শেখ মুজিবের ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িতে ভাঙচুরের পর আগুন
Published: 5th, February 2025 GMT
সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুরের পর আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে এখনও বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা বাড়ির সামনে উপস্থিতি ধরে রেখে স্লোগান দিয়ে যাচ্ছেন।
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যার পর থেকেই ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের সামনে এসে এসব ছাত্র-জনতা জড়ো হয়েছিলেন।
এসময় উপস্থিত ছাত্র-জনতাকে ‘জনে জনে খবর দে, মুজিববাদের কবর দে’, ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’, ‘জনে জনে খবর দে, আওয়ামী লীগের কবর দে’, ‘মুজিববাদ মুর্দাবাদ, ইনকিলাব জিন্দাবাদ’ বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা গেছে।
এদিকে ঘোষণা অনুযায়ী রাত ৮টায় কর্মসূচি থাকলেও সন্ধ্যার পর থেকে সেখানে জড়ো হতে থাকে ছাত্র-জনতা। সেখানে জড়ো হয়ে তারা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে। এক পর্যায়ে রাত ৮টার কিছু আগে ৩২ নম্বরের ওই বাড়িতে ঢুকে পড়ে ছাত্র-জনতা। চালানো হচ্ছে ভাঙচুর। ৩২ নম্বরের বাড়িতে প্রবেশের মুখে স্থাপিত শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালটি ভেঙে ফেলা হচ্ছে।
ঘটনাস্থলে দেখা যায়, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হচ্ছে। অনেকেই দিচ্ছে মুহুমুর্হু স্লোগান। পুরো বিল্ডিংটির অবকাঠামোই ভেঙে ফেলা হচ্ছে। দ্বিতীয় তলার একাংশে দেওয়া হয়েছে আগুন। যদিও গত ৫ আগস্ট এক দফা ৩২ নম্বরের এই বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছিল।
এর আগে, গত বছরের ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচিতে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করার পাশাপাশি দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এ খবর পাওয়ার পরপরই বিকেলে বঙ্গবন্ধুর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছিল উত্তেজিত জনতা।
বিএইচ
.উৎস: SunBD 24
এছাড়াও পড়ুন:
চালকল মালিক সমিতির সভাপতির বাড়িতে গুলি
বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি আবদুর রশিদের কুষ্টিয়ার বাড়ি লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল বুধবার দুপুরে শহরের গোশালা সড়কে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার সময় আবদুর রশিদ শহরের খাজানগর এলাকায় নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ছিলেন। ওই এলাকায় তাঁর বড় কয়েকটি চালকল রয়েছে।
এ ঘটনার পর পুলিশ ও র্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় তারা গুলির খোসা জব্দ করে নিয়ে যান। দিনদুপুরে লোকজনের মধ্যে এ ঘটনার পর এলাকাজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দা সূত্র জানায়, গোশালা সড়কের প্রবেশমুখে কয়েকটি বাড়ির পরই রশিদের অত্যাধুনিক ডুপ্লেক্স বাড়ি। বাড়িটির এখনও নির্মাণকাজ শেষ হয়নি। এর মধ্যে দোতলায় তিনি পরিবার নিয়ে বাস করছেন। ঘটনার সময় বাড়িতে রশিদের স্ত্রী-সন্তান ছিলেন।
গুলির ঘটনার পর আবদুর রশিদ সাংবাদিকদের জানান, তাঁর ভাতিজা সম্প্রতি সদর উপজেলার একটি গরুর হাটের ইজারা পেয়েছেন। সেই ইজারা প্রত্যাহারের জন্য বিএনপির এক নেতা বিপ্লব চরমপন্থি সংগঠনের নেতাদের দিয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। এর আগে মোবাইল ফোনে তাঁকে এবং ভাতিজাকে হুমকিও দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি করেন তিনি।
