বন্দরে ডিবি পুলিশ ও  তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষের লোক পরিচয়ে গ্রাহক কাছ থেকে লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে একটি প্রতারক চক্র বিরুদ্ধে ।

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বন্দর উপজেলার পাতাকাটা ও দাঁসেরগাও এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। প্রতারক চক্রের হোতা নাজমুল হাসান নিজেকে ডিবি পুলিশের লোক হিসেবে পরিচয় দেয় বলে ভুক্তভোগীরা জানান।

এলাকাবাসী জানান, বুধবার সকাল থেকে নাজমুল হাসান ওরফে হাসানের নেতৃত্বে একদল প্রতারক ধামগড় ও মুছাপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে নিজেদের ডিবি পুলিশ ও তিতাসের লোক পরিচয় দিয়ে বাড়ি বাড়ি যায়।

বাড়িতে অবৈধ গ্যাস সংযোগ আছে বলে নানা ভয় ভীতি দেখিয়ে কারো কাছে ২০ হাজার আবার কারো কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে। আবাসিক খাতে অবৈধ গ্যাস  ব্যবহারকারিরা  ভয়ে ১০/ ১৫ হাজার টাকা প্রতারক চক্রের হাতে তুলে দিয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন’র কবল থেকে রেহাই পান।

বিষয়টি  তাৎক্ষণিকভাবে বন্দর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান ও বন্দর থানার ওসি তরিকুল ইসলামকে অবহিত করলে তারা জানান, অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্নে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার বিষয়টি তাদের জানা নেই।

এ ব্যাপারে তিতাস গ্যাসের ম্যানেজার মো.

আজম বলেন, আজ বন্দরে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার কোন অভিযান পরিচালনা করা হয়নি। তিতাসের কোন লোকও আজ বন্দরে যায়নি। ওটা একটা প্রতারক চক্র। তাদের আটকে পুলিশে দেওয়ার কথা বলেন তিনি। 
 

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ অব ধ গ য স

এছাড়াও পড়ুন:

 ৪ আবাসিক হলের নতুন নাম দিলেন শিক্ষার্থীরা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) শেখ পরিবারের সদস্য ও জাতীয় চার নেতার একজনের নামে থাকা সব স্থাপনার নামফলক, গ্রাফিতি ও দেয়াল লিখন মুছে দিতে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা চত্বর থেকে শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে তারা মিছিল নিয়ে চারটি আবাসিক হল ও একটি স্কুলের নামফলক ভেঙে নতুন নাম দেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের নাম পরিবর্তন করে ‘বিজয়-২৪ হল’, নির্মাণাধীন শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান হলের পরিবর্তে ‘শহীদ আলী রায়হান হল’, শেখ হাসিনা হলের পরিবর্তে ‘ফাতিমা আল-ফাহরিয়া হল’ এবং বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা হলের পরিবর্তে ‘নবাব ফয়জুন নেসা চৌধুরানী’ ও শেখ রাসেল মডেল স্কুলের নাম পরিবর্তন করে ‘রিয়া গোপ মডেল স্কুল’ নাম দিয়ে ব্যানার ঝুলিয়ে দেন।

বিক্ষোভে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ‘স্বৈরাচারের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’, ‘মুজিববাদের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’, ‘মুজিব বাদ মুর্দাবাদ, ইনকিলাব জিন্দাবাদ’, ‘আবু সাঈদ মুদ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’, ইত্যাদি নানা স্লোগান দেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা হলের নামফলক পরিবর্তনের সময় হলের ভেতর থেকে নারী শিক্ষার্থীরা ভুয়া ভুয়া স্লোগান দিতে থাকেন। একপর্যায়ে তারা নাম পরিবর্তনকারী শিক্ষার্থীদের দিকে স্যান্ডেল ও ইট পাটকেল নিক্ষেপ করেন। এ সময় বাইরে থেকেও বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের হলে অবস্থিত নারী শিক্ষার্থীদের দিকে ঢিল ছুটে দেখা যায়। হলের নারী শিক্ষার্থীরা নতুন করে লাগানো হলের নাম ফলকের ব্যানার ছিড়ে ফেলেন।

এর আগে পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাত ৯টায় শিক্ষার্থীরা দলে দলে শহীদ শামসুজ্জোহা চত্বরে জড়ো হন। পরে বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সামনে যায়। পরে তারা হলটির নামফলক, উদ্বোধনী ফলকসহ শেখ মুজিবের চিহ্ন সম্বলিত স্থাপনাগুলো রড, হাতুড়ি, কোদাল দিয়ে ভেঙে দেন। এ সময় তারা হলটির নতুন নাম ‘বিজয় ২৪’ ঘোষণা করে রঙ দিয়ে দেয়ালে দেয়ালে নাম লিখে দেন। পরে সেখান থেকে মিছিল নিয়ে নির্মাণাধীন এ এইচ এম কামারুজ্জামান, শেখ হাসিনা ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা হলেরও নামফলক ভেঙে দেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।

এ বিষয়ে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের হলের নাম পরিবর্তন আমরা করব। বাইরে থেকে অন্য শিক্ষার্থীরা এসে সেটি করবে কেন। যেহেতু আগে থেকে ব্যানার নিয়ে আসা হয়েছে, এর মানে বিষয়টি পূর্বপরিকল্পিত। এ বিষয়ে আমাদেরকে আগে থেকে কিছু জানানো হয়নি।

পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল মডেল স্কুলের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় রিয়া গোপ মডেল স্কুল।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম সমন্বয়ক ফজলে রাব্বি মো. ফাহিম রেজা বলেন, ‘গতকাল শেখ হাসিনা লাইভে এসে ছাত্র-জনতার উদ্দেশ্যে ভাষণ দেওয়ার প্রতিবাদে আমাদের এ কর্মসূচি। আমার ভাইদের রক্তের দাগ না শুকাতেই খুনি হাসিনা প্রকাশ্যে আসার সাহস দেখায় কীভাবে? আমরা ফ্যাসিস্ট সরকারের রেখে যাওয়া পদচিহ্ন ও রাবি থেকে তাদের শেকড় মুছে দিতে আমাদের আজকের এ আন্দোলন।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, দেশের শিক্ষার্থীদের কর্মসূচির অংশ হিসেবে সাধারণ শিক্ষার্থীরা এ কর্মসূচি পালন করেছেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে নাম পরিবর্তনের কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়নি। সেটি যদি করা হয়ে থাকে; তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের মাধ্যমেই করা হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