সিলেটে ছয় দিন আগে ভাঙচুর হওয়া শেখ মুজিবুরের ম্যুরাল গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে
Published: 5th, February 2025 GMT
সিলেটে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থাকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাঙচুর হওয়া ম্যুরালটি এবার বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিচ্ছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা। বুধবার রাত সাড়ে ১০টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত গুঁড়িয়ে দেওয়ার কাজ চলছিল।
এর আগে রাত সাড়ে নয়টার দিকে নগরের কিনব্রিজ এলাকা থেকে সিলেট সিটি করপোরেশনের একটি বুলডোজার (হুইল এক্সকাভেটর) নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে যান। পরে তাঁরা ম্যুরালটি গুঁড়িয়ে দেওয়া শুরু করেন।
এদিকে রাত সাড়ে আটটার দিকে নগরের বন্দরবাজার এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। ‘পতিত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ ও তাদের নিষিদ্ধ অঙ্গসংগঠন কর্তৃক ঘোষিত কর্মসূচির প্রতিবাদ এবং সকল গুম, খুন, দুর্নীতিসহ রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড এবং জুলাই গণহত্যার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের দাবিতে’ এ কর্মসূচি পালিত হয়। কর্মসূচিতে শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গ–সহযোগী সংগঠনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেওয়া হয়। মিছিলটি পরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে যায়।
সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ ম্যুরাল গুঁড়িয়ে দেওয়ার বিষয়ে অবহিত নন বলে জানিয়েছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিষয়টি এখনই খোঁজ নিয়ে দেখব।’
আরও পড়ুনসিলেটে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থাকা বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভাঙচুর৩১ জানুয়ারি ২০২৫এদিকে রাত সাড়ে ১০টার দিকে যোগাযোগ করলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আসাদুল্লাহ আল গালিব প্রথম আলোকে বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা ম্যুরালটি গুঁড়িয়ে দিচ্ছে। এটি গুঁড়িয়ে দেওয়ার কাজ শেষে তাঁরা শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) যাবেন এবং সেখানে থাকা স্থাপনাটিও (শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর শাবিপ্রবিতে থাকা শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালটি ভাঙচুর করা হয়েছিল) গুঁড়িয়ে দেবেন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) রাতের কোনো এক সময়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থাকা শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ভাঙচুর করা হয়। তবে ওই সময় কে বা কারা এ ভাঙচুরের ঘটনা ঘটিয়েছে, তা স্থানীয় প্রশাসন নিশ্চিত করতে পারেনি।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
এবার শেখ হাসিনার বাসভবন সুধা সদনে আগুন
ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের পর আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার বাসভবন সুধা সদনে আগুন দেওয়া হয়েছে। বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ধানমন্ডি ৫ নস্বর সড়কের সুদা সদনে আগুন দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে জানতে ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণকক্ষের দায়িত্বরত কর্মকর্তা রাকিবুল হাসান বলেন, রাত সাড়ে ১১টার দিকে সুধা সদনে আগুনের খবর পান তারা। সেখানে আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
নিরাপত্তারক্ষীরা জানান, রাত সাড়ে ১০টার পর ১০–১২টি ছেলে এসে সুধা সদনে আগুন ধরিয়ে দেয়। আগুন ভবনটিতে ছড়িয়ে পড়লে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের লোকেরা এসে এসব সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন। পরে আশপাশের ভবনের বাসিন্দারা এসে পানি দিয়ে নিচতলার আগুন কিছুটা কমিয়েছেন।
রাত ১২টার সময় ভবনের দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ তলার বিভিন্ন কক্ষে আগুন জ্বলতে দেখা গেছে।
নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচারের কথা ছড়িয়ে পড়ে। আজ বুধবার বিকেলে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়িটি গুঁড়িয়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে ফেসবুকে একাধিক পোস্ট দেন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য শরিফ ওসমান হাদি। রাত ৯টায় ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িতে যাওয়ার কথা থাকলেও পরে কর্মসূচি বদলে রাত ৮টায় নিয়ে আসা হয়।
আজ সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের দিকে এগোতে থাকেন বিক্ষোভকারীরা। পরে রাত আটটার দিকে বিপুলসংখ্যক বিক্ষোভকারী ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ করেন। একপর্যায়ে তারা বাড়িটির ফটক ভেঙে ভেতরে ঢুকে ভাঙচুর শুরু করেন। পরে ওই ভবনে আগুন দেওয়া হয়। রাত ১২টার দিকে এক্সকাভেটর ও ক্রেন দিয়ে ভবনটি ভাঙা শুরু হয়েছে।