তিতুমীর কলেজ ছাত্রদলে পদ পেলেন সাংবাদিক হেনস্তাকারীরাও
Published: 5th, February 2025 GMT
তিতুমীর কলেজ ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটি গঠিত হয়েছে। গত সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সভাপতি মো. রাকিবুল ইসলাম রাকিব এবং সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির এ কমিটির অনুমোদন দেন।
জানা গেছে, নবগঠিত এ কমিটির একাধিক নেতার বিরুদ্ধে রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। একইসঙ্গে ত্যাগী নেতাদের পদবঞ্চিত হওয়া, ৫ আগস্টের পর নতুন করে অনুপ্রবেশ ও ছাত্রলীগ থেকে ছাত্রদলে অনুপ্রবেশ করা নেতারাও রয়েছে এ কমিটিতে। নবগঠিত এ কমিটিতে রয়েছেন তিতুমীর কলেজ সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে প্রবেশ করে সাংবাদিক হেনস্তাকারীরাও। রয়েছেন চাঁদাবাজির অভিযোগে অভিযুক্ত ও বিভিন্ন সময় বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে শোকজ হওয়া নেতারাও।
১৬ জানুয়ারি ‘ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে তিতুমীর ঐক্যের বাকবিতণ্ডা, তিতুমীর ঐক্যের কমিটি স্থগিত’ নামের ভিডিও সরকারি তিতুমীর কলেজ সাংবাদিক সমিতির ফেসবুক পেইজে প্রকাশ করা হয়। এরপর তিতুমীর কলেজ সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে ঢুকে কলেজে কর্মরত সাংবাদিকদের জবাবদিহির নামে হেনস্তা করে ছাত্রদলের জাবেদ ইকবাল, আব্দুল হামিদের নেতৃত্বে একটি দল।
এ সময় ঘটনার ভিডিও করতে গেলে নারী সাংবাদিককে হেনস্তা করে ছাত্রদলের জিহাদ হাওলাদার। ঘটনায় ছাত্রদল ও কলেজ প্রশাসন কর্তৃক তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। সেই জাবেদ ইকবাল কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক, আব্দুল হামিদ সদস্য ও জিহাদ হাওলাদার যুগ্ন-আহ্বায়ক পদে রয়েছেন। একইসঙ্গে জিহাদ হাওলাদারের ছত্রছায়ায় ক্যাম্পাসে ‘কাকা বাহিনী’র উত্থানের অভিযোগ রয়েছে।
আরো জানা গেছে, গত বছরের ১০ সেপ্টেম্বর সরকারি তিতুমীর কলেজের এক শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে ১৬ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রতিষ্ঠানটির বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত তিতুমীর কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সহ-স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক জিসান বর্তমান কমিটিতে পেয়েছে সদস্যপদ। এছাড়া এ ঘটনায় জড়িত আশিক মাহমুদ, হেলাল উদ্দিনও আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হিসেবে রয়েছেন।
গত বছরের ৪ ডিসেম্বর তিতুমীর কলেজ শাখা ছাত্রদলের আক্কাসুর রহমান আঁখি হল শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক নিয়াজ হোসাইনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, মারধর ও মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠে। মহাখালী বক্ষব্যাধি হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স গ্যারেজের সামনে এ ঘটনা ঘটে বলে জানা যায়। সেই নিয়াজ বর্তমান কমিটিতে সদস্য হিসেবে রয়েছেন।
তিতুমীর কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক পদে রয়েছেন রিমু হোসাইন। দল ভারী করতে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের নেতাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
এদিকে কমিটি গঠনের পর গত ৩ ফেব্রুয়ারি বেলা ১২টার দিকে ক্যাম্পাসের শহীদ বরকত মিলনায়তনের সামনে ছাত্রদলের দুই গ্রুপের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ সময় সাংবাদিকরা ভিডিও করতে গেলে বাধা দেন ছাত্রদলের একাধিক কর্মী।
