চাঁদাবাজির কারণে কৃষকের ত্রাহি অবস্থা: জিএম কাদের
Published: 5th, February 2025 GMT
কৃষকরা কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, ‘‘রাস্তায় রাস্তায় চলছে চাঁদাবাজি। চাঁদাবাজি আর মধ্যস্বত্বের মুনাফার লোভে জীবন যাচ্ছে কৃষকের। কৃষকদের বাঁচাতে সরকারকে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।’’
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।
জিএম কাদের বলেন, ‘‘গেলো বছর কয়েক দফা বন্যায় ফসলের বিপুল ক্ষতি মেটাতে এবার ব্যাপকভাবে শীতকালীন শাকসবজি আবাদ করেছে কৃষক। ভালো ফলন পেলেও ফসলের ন্যায্য মূল্য না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে কৃষক। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে রাস্তায় রাস্তায় চাঁদাবাজি ও মধ্যস্বত্বভোগীদের মুনাফার লোভ।’’
তিনি বলেন, ‘‘বীজ, সার, কীটনাশক ও কৃষি শ্রমিকের মজুরি দিয়ে ফসল ফলাতে কৃষক যে ব্যয় করেছে, তা তুলতে পারছে না ফসল বিক্রি করে। কৃষক ২-৩ টাকা মূল্যে যে লাউ বিক্রি করেছে, তা রাজধানীতে ১৫-২০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। আবার ২-৩ টাকা দামের টমেটো রাজধানীতে বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১৫-১৭ টাকায়। ৩-৪ টাকা দামের বেগুন রাজধানীতে বিক্রি হচ্ছে ১৫-১৮ টাকায়। কৃষক প্রতি পিস ফুলকপির দাম ২ থেকে ৩ টাকা পেলেও রাজধানীতে বিক্রি হচ্ছে ১০-১৫ টাকায়। একটি দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনার মাধ্যমে স্থানীয় পর্যায়ে কৃষিপণ্য সংরক্ষণ ও শুধুমাত্র বাজারের চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক হিমাগারসহ অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। একই সাথে বীজ, সার ও কীটনাশকের দাম কমাতে হবে।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এনএইচ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ইনু বললেন, আমি ঠিক আছি, আপনারা চিন্তা করবেন না
আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের ওপর হামলাসহ দুটি হত্যাচেষ্টা মামলায় জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন কুষ্টিয়ার একটি আদালত। আজ রোববার দুপুর আড়াইটার দিকে সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুকে কুষ্টিয়ায় পুলিশ প্রহরায় আদালতে হাজির করা হয়। কুষ্টিয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদা সুলতানা তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আদালতে হাস্যোজ্জ্বল দেখা যায় ইনুকে। সিঁড়ি দিয়ে দোতলায় এজলাস কক্ষে নেওয়া হয়। এ সময় তার সঙ্গে আইনজীবীরা ছিলেন। পুলিশের কড়া পাহারার মধ্যে তার কিছু সমর্থকও হাজির হন আদালতে। সমর্থকদের উদ্দেশে হাত নাড়েন ইনু। আদালত কক্ষের কাঠগড়ায় তিনি ৪ থেকে ৫ মিনিট ছিলেন। বের হওয়ার পথে ওকালত নামায় স্বাক্ষর করেন। তিনি আইনজীবীদের বলেন, ‘আমি ঠিক আছি, আপনারা কোনো চিন্তা করবেন না।’
বের হওয়ার সময় ইনুর দলের কর্মীরা প্রিজন ভ্যানের সামনে ভিড় করেন। এ সময় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথাও বলেন তিনি। তিনি কর্মীদের উদ্দেশ্য করে কিছু বলার চেষ্টা করেন। বাহাদুর নামের এক নেতাকে ইনু বলেন, ‘বাহাদুর ভালো থেক।’ এরপর পুলিশ তাকে দ্রুত গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়।
ইনুর আইনজীবী তানজিলুর রহমান এনাম বলেন, ‘তিনি (ইনু) ওকালত নামায় স্বাক্ষর করেছেন। তিনি মানসিকভাবে শক্ত আছেন বলে জানিয়েছেন। কোনো চিন্তা করতে বারণ করেছেন। তবে আদালতে তিনি কোনো কথা বলেননি। শুধু আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলেন।’
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ২২ জুলাই একটি মানহানির মামলায় কুষ্টিয়ার আদালতে হাজিরা দিতে এলে হামলার শিকার হন আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। পরে ২০২৪ সালের ১০ অক্টোবর মাহমুদুর রহমান নিজে বাদী হয়ে কুষ্টিয়া সদর থানায় ৪৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এ মামলার চার নম্বর আসামি হাসানুল হক ইনু। এছাড়া ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার ঘটনায় আহত শরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে একটি হত্যাচেষ্টা মামলা করেন। এ মামলাতেও হাসানুল হক ইনুকে আসামি করা হয়। এ দুটি মামলায় আজ দুপুর আড়াইটার দিকে হাসানুল হক ইনুকে কুষ্টিয়ায় আদালতে হাজির করা হয়।
কুষ্টিয়া আদালতের সরকারি কুঁসলি অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম জানান, হাসানুল হক ইনু ১৪ দলীয় জোটের অন্যতম নেতা হিসেবে হাসিনা সরকারের সব অপকর্মের দোসর। আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের ওপর হামলার রূপকারও তিনি। এ মামলাটি ছাড়াও আরও একটি মামলাতে হাসানুল হক ইনু আসামি হওয়ায় তাকে পুলিশ শ্যোন এরেস্ট দেখিয়ে আদালতে হাজির করলে বিচারক বিধি অনুযায়ী তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছেন।