবেশ করে ম্যুরালের অবশিষ্ট অংশ ও স্থাপনা ভেঙে ফেলে। ভেঙে ফেলা ম্যুরালের পাশে আগুন জ্বলতে দেখা গেছে।

সিলেটের জেলা প্রশাসক শের মাহবুব মুরাদ বিষয়টি সমকালকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, কিছু লোক গেটের ভেতর প্রবেশ করে ম্যুরালটি ভেঙে চলে যায়। 

প্রসঙ্গত, তাওহিদী জনতার ব্যানারে ম্যুরালটি অপসারণের দাবি জানানো হয়েছিল। গত বৃহস্পতিবার রাতে মুর‌্যালটি একদফা ভাঙচুর করা হয়।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

‘দৃষ্টিকে হত্যার পেছনে সাঈদুরের হাত রয়েছে’

নড়াইলের গৃহবধূ সুরাইয়া শারমিন দৃষ্টি (৩৩) হত্যায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার ও গতকাল বুধবার তাদের নড়াইল ও বাগেরহাট থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের স্বীকারোক্তির বরাতে পুলিশ জানিয়েছে, বিয়েতে রাজি না হওয়ায় দৃষ্টিকে শ্বাসরোধে হত্যা করে সাঈদুর রহমান নামের এক সেনাসদস্য। পরিবারের সদস্যরা তার সঙ্গে দৃষ্টির দীর্ঘদিন ধরে বন্ধুত্বের কথা জানালেও পুলিশের ভাষ্য, তাদের মধ্যে বিয়েবহির্ভূত সম্পর্ক ছিল।

সাঈদুর রহমান নড়াইল শহরের দুর্গাপুরের বাসিন্দা। গ্রেপ্তার অন্যরা হলো বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার জয়পুর গ্রামের বাসিন্দা মাহিন্দ্রা চালক নয়ন ও তার সহযোগী শহিদুর। নয়নের স্ত্রী আঁখির সঙ্গে বন্ধুত্ব ছিল দৃষ্টির।

নিহত দৃষ্টি নড়াইল শহরের আলাদাতপুর এলাকার মৃত আব্দুল করিম মোল্যার মেয়ে। তাঁর স্বামী মাহফুজ রহমানের বাড়ি লোহাগড়ায়। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মাহফুজ কয়েক বছর ধরে হৃদরোগে ভুগছেন। দৃষ্টি ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী একমাত্র মেয়েকে নিয়ে বাবার বাড়িতে থাকেন। তিনি নড়াইল সদর হাসপাতালের আউটসোর্সিং কর্মী।

স্বজনরা জানান, ৩১ জানুয়ারি যশোরে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন দৃষ্টি। পরে তাঁর সন্ধান না পেয়ে ১ ফেব্রুয়ারি নড়াইল সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। ৪ ফেব্রুয়ারি দৃষ্টির লাশ পাওয়া যায় বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলায়। ওই উপজেলার নলধা মৌভোগ ইউনিয়নের জয়পুর গ্রামের একটি পুকুরে মেলে তাঁর লাশ। শরীরে ইট বাঁধা ও গলায় দড়ি দিয়ে ফাঁস দেওয়া ছিল। ময়নাতদন্ত শেষে বুধবার বিকেলে দৃষ্টির গলিত মরদেহ নড়াইলের বাড়িতে আনা হয়। জানাজা শেষে নড়াইল পৌর কবরস্থানে দাফন করা হয়।

এ ঘটনায় দৃষ্টির মা সবেজান বেগম মঙ্গলবার বাগেরহাটের ফকিরহাট থানায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করে। তাঁর সন্দেহের তালিকায় সাঈদুরের নাম রয়েছে। সবেজান বেগম বলেন, ‘আমার মেয়ের সঙ্গে সাঈদুরের খুব ভালো বন্ধুত্ব ছিল। মেয়ে যা কিছু করত সাঈদুরের সঙ্গেই পরামর্শ করত। দৃষ্টিকে হত্যার পেছনে সাঈদুরের হাত রয়েছে।’ 

নড়াইল সদর থানার ওসি মো. সাজেদুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় সাঈদুর রহমানকে ধরে পুলিশে দিয়েছে এলাকাবাসী। ফকিরহাট থানায় হওয়া মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তাঁকে নিয়ে গেছেন। 

গেরহাটের ফকিরহাট মডেল থানার ওসি এস এম আলমগীর কবীর আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে জানান, সাঈদুরের সঙ্গে কয়েক বছর ধরে দৃষ্টির সম্পর্ক। তারা বিয়ের পরিকল্পনা করে জয়পুরে দৃষ্টির বান্ধবী আঁখির বাড়িতে আসে। সেখানে কোনো বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য হয়। এ সময় দৃষ্টিকে শ্বাসরোধে হত্যা করে সাঈদুর। পরে মরদেহ সরানোর জন্য নয়ন ও শহিদুরের সাহায্য নেয়। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