অভিযোগ রয়েছে, দল ভারী করতে ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে ছাত্রদলে আসা নেতৃবৃন্দ ও ছাত্রলীগ থেকে অনুপ্রবেশকারী নেতারাও এ কমিটিতে স্থান পেয়েছেন। একইসঙ্গে পদবঞ্চিত হয়েছেন দুঃসময়ে রাজনীতিতে থাকা অনেক কর্মী। বিষয়টি নিয়ে পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটি প্রকাশের দিন ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায় একাধিক কর্মীকে।
অভিযোগের বিষয়ে ছাত্রদলের আহ্বায়ক ইমাম হোসেন বলেন, “ত্যাগী কেউ বাদ পড়েনি। যারা জেল খেটেছে, মামলা হামলার শিকার হয়েছে তারা কেউ বাদ পড়েনি। নতুনদের জায়গা দেওয়ার জন্যই কমিটি বড় হয়েছে। আর বিতর্কিত কেউ থেকে থাকলে সংগঠন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।”
অভিযোগগুলোর বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তাদের পাওয়া যায়নি।
ঢাকা/হাফছা/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল র কম ট র কম ট ত এ কম ট সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
অদ্ভুতুড়ে আউট ঢাকা লিগে বিতর্ক
ধারাভাষ্যকার বাকরুদ্ধ। ঠিকমতো গুছিয়ে কথা বলতে পারছিলেন না। স্রেফ বললেন, ‘‘এর আগে আমি কখনও এমন কিছু দেখিনি। ব্যাটসম্যান কেন ব্যাট ক্রিজের ভেতরে নিচ্ছেন না।’’
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে মিরপুর শের-ই-বাংলায় দুটি স্টাম্পিংকে ঘিরে প্রবল আলোচনা, প্রশ্ন ও সন্দেহ তৈরি হয়েছে। গুলশান ক্রিকেট ক্লাব ও শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবের ম্যাচকে ঘিরে তেমন উত্তেজনা ছড়ানোর কথা না। এই ম্যাচটি গুলশানের জন্য ছিল গুরুত্বপূর্ণ। শাইনপুকুরের জন্য তেমন বড় কিছু নয়।
সুপার লিগ নিশ্চিত করতে গুলশানের শেষ দুই রাউন্ডে একটি জয় চাই। ১৭৮ রানের পুঁজি নিয়ে শাইনপুকুরকে ৫ রানে হারিয়ে জয় তুলে নিয়ে ১৩ পয়েন্টে সুপার লিগ নিশ্চিত হয়ে গেছে। কিন্তু শাইনপুকুরের দুই ব্যাটসম্যানের চরম হতশ্রী আউটে উঠেছে প্রশ্ন।
আরো পড়ুন:
পারিশ্রমিক না পেলে ম্যাচ বয়কটের হুমকি পারটেক্সের
আবাহনীর মুখোমুখির আগে মোহামেডানের আত্মবিশ্বাসী জয়
ইনিংসের ৩৬তম ওভারে নিহাদ উজ জামানের বলে ক্রিজের বাইরে বেরিয়ে আসেন রহিম আহমেদ। বল ছিল অফস্টাম্পের বাইরে। ব্যাটসম্যান ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে আসেন মাঝ বরাবর। টার্ন মিস করলেও বল খেলার কোনো চেষ্টা ছিল না তার। বরং ডিফেন্স করতে চেয়েছিলেন। পরবর্তীতে পেছনে না ফিরে ড্রেসিংরুমের পথে হাঁটা দেন।
ইনিংসের শেষ দিকে ম্যাচে রোমাঞ্চ ছড়ায়। শেষ ওভারে জয়ের জন্য ৭ রান প্রয়োজন ছিল শাইনপুকুরের। হাতে কেবল ১ উইকেট। নাঈম ইসলামের করা প্রথম বলে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে যান ব্যাটসম্যান মিনহাজুল আবেদীন সাব্বির। বল তখন ওয়াইড হয়েছে। শট খেলার কোনো চেষ্টাই করেননি মিনহাজুল। হাঁটু গেড়ে মাটিতে বসে পড়েন। পরবর্তীতে ক্রিজে ব্যাট রাখার যথেষ্ট সময় পেলেও করেননি।
উইকেটকিপার ইমন প্রথম দফায় চেষ্টা করেছিলেন স্ট্যাম্প ভাঙার। কিন্তু পারেননি। ওই সময়ে ব্যাট ক্রিজের বাইরে রেখে পুরোটা সময় তাকিয়ে ছিলেন ব্যাটসম্যান মিনহাজুল। পরবর্তীতে স্ট্যাম্প ভাঙলে আম্পায়ার আউট দেন। ইচ্ছাকৃতভাবে ব্যাটসম্যানের এমন আউটে রীতিমত তোলপাড় ক্রিকেটাঙ্গন।
ম্যাচ শেষে এই দুই আউট নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কেউই কথা বলেননি। তবে ম্যাচ রেফারি ও আম্পায়ারের রিপোর্টের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে পারে সিসিডিএম।
বিতর্ক ছড়ানো এই ম্যাচে গুলশানোর জয়ের নায়ক আজিজুল হাকিম তামিম। ব্যাটিংয়ে মাত্র ১৬ রান করলেও বোলিংয়ে ২০ রানে ৩ উইকেট নেন। ৩ উইকেট পেয়েছেন নিহাদুজ্জামানও। এছাড়া ব্যাটিংয়ে তাদের হয়ে সর্বোচ্চ ৪০ রান করেন শাহরিয়ার সাকিব।
ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল