নোবিপ্রবিতে ১ হাজার শিক্ষার্থীকে কোরআন প্রদান
Published: 5th, February 2025 GMT
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) ১ হাজার শিক্ষার্থীর মাঝে অর্থসহ কোরআন বিতরণ করা হয়েছে।
বুধবার (৫ফেব্রুয়ারি) দুপুর ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে দাওয়াহ সার্কেলের আয়োজনে কোরআন ফেস্টিভালের আয়োজন করা হয়।
‘আল কোরআন একাডেমি লন্ডন’ এর সৌজন্যে কোরআন বিতরণ ছাড়াও আয়োজিত এ ফেস্টিভালে ইসলামি বিতর্ক, ক্যালিগ্রাফি ও কোরআন অলিম্পিয়াড প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।
নোবিপ্রবি দাওয়াহ সার্কেলের সভাপতি আবরার হোসেনের সভাপতিত্বে ও রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ ইউসুফের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক মোখতার আহমদ, আল কোরআন একাডেমি লন্ডনের চেয়ারম্যান হাফেজ ড.
কর্নেল (অব.) আশরাফ আল দীন বলেন, “কোরআন শুধু তেলাওয়াতের জন্য নয়, এটা বুঝেও পড়তে হবে। কোরআন পৃথিবীর মানুষের জীবন পরিবর্তন করতে এসেছে। যা মানুষকে অন্ধকার থেকে আলোতে নিয়ে আসে। কুরআনের সঙ্গে যারাই সম্পৃক্ত ছিল, তারাই শ্রেষ্ঠ হয়েছে।”
অধ্যাপক মোক্তার আহমদ বলেন, “জুলাই বিপ্লবের পূর্বে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কারো কাছে ইসলামী কোন বইপত্র পাওয়া গেলে, তাদের জঙ্গি বলে আখ্যায়িত করা হতো। যার একটা বড় কারণ ছিল, বস্তুকেন্দ্রিক শিক্ষাব্যাবস্থা। সেজন্য এখান থেকে বেড়িয়ে এসে ধর্মীয় নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও বস্তুগত উভয়ের সমন্বয়ে একটি এডুকেশনাল মোরাল তৈরি করতে হবে।”
হাফেজ ড. মুনির উদ্দিন আহমদ বলেন, “এ কোরআন বাসায় রেখে না দিয়ে বুকে ধারণ করতে হবে। তাহলেই সমাজের সব অসমতা দূর হবে। একমাত্র কোরআনই পারে সমাজকে আলোকিত করতে। এটি এমন একটি গ্রন্থ, যাতে কোনো ভুল নেই। পৃথিবীর ইতিহাসে এ পর্যন্ত কোনো বিজ্ঞানী, নৃবিজ্ঞানী, সাহিত্যিকরা ভুল খুঁজে পায়নি। তাই কোরআন অনুযায়ী সমাজ গঠনের কাজ করতে হবে।”
আলোচনা শেষে অতিথিবৃন্দ বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরষ্কার তুলে দেন।
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
আলুর ফলন বৃদ্ধিতে আশা দেখাচ্ছে বিনা চাষ পদ্ধতি
আলু উৎপাদনকারী শীর্ষ দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম। উন্নত চাষপদ্ধতির ফলে দিন দিন আলুর উৎপাদন বাড়লেও দেশ এখনও পুরোপুরি স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারেনি। আবার আলু উৎপাদনে প্রচলিত চাষ পদ্ধতি এবং প্রয়োজনের অধিক রাসায়নিক সার ব্যবহারের কারণে মাটির স্বাস্থ্য দিন দিন অবনতির দিকে যাচ্ছে। তবে এ সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) কৃষিতত্ত্ব বিভাগের একদল গবেষক। সম্প্রতি তারা ফলন বৃদ্ধিতে সংরক্ষণশীল চাষ পদ্ধতি (কনজারভেশন এগ্রিকালচার) বা বিনা চাষে (জিরো টিলেজ) আলু উৎপাদন প্রযুক্তির প্রয়োগ ঘটিয়ে সাফল্য পেয়েছেন। দুই মৌসুম ধরে আলুর বিনা চাষ পদ্ধতি ও সমন্বিত পুষ্টি ব্যবস্থাপনা বা ইন্টিগ্রেটেড নিউট্রিয়েন্ট ম্যানেজমেন্টের (আইএনএম) ওপর গবেষণা করে প্রাথমিকভাবে সাফল্য পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন। বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে গবেষণা প্রকল্পটি চলমান রয়েছে।
২ ফেব্রুয়ারি বাকৃবির কৃষিতত্ত্ব খামার গবেষণাগারে আয়োজিত মাঠ গবেষণা কার্যক্রম পরিদর্শন অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানান গবেষক দলের প্রধান কৃষিতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. আহমদ খায়রুল হাসান ও সহযোগী গবেষক এফ এম রুহুল কুদ্দুস। এ সময় প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন বাকৃবি (রিসার্চ সিস্টেম) পরিচালক অধ্যাপক ড. হাম্মাদুর রহমান। আরও উপস্থিত ছিলেন কৃষিতত্ত্ব বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. রমিজ উদ্দিন, অধ্যাপক ড. আবদুল কাদের, অধ্যাপক ড. আবদুস সালাম, অধ্যাপক ড. পারভেজ আনোয়ার প্রমুখ।
গবেষক দলের দাবি, বিনা চাষে আলুর ফলন প্রচলিত চাষ পদ্ধতির চেয়ে তুলনামূলক বেশি। পাশাপাশি এ পদ্ধতিতে চাষের ফলে গ্রিন হাউজ গ্যাস নিঃসরণ অনেকাংশে কমে যায়। প্রধান গবেষক অধ্যাপক ড. আহমদ খায়রুল হাসান গবেষণার কার্যক্রম সম্পর্কে বলেন, বারি-৭ (ডায়মন্ড) জাতের আলু নিয়ে গবেষণাটি শুরু করা হয়। এতে দুই ধরনের চাষ পদ্ধতি নিয়ে কাজ করা হয়েছে। একটি প্রচলিত চাষ পদ্ধতি আর অন্যটি সংরক্ষণশীল চাষ বা বিনা চাষ পদ্ধতি। পাশাপাশি আইএনএম পদ্ধতি নিয়েও কাজ করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে আইএনএম পদ্ধতিতে নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে পাঁচ ধরনের সারের মাত্রা। প্রথম মৌসুমে আলুর চাষ পদ্ধতি ও সমন্বিত পুষ্টি ব্যবস্থাপনার ওপর ভিত্তি করে একই জমিতে তিন উপায়ে চাষাবাদ করে পরীক্ষা চালানো হয়েছে। প্রথমটিতে বিনা চাষ ও শতভাগ রাসায়নিক সার প্রয়োগ করে, দ্বিতীয়টিতে প্রচলিত চাষ ও শতভাগ রাসায়নিক সার পদ্ধতি প্রয়োগ করে এবং তৃতীয়টিতে বিনা চাষ ও শতভাগ জৈব সার প্রয়োগ করে চাষাবাদ করা হয়। তিন পদ্ধতির মধ্যে বিনা চাষ পদ্ধতি ও শতভাগ রাসায়নিক স্যার প্রয়োগকৃত অংশের ফলন বাকি দুই পদ্ধতির তুলনায় হেক্টরপ্রতি প্রায় দুই টন বেশি পাওয়া গেছে। গবেষণার দ্বিতীয় মৌসুমের ফসল এখন মাঠে রয়েছে। তবে মাঠ পরিদর্শন করে প্রথম মৌসুমের মতো প্রচলিত চাষ পদ্ধতির চেয়ে বিনা চাষের পদ্ধতিতে অধিক ফলন আশা করছেন তারা।
সহযোগী গবেষক এফ এম রুহুল কুদ্দুস আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য প্রচলিত চাষাবাদ পদ্ধতিতে সংস্কার এনে সংরক্ষণশীল চাষ পদ্ধতি গ্রহণ করা হয়েছে। সংরক্ষণশীল চাষ পদ্ধতি বলতে, প্রায় বিনা চাষে ফসল উৎপাদন বোঝায়। এ পদ্ধতিতে আলুর ক্ষেতে ট্রাক্টর বা হাল দিয়ে মাটি চাষ করার প্রয়োজন হয় না। হালকা টাইন দিয়ে মাটি খুঁড়ে আলু লাগানো হয় এবং জমিতে প্রয়োজন অনুযায়ী জৈব সার দেওয়া হয়। মাটির ওপর খড় দিয়ে মালচিং প্রযুক্তি প্রয়োগ করা হয়, যা মাটির আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে।