গাজা নিয়ে ট্রাম্পের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান ব্রাজিলের প্রেসিডেন্টের
Published: 5th, February 2025 GMT
সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাজা দখলের প্রস্তাব ও হুমকিকে প্রত্যাখ্যান করেছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভা। এছাড়া বাণিজ্যিক মিত্রদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপ নিয়েও মন্তব্য করেছেন ব্রাজিলিয়ান প্রেসিডেন্ট।
স্থানীয় এক রেডিওকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “কোনো দেশ, যতই গুরুত্বপূর্ণ হোক, সবসময় পুরো বিশ্বের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে না।” গাজাবাসীকে অন্যত্র সরানোর ব্যাপারে লুলা বলেন, “এটির কোনো মানে নেই। ফিলিস্তিনিরা কোথায় বাস করবে। এটি এমন একটি বিষয় যা কোনো মানবজাতির কাছে বোধগম্য নয়।” ব্রাজিলিয়ান প্রেসিডেন্ট ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি আলাদা রাষ্ট্র গঠনের ব্যাপারে জোর দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “গাজার দেখভালো করতে হবে ফিলিস্তিনিদের।”
এছাড়া গাজায় দখলদার ইসরায়েলি সেনারা যে বর্বরতা চালিয়েছে, সেটিকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে অভিহিত করেছেন তিনি।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর পানামা খাল, ডেনমার্কের স্বায়ত্ত্বশাসিত অঞ্চল গ্রিনল্যান্ড দখলের হুমকি দেন। সর্বশেষ তিনি গাজা দখলের কথা বলেছেন। একই সঙ্গে তিনি কানাডা, মেক্সিকো ও চীনের ওপর শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। যদিও কানাডা ও মেক্সিকোর ওপর শুল্ক আরোপ এক মাস স্থগিত করেছেন তিনি।
শুল্ক আরোপের ব্যাপারে ব্রাজিলিয়ান প্রেসিডেন্ট বলেছেন, “যুক্তরাষ্ট্রকে বিশ্বের প্রয়োজন আছে। ব্রাজিল, মেক্সিকো, চীনের সঙ্গে সৌহার্য্যপূর্ণ সম্পর্ক নিয়ে তাদের বাস করা উচিত। কেউ হুমকি ধামকির মধ্যে সবসময় থাকতে পারে না। সব সময় (যুক্তরাষ্ট্র) হুমকি দিচ্ছে।”
এদিকে ট্রাম্প ক্ষমতা নেওয়ার আগেই হুমকি দিয়েছিলেন ব্রিকস সদস্যভুক্ত দেশগুলো যদি নিজস্ব মুদ্রা চালু করে তাহলে তাদের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবেন। ট্রাম্পের এ হুমকি প্রত্যাখ্যান করে ব্রাজিলিয়ান প্রেসিডেন্ট বলেন, “বাণিজ্যিক উপায় নিয়ে আলোচনা করার অধিকার আমাদের আছে। যেন আমাদের ডলারের ওপর সম্পূর্ণ নির্ভর করতে না হয়।”
সূত্র: রয়টার্স
বিএইচ
.উৎস: SunBD 24
কীওয়ার্ড: শ ল ক আর প কর ছ ন র ওপর
এছাড়াও পড়ুন:
‘আমার কোনো বাহিনী নেই সব সময় অভিযান সম্ভব নয়’
রাউজানে অবৈধভাবে কৃষিজমির টপসয়েল (উপরিভাগ) ও পাহাড় কাটা, কৃষিজমি ভরাট বন্ধ করা যাচ্ছে না। উপজেলা সহকারী কমিশনার (এসি ল্যান্ড) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অংছিং মারমা এসবের বিরুদ্ধে অভিযান চালালেও তেমন কোনো কাজ হচ্ছে না। অংছিং মারমা বলেন, ‘আমার তো কোনো সশস্ত্র বাহিনী নেই, তাই চাইলেও সবসময় অভিযান চালানো যায় না।’
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার কদলপুর, হলদিয়া, ডাবুয়া, নোয়াজিষপুর, পশ্চিম গুজরা, পূর্ব গুজরা, নোয়াপাড়া ও রাউজান সদর ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি কৃষিজমি ও পাহাড় কাটা চলছে। সরকারি খাস খতিয়ানের টিলা কেটে ভরাট করা হচ্ছে পুকুর-জলাশয়। ডাবুয়া ইউনিয়নের লাঠিছড়ি, পশ্চিম ডাবুয়া, কলমপতি ও কেয়াকদাইর এলাকায় কৃষিজমি সাবাড় বেশি হয়েছে। নোয়াজিষপুর ইউনিয়নের মিলন মাস্টারের ঘাটা এলাকায় সর্তা খালের পাড় কেটে সেই মাটি ব্যবহার করা হচ্ছে কৃষিজমি ভরাটে। পশ্চিম গুজরা, পূর্ব গুজরা ও নোয়াপাড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে অবাধে চলছে কৃষিজমি কাটা।
স্থানীয়রা জানান, পাহাড়ি ঢল, হালদা নদী ও সর্তার খালের পানির তোড়ে প্রতিবছর বর্ষায় ব্যাপক দুর্ভোগে পড়েন মানুষ। কৃষিজমি কাটার ফলে জমি নিচু হয়ে যায়, বন্যার পানি আটকে থাকে। আবার কৃষিজমি ভরাটের কারণে বর্ষায় পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়। এ প্রসঙ্গে উপজেলা পরিবেশ দূষণ প্রতিরোধ আন্দোলনের সভাপতি মীর মোহাম্মদ আসলাম বলেন, ‘গোটা উপজেলায় প্রতিযোগিতা করে কাটা হচ্ছে কৃষিজমি। ধ্বংস করা হচ্ছে পাহাড়-টিলা। স্থানীয় প্রশাসনের সমন্বয়হীনতা ও উদাসীনতায় এসব থামানো যাচ্ছে না।’
চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজের জীববিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও সহকারী অধ্যাপক ড. মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘কৃষিজমি ভরাট করে অপরিকল্পিত ঘরবাড়ি নির্মাণের ফলে বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা ও বন্যার ঝুঁকি বৃদ্ধি এবং বিভিন্ন উদ্ভিদ ও প্রাণীর বাসস্থান ধ্বংস হয়। এর ফলে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হয়। পাশাপাশি কৃষিজমি কমে কমলে খাদ্য উৎপাদনও কমে, যা আমাদের অর্থনীতিতে মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। তাই কৃষিজমি কাটা ও ভরাটের আগে সঠিক পরিকল্পনা এবং প্রাকৃতিক পরিবেশের ওপর এর প্রভাব মূল্যায়ন করা অত্যন্ত জরুরি।’
নির্বিচারে কৃষিজমি ও পাহাড় কাটা প্রসঙ্গে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অংছিং মারমা বলেন, ‘এসব বন্ধে সম্মিলিতভাবে সব পক্ষকে এগিয়ে আসতে হবে। আমার একার পক্ষে এসব বন্ধ করা সম্ভব নয়। অভিযোগ পেলে অভিযান চালিয়ে অর্থদণ্ড করা হচ্ছে।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমার কাছে সশস্ত্র কোনো বাহিনী নেই। এ কারণে সবসময় অভিযানে যাওয়া সম্ভব হয় না। পুলিশ, কৃষি অফিস, পরিবেশ অধিদপ্তর, পানি উন্নয়ন বোর্ড নিজ নিজ ক্ষেত্রে কাজ করলে সম্মিলিত প্রয়াসে আইনগত ব্যবস্থা নিতে সুবিধা হয়। আমি বিচার করতে পারি, কিন্তু জড়িতদের ধরে এনে বিচার করা একজনের পক্ষে সম্ভব হয়ে উঠে না। সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।’