প্রথম ১৬ ওভারে ৪ উইকেটে ৯২। কিন্তু শেষ ৪ ওভারে আর ২ উইকেট হারিয়েই আরও ৭১ রান। মাত্র ২৪ বলের ভোজবাজিতে পাল্টে গেল খুলনা টাইগার্সের ইনিংস। ভোজবাজি বলাটা ঠিক হলো না বোধ হয়। এটাই তো টি-টোয়েন্টি!

খুলনা টাইগার্সের ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যান শিমরন হেটমায়ার আরেকবার দেখালেন, সেটা তিনি খুব ভালোভাবেই জানেন। তবে এরপর তা দেখিয়েছেন চিটাগং কিংসের দুই পাকিস্তানি খাজা নাফি আর হোসেন তালাতও। খুলনার ১৬৩ রানের জবাব দিতে নেমে ৩৫ রানে ২ উইকেট হারানোর পর জুটি বাঁধেন দুই স্বদেশি। ১৩তম ওভারে ২৫ বলে ৪০ রান করে তালাত আউট হওয়ার আগেই ৪২ বলের জুটিতে ৭০ রান। পরে নাফিও ফিরে যান ৪৬ বলে ৩ ছক্কা ও ৪ চারে ৫৭ রান করে। নাফি-তালাত জুটি ভাঙার পর ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে চিটাগং। ১১৩/২ থেকে ১৩০/৭ হয়ে যায় চিটাগংয়ের স্কোর।

আলিস আল ইসলাম আর আরাফাত সানি অবশ্য এরপরও হাল ছাড়েননি। শেষ ওভারে ১৫ রানের সমীকরণ মিলিয়ে চিটাগংকে দারুণ এক জয় এনে দেন তাঁরা। খুলনাকে ২ উইকেটে হারিয়ে ফাইনালে জায়গা করে নেয় মোহাম্মদ মিঠুনের দল।

এর আগে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে কাল খুলনার শুরুটা হয়েছিল কাঁপতে কাঁপতে। ৪ ওভার আর দলের ১১ রানের মধ্যে ফিরে যান ওপেনার মেহেদী হাসান মিরাজ ও অ্যালেক্স রস। তার মধ্যেই ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম বরাবরের মতো বাউন্ডারিনির্ভর ইনিংস খেলতে চেয়েছিলেন। ১৯ রানের মধ্যে ১৬-ই করেছেন চার চারে। তাঁর বাউন্ডারির অপেক্ষায় বল অপচয় হয়েছে। পাওয়ারপ্লেতে ওই ২ উইকেট হারিয়েই তাই খুলনার রান ছিল ৩০। অষ্টম ও নবম পরপর দুই ওভারে ফিরে যান নাঈম আর আফিফ হোসেন। ৪২ রানে ৪ উইকেট হারানো খুলনা যেন শেষ চারে আরও একটি ম্যাড়মেড়ে ম্যাচেরই সম্ভাবনা জাগাচ্ছিল।

খুলনার এমন কম্পমান শুরুর সঙ্গে তাল মিলিয়েই কিনা প্রথম ২১ বলে হেটমায়ার করেছিলেন মাত্র ২২ রান। কিন্তু তাঁর ৩৩ বলে ৬৬ রানের ইনিংসে পরের ৪১ আসে মাত্র ১০ বলে। বুঝতেই পারছেন, শেষ ৪ ওভারের তাণ্ডবটাও মূলত তাঁর ব্যাটেই। খালেদ আহমেদের করা ১৭তম ওভারে এল ২৩ রান। শেষ ২ বলে হেটমায়ার মেরেছেন দুই ছক্কা, যার একটি মিড অনের ওপর দিয়ে গিয়ে আছড়ে পড়ে গ্যালারিতে।