আবদুল রশিদের ছেলে শাহরিয়ার রশিদ জানান, দুপুরের দিকে তিনি বাড়িতেই ছিলেন। হঠাৎ বিকট শব্দ শুনতে পান। নিচ থেকে বাড়ির দারোয়ান গুলি ছোড়ার বিষয়টি জানায়। পরে দেখা যায়, তৃতীয় তলার কাচ ভেদ করে গুলি ভেতরে চলে গেছে। কাচের টুকরো নিচে ও আশপাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়েছে।
বাড়ির সামনের সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, দুপুর ১টা ৪০ মিনিটের দিকে একটি মোটরসাইকেলে দুই ব্যক্তি আসেন। তাদের দু’জন মাস্ক ও হেলমেট পরা ছিলেন। বাড়ির সামনে দাঁড়ানোর অন্তত ১০ সেকেন্ড পর পেছনে বসে থাকা এক ব্যক্তি বাড়ি লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। এর পর শহরের দিকে চলে যান। এই সময়ে সড়কে মানুষ চলাচলও করছিল।
আবদুর রশিদ জানান, তিনি ও তাঁর পরিবার দীর্ঘদিন ধরে চাল ব্যবসার পাশাপাশি হাটবাজার ইজারা নেওয়ার ব্যবসা করেন। কয়েক দিন আগে ১ কোটি ৬২ লাখ টাকায় কুষ্টিয়া সদর উপজেলার আইলচারা গরুর হাটের ইজারা পান তাঁর ভাতিজা জিহাদুজ্জামান জিকু। দরপত্র কেনার পর থেকেই একটি চরমপন্থি সংগঠনের নেতা পরিচয়ে ইজারাপত্র জমা না দিতে হুমকি দিয়ে আসছিল। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে চরমপন্থি নেতা স্বপন ঠাকুর পরিচয় দিয়ে ওই ব্যক্তি বলেন, বিএনপি নেতা জাহিদুল ইসলাম বিপ্লব ও মুন্না নামে দু’জন এই হাট পরিচালনা করবে। এ জন্য ইজারা প্রত্যাহার করে নিতে হবে। না হলে মেরে ফেলা হবে।
হুমকি পাওয়ার পর থেকে রশিদের ভাতিজা খাজানগর এলাকার গোল্ডেন অটো রাইস মিলের মালিক জিকু আত্মগোপনে রয়েছেন। জিকু বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল মালিক সমিতির কুষ্টিয়া শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা যুবদলের সাবেক শিল্পবিষয়ক সম্পাদকও।
জিকু মোবাইল ফোনে সমকালকে বলেন, ‘কয়েক দিন আগে একটি হাট ইজারা পেয়েছিলাম। হাটের দরপত্রে অংশ না নিতে হুমকি দেওয়া হয়েছিল। সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে হাট ইজারা পাওয়ার পর হুমকি বেড়ে যায়। এই হুমকির সঙ্গে চরমপন্থি ও বিএনপির দলীয় কয়েকজন লোক জড়িত। নেপথ্যে থেকে বিএনপি নেতা বিপ্লবও এ কাজ করছে বলে ধারণা করছি।’
এ ব্যাপারে কুষ্টিয়া সদর উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব জাহিদুল ইসলাম বিপ্লব বলেন, ‘রশিদদের সঙ্গে কিছু বিষয়ে মতপার্থক্য রয়েছে। তবে এসব ঘটনার সঙ্গে আমার বিন্দুমাত্র সংশ্লিষ্টতা নেই। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী চাইলে তদন্ত করতে পারে। এই মৌসুমেও হাটের দরপত্র কিনেছিলাম। চরমপন্থিরা আমাকেও অংশ না নিতে হুমকি দিয়েছিল। এ জন্য আর এগোইনি। আমি বিএনপির রাজনীতি করি। হেয় করতে আমার নাম এখানে আনা হচ্ছে।’
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কুতুব উদ্দিন বলেন, ‘যে বা যারা পরিচয় দিয়ে হুমকি দিয়েছে, সঠিক তদন্তের মাধ্যমে খুঁজে বের করতে হবে। যাদের নাম ব্যবহার করা হচ্ছে, কেউ তো ফাঁসানোর জন্যও করতে পারে।’
কুষ্টিয়া মডেল থানার ওসি মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘গুলির ঘটনা ঘটেছে। গুলির খোসা জব্দ করা হয়েছে। পুরো বিষয়টি নিয়ে পুলিশের একাধিক দল কাজ শুরু করেছে। মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।’