৪ আবাসিক হলের নতুন নাম দিলেন শিক্ষার্থীরা
Published: 5th, February 2025 GMT
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) শেখ পরিবারের সদস্য ও জাতীয় চার নেতার একজনের নামে থাকা সব স্থাপনার নামফলক, গ্রাফিতি ও দেয়াল লিখন মুছে দিতে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা চত্বর থেকে শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে তারা মিছিল নিয়ে চারটি আবাসিক হল ও একটি স্কুলের নামফলক ভেঙে নতুন নাম দেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের নাম পরিবর্তন করে ‘বিজয়-২৪ হল’, নির্মাণাধীন শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান হলের পরিবর্তে ‘শহীদ আলী রায়হান হল’, শেখ হাসিনা হলের পরিবর্তে ‘ফাতিমা আল-ফাহরিয়া হল’ এবং বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা হলের পরিবর্তে ‘নবাব ফয়জুন নেসা চৌধুরানী’ ও শেখ রাসেল মডেল স্কুলের নাম পরিবর্তন করে ‘রিয়া গোপ মডেল স্কুল’ নাম দিয়ে ব্যানার ঝুলিয়ে দেন।
বিক্ষোভে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ‘স্বৈরাচারের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’, ‘মুজিববাদের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’, ‘মুজিব বাদ মুর্দাবাদ, ইনকিলাব জিন্দাবাদ’, ‘আবু সাঈদ মুদ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’, ইত্যাদি নানা স্লোগান দেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা হলের নামফলক পরিবর্তনের সময় হলের ভেতর থেকে নারী শিক্ষার্থীরা ভুয়া ভুয়া স্লোগান দিতে থাকেন। একপর্যায়ে তারা নাম পরিবর্তনকারী শিক্ষার্থীদের দিকে স্যান্ডেল ও ইট পাটকেল নিক্ষেপ করেন। এ সময় বাইরে থেকেও বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের হলে অবস্থিত নারী শিক্ষার্থীদের দিকে ঢিল ছুটে দেখা যায়। হলের নারী শিক্ষার্থীরা নতুন করে লাগানো হলের নাম ফলকের ব্যানার ছিড়ে ফেলেন।
এর আগে পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাত ৯টায় শিক্ষার্থীরা দলে দলে শহীদ শামসুজ্জোহা চত্বরে জড়ো হন। পরে বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সামনে যায়। পরে তারা হলটির নামফলক, উদ্বোধনী ফলকসহ শেখ মুজিবের চিহ্ন সম্বলিত স্থাপনাগুলো রড, হাতুড়ি, কোদাল দিয়ে ভেঙে দেন। এ সময় তারা হলটির নতুন নাম ‘বিজয় ২৪’ ঘোষণা করে রঙ দিয়ে দেয়ালে দেয়ালে নাম লিখে দেন। পরে সেখান থেকে মিছিল নিয়ে নির্মাণাধীন এ এইচ এম কামারুজ্জামান, শেখ হাসিনা ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা হলেরও নামফলক ভেঙে দেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের হলের নাম পরিবর্তন আমরা করব। বাইরে থেকে অন্য শিক্ষার্থীরা এসে সেটি করবে কেন। যেহেতু আগে থেকে ব্যানার নিয়ে আসা হয়েছে, এর মানে বিষয়টি পূর্বপরিকল্পিত। এ বিষয়ে আমাদেরকে আগে থেকে কিছু জানানো হয়নি।
পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল মডেল স্কুলের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় রিয়া গোপ মডেল স্কুল।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম সমন্বয়ক ফজলে রাব্বি মো.
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, দেশের শিক্ষার্থীদের কর্মসূচির অংশ হিসেবে সাধারণ শিক্ষার্থীরা এ কর্মসূচি পালন করেছেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে নাম পরিবর্তনের কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়নি। সেটি যদি করা হয়ে থাকে; তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের মাধ্যমেই করা হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: হল র ন ম
এছাড়াও পড়ুন:
১০ এপ্রিলকে বাংলাদেশের ‘রিপাবলিক ডে’ ঘোষণার দাবির প্রতি জোনায়েদ সাকির সমর্থন
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি ১০ এপ্রিলকে বাংলাদেশের ‘রিপাবলিক ডে’ ঘোষণার জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) দাবিকে সমর্থন করেছেন। এই দাবিকে সমর্থন করে তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিলের স্বাধীনতা ঘোষণার মূল ভিত্তি ছিল সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার। কিন্তু এই আদর্শগুলো ১৯৭২ সালে সংবিধান প্রণয়নের সময় আমলে নেওয়া হয়নি। ফলে গণমানুষের প্রত্যাশা সব সময় উপেক্ষিত হয়েছে এবং মানুষের ওপর নির্যাতন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) ‘১০ এপ্রিলকে প্রজাতন্ত্র দিবস ঘোষণা, একই সঙ্গে সংবিধান সংস্কার সভা ও সংসদ নির্বাচনের দাবি’ শীর্ষক এক আলোচনায় জোনায়েদ সাকি এ কথা বলেন। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) এ সভার আয়োজন করে।
জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘১৯৭২ সালে সংবিধান প্রণয়নের সময় ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিলের স্বাধীনতার ঘোষণাকে আমলে না নিয়ে গোঁজামিল দেওয়া হয়েছিল। সেটার ওপর ভিত্তি করেই আমরা চলছি। আমরা এসব গোঁজামিল থেকে বের হতে চাই। ২৪-এর রক্তক্ষয়ী ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থান সে আকাঙ্ক্ষার কথাই বলে।’
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দখলে যাচ্ছে উল্লেখ করে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় হল এক দল দখল করে। আরেক দলকে দেখতে পাই হাট–ঘাট–বাজারের দখলে। যে যেখানে পারে সেখানে দখল করছে।’
জনগণকে ক্রমাগত ক্ষমতাহীন করে ফেলা হচ্ছে উল্লেখ করে জোনায়েদ সাকি বলেন, পুরো সংস্কারপ্রক্রিয়ার মধ্যে জনগণ ব্যাপারটাই যেন নেই। তবে বর্তমান সংস্কার প্রস্তাবের ধরন আগেকার যেকোনো সংস্কারপ্রক্রিয়ার চেয়ে ভালো।