জাতীয় দলের আরেক পেসার বাঁহাতি শরীফুল ইসলামের করা ১৮তম ওভারটা বেশ ভালো। এমন ঝড়ের মধ্যেও মাত্র ১০ রান দিয়েছেন, নিয়েছেন মাহিদুলের উইকেটও।
বিনুরা ফার্নান্ডোর করা ১৯তম ওভারে আবারও টি-টোয়েন্টির বিনোদনে ভেসেছেন খুলনার দর্শকেরা। ২১ রান আসা পুরো ওভারটা একাই খেললেন হেটমায়ার। প্রথম চার বলের হিসাব—৪, ৬, ৬ ও ৪। এর মধ্যে প্রথম ছক্কায় ফিফটি পেয়ে যান মাত্র ২৯ বলে। পরের বলে রান হয়নি, শেষ বলে হেটমায়ার আউট।

হেটমায়ারের বিদায়ে চিটাগং কিংস হাঁপ ছেড়ে বাঁচার স্বস্তি পেয়েছিল নিশ্চয়ই। শেষ ওভারে যদি রানটা আটকে রাখা যায়। যদিও হেটমায়ার থাকলে যা হতো, না থেকেও তার চেয়ে কম হয়নি শরীফুলের করা শেষ ওভারে। মোহাম্মদ নেওয়াজ আর জেসন হোল্ডার মিলে যেন তাঁর অসমাপ্ত কাজটাই শেষ করতে লাগলেন। দ্বিতীয় বলে নেওয়াজের বাউন্ডারি। চতুর্থ ও শেষ বলে হোল্ডারের ছক্কা আর চার। শেষ পর্যন্ত নেওয়াজ অপরাজিত ২ বলে ৫ রান করে আর হোল্ডার ৫ বলে ১২ রানে।

জিতলেই ফাইনাল—এমন ম্যাচ আগেও খেলেছিল চিটাগং কিংস। কিন্তু রংপুর রাইডার্সের কাছে ৯ উইকেটের বড় ব্যবধানে হেরে তাদের অপেক্ষা বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে আফসোস। পুরো বিপিএলটাই যে একটা ভুল টিম কম্বিনেশন নিয়ে খেলতে হচ্ছে! কাল শুরুর দিকে সেই আফসোস কিছুটা হলেও কমিয়েছিলেন বোলাররা। তবে হেটমায়ার তাদের ব্যাটসম্যানদের কাজটাও বাড়িয়েছেন। সেই বাড়তি কাজটা চিটাগংয়ের ব্যাটসম্যানরা করেছেন খুব নাটকীয়ভাবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উইক ট হ র ২ উইক ট প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

ময়মনসিংহসহ বিভিন্নস্থানে শেখ মুজিবুরের ম্যুরাল ভাঙচুর, ভৈরবে আওয়ামী লীগের কার্যালয় ভাঙচুর

ময়মনসিংহ নগরের সার্কিট হাউস মাঠসংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ভাঙচুর শুরু করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা। আজ রাত সাড়ে ১১টার দিকে হাতুড়ি-শাবল নিয়ে ম্যুরাল ভাঙচুর শুরু হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ময়মনসিংহ জেলা কমিটির সদস্যসচিব আলী হোসেন, জেলা কমিটির মুখপাত্র ফয়সাল ফারনিম, মহানগর কমিটির সদস্যসচিব আল নুর মো. আয়াস, মহানগর কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক নাফিউস রোহানসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৫-২০ জন নেতা-কর্মী।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ময়মনসিংহ জেলা কমিটির সদস্যসচিব আলী হোসেন বলেন, ‘পতিত স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালানোর পরও আবার ভিডিও বার্তার মাধ্যমে দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা করছেন। এ অপতৎপরতা দেশের ছাত্র-জনতা মেনে নেবে না। তারই প্রতীক স্বরূপ ধানমন্ডির-৩২ নম্বরের মতো ময়মনসিংহেও স্বৈরাচারের স্বপ্নদ্রষ্টা শেখ মুজিবুরের ভাস্কর্য ভেঙে ফেলে ছাত্র-জনতা।’

অপরদিকে ত্রিশালে অবস্থিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভেঙে ফেলা হয়েছে বঙ্গবন্ধু হলের ‘মুজিব ম্যুরাল’। রাত ১১টার দিকে ভাঙচুর শুরু করেন বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা।

চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে থাকা শেখ মুজিবুর রহমান ও ফজিলাতুন্নেসা মুজিবের ম্যুরাল গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। বুধবার রাতে

সম্পর্কিত নিবন্ধ