দেশে সোনার দাম আবার বেড়ে ইতিহাসের সর্বোচ্চ
Published: 5th, February 2025 GMT
দেশে চার দিনের ব্যবধানে আবার সোনার দাম বাড়ছে। এবার ভরিপ্রতি ২ হাজার ৯২৮ টাকা বাড়ানো হয়েছে। এর ফলে ভালো মানের অর্থাৎ ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম দাঁড়াবে ১ লাখ ৪৭ হাজার ৮১৮ টাকা। এটি দেশের ইতিহাসে সোনার এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ দাম।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) আজ বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সোনার দাম বাড়ানোর তথ্য জানায়। এতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি সোনার (পিওর গোল্ড) দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় সোনার দাম সমন্বয় করা হয়েছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে সোনার নতুন দাম কার্যকর হবে।
চলতি ফেব্রুয়ারিতে এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে। এর আগে ২ ফেব্রুয়ারি ভরিতে ২ হাজার ৯৯ টাকা বাড়ানো হয়। তাতে প্রতি ভরি ২২ ক্যারেট সোনার দাম বেড়ে দাঁড়ায় ১ লাখ ৪৪ হাজার ৮৯০ টাকা।
নতুন দাম অনুযায়ী, দেশের বাজারে হলমার্ক করা প্রতি ভরি (১১.
আজ বুধবার পর্যন্ত প্রতি ভরি ২২ ক্যারেট ১ লাখ ৪৪ হাজার ৮৯০ টাকা, ২১ ক্যারেট ১ লাখ ৩৮ হাজার ৩০০ টাকা, ১৮ ক্যারেট ১ লাখ ১৮ হাজার ৫৪১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির সোনা ৯৭ হাজার ৪৭৬ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) জানায়, সোনা ও রুপার বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট ও ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে গয়নার নকশা ও মানভেদে মজুরি কমবেশি হতে পারে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ২২ ক য র ট
এছাড়াও পড়ুন:
রোজার নিয়তের বিধান কী
‘নিয়ত’ অর্থ ইচ্ছা বা সংকল্প করা। নিয়ত করা রোজার একটি অন্যতম রোকন। সুতরাং নিয়ত করা জরুরি। প্রতিটি ফরজ ইবাদতের মতো রোজার জন্যও নিয়ত করা ফরজ এবং রোজা বিশুদ্ধ হওয়ার শর্ত। নিয়ত সম্পর্কে রোজা রাসুল (সা) বলেন, ‘নিশ্চয় সমস্ত আমল নিয়তের ওপরই নির্ভরশীল। ব্যক্তি যা নিয়ত করে তা-ই সে পায়।’ (বুখারি, হাদিস: ১)
নিয়তের পদ্ধতি
রোজা আদায়ে ইচ্ছুক ব্যক্তি রোজা শুরু করার সময় যেই রোজা পালনের ইচ্ছা করছে, তা তার অন্তরে উপস্থাপন করবে। যেমন: অন্তরে নির্ধারণ করবে যে, আমি রমজানের রোজা রাখছি অথবা কাজা রোজা আদায় করছি কিংবা মান্নত বা কাফ্ফারার রোজ পালন করছি। অথবা ‘আমি আগামীকাল রোজা রাখব’ কিংবা নফল রোজা হলে দিনের বেলা ‘আজ রোজা রাখব’—এভাবে নিয়ত করলেও যথেষ্ট হবে।
রাসুল (স.) ও সাহাবিদের কারও থেকে ‘নাওয়াইতু আন আসুমা’ বা ‘নাওয়াইতু আন উসল্লি’—এ-জাতীয় নিয়ত করার বর্ণনা পাওয়া যায় নি। তবে একদল আলেম মুখে নিয়ত করাকে উত্তম বলেছেন। (ফাতাওয়ায়ে শামি, ৩/৩৪৫)
রোজার নিয়তে সাহরি খাওয়া যথেষ্ট, এতে নিয়তের কাজ হয়ে যাবে। কেননা, রোজাদার রাতের খাবার রোজা রাখার ইচ্ছায় খায়। তবে সাহরি খাওয়ার সময় রোজা রাখার ইচ্ছা না থাকলে তা নিয়ত বলে গণ্য হবে না। (কিতাবুল ফিকহ, ১/৮৮১)
নিয়ত কখন করতে হবে
ফরজ রোজার নিয়ত রাত থেকেই করতে হবে। আয়েশা রা. হতে বর্ণিত, ‘যে ব্যক্তি সুবহে সাদেক উদয় হওয়ার পূর্বে রাতেই রোজার রাখা স্থির করে না, তার রোজা বিশুদ্ধ হয় না।’ (দারাকুতনি. ২/১৭২; বাইহাকি, ৪/২০২)
তবে নিয়ত করার বিষয়টি মনে না থাকলে দিনে যখন মনে হবে, তখনই নিয়ত করে নিলেও হয়ে যাবে। শর্ত হলো নিয়ত অর্ধদিবসের পূর্বে হওয়া এবং ততক্ষণ রোজার পরিপন্থী কোনো কাজ সংঘটিত না হওয়া। (ফাতাওয়া দারুল উলুম, ৬/৩৪৬, ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া, ১/১৯৬; আল-বাদায়েউস সানায়ে, ২/২২৯)
রমজানে প্রতিদিনই রোজার নিয়ত করতে হবে। এক দিন নিয়ত করলে পুরো রমজানের জন্য তা যথেষ্ট হবে না। (ইলমুল ফিকহ, ৩/১৮)
আরও পড়ুনরোজার তাৎপর্য, ইতিহাস ও উদ্দেশ্য০২ মার্চ ২০২৫নফল রোজার নিয়ত দিনের বেলায় করাও বৈধ। আয়েশা রা. বলেন, একদিন রাসুল (স.) এসে আমাকে বললেন, তোমার কাছে খাওয়ার কি কিছু আছে? আমরা বললাম, না। তখন তিনি বললেন, তাহলে আমি রোজা রাখলাম। (মুসলিম: ১১৫২ )
রাসুলের (সা.) খাবার চাওয়া থেকে অনুমিত হয় তিনি পূর্ব থেকে রোজা রাখার নিয়ত করেননি। এই হাদিস নফল রোজার জন্য প্রযোজ্য হবে। কেননা, নফলের ক্ষেত্রে সুযোগ-সুবিধা ফরজের তুলনায় বেশি। এক্ষত্রেও শর্ত হলো নিয়ত অর্ধদিবসের পূর্বে হওয়া এবং নিয়তের সময় পর্যন্ত রোজার পরিপন্থী কোনও কাজ সংঘটিত না হওয়া। কিন্তু যদি এমন হয় যে, সারা দিন পানাহার করে নি আবার রোজা রাখার ইচ্ছাও তার ছিল না, তাহলে রোজা হবে না। (ফাতাওয়া দারুল উলুম, ৬/৩৪৬)
আরও পড়ুনযে কারণে রোজা ভেঙে যায়০৪ মার্চ ২০২৫দুটি কথা মনে রাখতে হবে
১. রোজা যেহেতু সুবহে সাদিক হতে শুরু হয়, তাই ফজর উদয় না হওয়া পর্যন্ত পানাহার বা যৌনকর্মে আপত্তি নেই। রাতের বেলায় মনে মনে রোজা রাখার ইচ্ছা নিয়ে শুয়ে পড়লে তার জন্য ফের নিয়ত করার প্রয়োজন নেই। অনেকে রাতের শুরুতে বা মাঝামাঝি সময়ে সাহরি খেয়ে শুয়ে পড়েন এবং মনে করেন, রোজার নিয়ত করার পর বা সাহরি খাওয়া পর আর পানাহার করা যাবে না—এমন ধারণা সঠিক নয়। সুবহে সাদিক উদয় না হওয়া পর্যন্ত পানাহার করতে কোনও দোষ নেই, অপবিত্র হলেও অসুবিধা নেই। তাতে নিয়তের কোনও ক্ষতি হবে না এবং রোজারও নয়। (বুখারি, হাদিস: ১,৮২৯ ও ১,৯২৬; মুসলিম, হাদিস: ১,১০৯; হাশিয়ায়ে ফাতাওয়া দারুল উলুম, ৬/৪৪৬; ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া, ১/১৯৬)
একই বিধান হায়েজ ও নেফাসগ্রস্ত নারীদের বেলায়ও। ফজর হওয়ার পূর্বেই যদি তারা পবিত্র হয়ে যায়, তবে গোসল না করেই নিয়ত করে নেবে। (হাকাযা কানান নাবিয়্যু সা. ফি রমাদান, ৪৩)
দুই. দিনের দ্বিপ্রহরের আগে রোজার নিয়ত করা না হয়ে থাকলে সেই রোজা সহিহ হবে না বটে, কিন্তু রোজাহীন অবস্থায় দিনের বাকি সময়ে পানাহার করা রমজানের মর্যাদা বিরোধী এবং তা বৈধ নয়। (ইমদাদুল ফাতাওয়া, ১/১৭৩)
আরও পড়ুনইফতারের দোয়া আরবি ও বাংলা উচ্চারণ, অর্থসহ০৩ মার্চ ২০২৫