জাবিতে খাসির বদলে গরুর কলিজা দেওয়ার অভিযোগ, দোকান ভাঙচুর
Published: 5th, February 2025 GMT
খাসির কলিজার জায়গায় গরুর কলিজা পরিবেশন করার অভিযোগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) বটতলায় খাবারের দোকানে ভাঙচুর চালিয়েছে হিন্দু শিক্ষার্থীরা। পরে শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে দোকান বরাদ্দ বাতিল করে তালাবদ্ধ করে দেয় হল কর্তৃপক্ষ।
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকার রাধুনী হোটেল ও রেস্টুরেন্টে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দুপুর আড়াইটায় বান্ধবীকে নিয়ে রাঁধুনী হোটেলে আসেন বোটানি ৫১ ব্যাচের শিক্ষার্থী বিশ্বজিৎ বড়াল। তিনি দোকানের কর্মচারী ফারুককে খাসির কলিজা দেওয়ার কথা বলেন। কর্মচারী তাকে কলিজা পরিবেশন করলে পরে বুঝতে পারেন সেটা গরুর কলিজা ছিল। তাৎক্ষণিকভাবে তিনি দোকান মালিক মো.
পরে বিকেল ৪টায় প্রক্টর একেএম রাশিদুল আলমসহ প্রক্টোরিয়াল টিমের সদস্যরা সেখানে উপস্থিত হন। প্রক্টরের সামনেই রনি চন্দ্র নামে ৪৯ ব্যাচের এক শিক্ষার্থী দোকান মালিক রিপনকে মারধর করে৷
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বিশ্বজিৎ বড়াল (বোটানি ৫১ ব্যাচ) বলেন, “আমাকে খাসির কলিজা বলে গরুর কলিজা খাওয়ানো হয়েছে৷ এটা আমার ধর্মে বারণ বা পাপ। এ কাজ করে দোকানদার গুরুতর অন্যায় করেছে। তাকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।”
বোটানি ৪৬ ব্যাচের শিক্ষার্থী শুভ সরকার বলেন, “এর আগেও রফিক জব্বারের পাশে সাদেকের দোকানে এমন হয়েছে। তারপরও তাদের শিক্ষা হয় না। ২০ মিনিটের মধ্যে প্রক্টর এখানে না আসলে আমরা দোকান ভেঙে গুড়িয়ে দেব। দোকান মালিক ও স্টাফকে পুলিশে দিতে হবে এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।”
এ ব্যাপারে দোকান মালিক রিপন বলেন, “আমার স্টাফের আসলে জিজ্ঞেস করা উচিত ছিল, ভাই কি খেতে চায়। এটা নিশ্চিতভাবে একটা বড় ভুল। আমি ভাই আর আপুর হাতে পায়ে ধরে মাফ চেয়েছি। বলেছি, আর কখনো এমন হবে না। কিন্তু তারা তবুও আমার কথা শুনছে না। দোকান বন্ধ করে দিলে আমি চলতে পারব না।”
ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে প্রক্টর অধ্যাপক রাশিদুল আলম বলেন, “দোকানটা কামালউদ্দিন হলের অধীনে। আমি একইসঙ্গে কামাল উদ্দিন হলের প্রাধ্যক্ষ হিসেবে রিপন মিয়ার দোকানের বরাদ্দ বাতিল করলাম। তার দোকান এখন থেকেই তালাবদ্ধ থাকবে। পরবর্তীতে সে এসে মালামাল নিয়ে যাবে।”
ঢাকা/আহসান/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
যেমন ছিল মহানবীর (সা.) ইফতার
মহানবীর (সা.) ইফতার ছিল খুব সাদামাটা। তবে তিনি আগ্রহ নিয়ে ইফতার করতেন। রোজা ভাঙার সময় হলে দ্রুত ইফতার করে নিতেন। আয়েশা (রা.) বলেন, ‘রোজা পালনকালে রাসুল (সা.) মাগরিব ও ইফতার দ্রুত করতেন।’ (মুসলিম, হাদিস: ১০৯৯)
তিনি ইফতার করতেন ভেজা বা শুকনা খেজুর, অথবা শুধু পানি দিয়ে। তাঁর দীর্ঘ দিনের সেবক আনাস (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) নামাজ আদায়ের পূর্বে কয়েকটি ভেজা খেজুর দিয়ে ইফতার করতেন, যদি ভেজা খেজুর না থাকত, তবে সাধারণ শুকনা খেজুর গ্রহণ করতেন। তা-ও না থাকলে কয়েক ঢোক পানিই হতো তাঁর ইফতার। (তিরমিজি, হাদিস: ৬৯৬)
আবদুল্লাহ বিন আবি আউফা বর্ণিত হাদিস থেকে জানা যায়, কখনো তার ইফতার ছিল কেবল ছাতু ও পানি মিশ্রিত ইফতার খাবার। তিনি বলেন, ‘একবার, রমজান মাসে আমরা রাসুলের (সা.) সঙ্গে সফরে ছিলাম। সূর্য অস্তমিত হলে তিনি বললেন, হে অমুক, নেমে এসে আমাদের জন্য ছাতু ও পানি মিশ্রিত ইফতার পরিবেশন করো। (বুখারি, হাদিস: ১৯৪১; তিরমিজি, হাদিস: ৬৯৬)
আরও পড়ুনমহানবী (সা.)-কে ভালোবাসার ৭টি নিদর্শন০৬ মার্চ ২০২৫হাদিসে পানিমিশ্রিত দুধ (ঘোল ও মাঠা) দিয়ে ইফতার করার কথাও রয়েছে। তবে কখনো তিনি ইফতার ত্যাগ করেননি। আনাস (রা.) বলেন, আমরা রাসুল (সা.)-কে, এমনকি এক ঢোক পানি দিয়ে হলেও, ইফতার করা ব্যতীত মাগরিবের নামাজ আদায় করতে দেখিনি। (সহিহ ইবনে হিব্বান, হাদিস: ৩,৫০৪)
ইফতারে রাসুলের (সা.) আচরণ থেকে প্রমাণিত হয়, ইফতারের কিছুক্ষণ আগেই ইফতারি সামনে নিয়ে অপেক্ষা করা এবং যথাসময়ে ইফতার করা সুন্নত। খেজুর দিয়ে ইফতার করা মুস্তাহাব। তারপর কোনো মিষ্টি জিনিস খাওয়া যেতে পারে। তারপর পানি। খেজুর না থাকলে যেকোনো ফল দিয়ে ইফতার করা ভালো। তাও সম্ভব না হলে যেকোনো হালাল খাবার, এমনকি শুধু পানি দিয়েও ইফতার করা যায়। যদি পানিও না থাকে, তাহলে ইফতারের নিয়ত করবে এবং ইফতারের নিয়তই হবে তার জন্য ইফতার। (আবু দাউদ, হাদিস: ২,৩৫৫)
সালমান ইবনে আমির (রা.) বর্ণনা করেছেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, তোমাদের কেউ রোজা রাখলে খেজুর দিয়ে যেন ইফতার করে, খেজুর না হলে পানি দিয়ে; নিশ্চয় পানি পবিত্র। (তিরমিজি, আলফিয়্যাতুল হাদিস: ৫৬২)
বর্তমান সময়ে ইফতার ও সাহরিকে কেন্দ্র আমরা যে জাঁকজমক ও আচার-অনুষ্ঠান দেখতে পাই, নবীজি (সা.) কখনো তেমন করেননি।
আরও পড়ুনইফতারের দোয়া আরবি ও বাংলা উচ্চারণ, অর্থসহ০৩ মার্চ ২০২৫