‘সিরিয়াস গার্লফ্রেন্ড’ পলাকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত বিল গেটস
Published: 5th, February 2025 GMT
বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনী বিল গেটস নতুন বান্ধবী পওলা হার্ডকে ‘সিরিয়াস গার্লফ্রেন্ড’ বলে মন্তব্য করেছেন। নতুন এই আলোচিত জুটি ‘মজার’ সময় পার করছেন। গতকাল মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম টুডে-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ৬৯ বছর বয়সী বিল গেটস এ কথা বলেন।
নতুন বান্ধবীর বিষয়ে বিল গেটস বলেন, ‘পলা হার্ডের মতো একজন একান্ত বান্ধবী পাওয়ায় আমার নিজেকে ভাগ্যবান মনে হচ্ছে। আমরা বেশ মজার সময় পার করছি, অলিম্পিকে গেলাম, অনেক ভালো ভালো জিনিস হচ্ছে।’
২০২১ সালে মেলিন্ডা ফ্রেন্সের সঙ্গে বিল গেটসের বিবাহবিচ্ছেদ হয়। ২৭ বছরের দাম্পত্য জীবনে তাঁদের তিন সন্তান রয়েছে। মেলিন্ডার সঙ্গে বিচ্ছেদকে সম্প্রতি ‘ভুল সিদ্ধান্ত’ ছিল বলে মন্তব্য করেছেন বিল গেটস। গত মাসের শেষের দিকে লন্ডনের দ্য টাইমসকে দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে বিল গেটস বলেছিলেন, ‘এ ভুলের জন্য আমি সবচেয়ে বেশি অনুতপ্ত।’ তবে বর্তমানে নিজেকে ‘উৎফুল্ল’ বলে মন্তব্য করছেন তিনি।
বিচ্ছেদের পরের বছর ২০২২ সাল থেকে বিল গেটস ও পলা হার্ড একসঙ্গে নানা অনুষ্ঠানে হাজির হতে থাকেন। তবে ২০২৩ সাল পর্যন্ত তাঁরা নিজেদের সম্পর্কের কথা নিশ্চিত করেননি। ২০২৪ সালে তাঁদের একসঙ্গে অলিম্পিকে দেখা যায়।
আরও পড়ুনমেলিন্ডার সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ ছিল ভুল: বিল গেটস২৮ জানুয়ারি ২০২৫হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পলা হার্ড যুক্তরাষ্ট্রের বহুজাতিক প্রযুক্তি কোম্পানি ওরাকলের সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মার্ক হার্ডের স্ত্রী ছিলেন। ক্যানসারের সঙ্গে দীর্ঘ যুদ্ধ শেষে ২০১৯ সালে ৬২ বছর বয়সে মার্ক হার্ড মারা যান। এই দম্পতির ক্যাথরিন ও কেলি নামে দুই সন্তান রয়েছে।
দানবীর হিসেবে পলার সুখ্যাতি রয়েছে। বিশেষ করে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে তিনি বিপুল দান করেছেন। দুই দশক ধরে তিনি এসব দাতব্য কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছেন।
গতকাল বিল গেটসের আত্মজীবনীমূলক বই ‘সোর্স কোড: মাই বিগিনিংস’ প্রকাশিত হয়েছে। এই বইয়ে তিনি পলার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। মাইক্রোসফটের এই সহপ্রতিষ্ঠাতার বইটির পাণ্ডুলিপি যারা শুরুর দিকে পড়েছেন, পলা তাঁদের অন্যতম।
আরও পড়ুনবিল গেটস প্রেম করছেন, কে সেই প্রেমিকা০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩বিল গেটস ও মেলিন্ডা.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব ল গ টস কর ছ ন করছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
ধৈর্য ধরার আহ্বান কুয়েট কর্তৃপক্ষের, হলে ওঠার ঘোষণা শিক্ষার্থীদের
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) দাপ্তরিক কার্যক্রম শুরু হচ্ছে ১৫ এপ্রিল। তবে এখনই একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হচ্ছে না। এ জন্য শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করতে বলছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. আনিছুর রহমান ভূঞা এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আজ মঙ্গলবার এসব তথ্য জানান।
এদিকে আগামী রোববার ক্যাম্পাসে ফিরে সবাই একসঙ্গে হলে ওঠার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। ‘কুয়েট ১৯’ নামের একটি ফেসবুক পেজে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা গতকাল সোমবার ওই ঘোষণা দেন। ওই পেজ থেকে কুয়েট শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হয়।
ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। নানা ঘটনাপ্রবাহের মধ্য দিয়ে ২৫ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেটের ৯৯তম (জরুরি) সভায় সব আবাসিক হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়। পরদিন সকাল ১০টার মধ্যে সব শিক্ষার্থীকে হলত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়। এর প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন।
মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. আনিছুর রহমান ভূঞা স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ১৮ ফেব্রুয়ারি সংঘটিত অপ্রীতিকর ও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সিন্ডিকেটের ৯৯তম জরুরি সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম ও আবাসিক হলগুলো পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ আছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আন্তরিক। শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবনের অপূরণীয় ক্ষতির কথা মাথায় রেখে নিরাপত্তা নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম স্বাভাবিক করতে কর্তৃপক্ষ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এমতাবস্থায় শিক্ষার্থী ও সম্মানিত অভিভাবকবৃন্দকে ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করার জন্য অনুরোধ করা হলো।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ১৫ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শুধু দাপ্তরিক কার্যক্রম শুরু হবে। তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ সাপেক্ষে অতি দ্রুত শিক্ষা কার্যক্রম শুরু ও হলগুলো খোলার বিষয়ে কর্তৃপক্ষ আশাবাদী। বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থী–শিক্ষক, কর্মকর্তা–কর্মচারীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও বিধি মেনে চলার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে কুয়েটের সহ-উপাচার্য অধ্যাপক শেখ শরীফুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, দাপ্তরিক কার্যক্রম ১৫ এপ্রিল শুরু হবে, এটা আগেই সিদ্ধান্ত ছিল। আবাসিক হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণার সিদ্ধান্ত এবং পরবর্তী নির্দেশ না হওয়া পর্যন্ত একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধের সিদ্ধান্ত সিন্ডিকেটে হয়েছে; তাই সিন্ডিকেট সভার মাধ্যমেই এ দুই বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।
তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের বিষয়ে শরীফুল আলম বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন এখনো জমা হয়নি। আগামী সপ্তাহের প্রথম দিকে তদন্ত কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার শেষ সময় নির্ধারণ করা আছে।
এদিকে কুয়েট ১৯ নামে শিক্ষার্থীদের ফেসবুক পেজে এক পোস্টে লেখা হয়েছে, ‘কুয়েটের হল কমিটি, সব বিভাগের ভিপি ও সিআরদের সম্মিলিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ১৩ এপ্রিল নিরাপদ ক্যাম্পাসের প্রত্যাশায় আমরা আমাদের কুয়েট ক্যাম্পাসে প্রত্যাগমন করব এবং সবাই একসঙ্গে হলে উঠব।’
বিভিন্ন জেলা থেকে আসা সব শিক্ষার্থীকে নিজ নিজ জেলা অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে যোগাযোগ করে সংঘবদ্ধভাবে ক্যাম্পাসে আসার আহ্বান জানানো হয়েছে ফেসবুক পোস্টে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কুয়েট ১৯ ফেসবুক পেজে আরও একটি পোস্ট করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, ‘পূর্ববর্তী সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বর্তমান প্রশাসনকে কুয়েটিয়ানরা পরিহার করেছে। কুয়েটিয়ানদের ১৩ এপ্রিল হলে ফেরার ঘোষণার মুখে প্রশাসন থেকে দেওয়া বিজ্ঞপ্তিকে আমরা পরিহার করছি। ১৩ এপ্রিল সারা দেশ থেকে কুয়েটিয়ানরা তাদের নিজ নিজ হলে ফেরত আসবে।’
১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় শতাধিক মানুষ আহত হন। পরের দিন প্রশাসনিক ভবনসহ সব একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। ওই দিন দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের সভায় কুয়েটে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সংঘর্ষের ওই ঘটনার তদন্তে কমিটিও করা হয়। ওই দিন রাতেই খানজাহান আলী থানায় অজ্ঞাতনামা ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করে মামলা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
গত ২০ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ সমাবেশ করে সব রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনকে লাল কার্ড দেখান শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে তাঁরা উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করেন। ২৩ ফেব্রুয়ারি শিক্ষার্থীরা খুলনা থেকে ঢাকায় এসে প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেন। এতে হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচার, উপাচার্যের পদত্যাগসহ ছয় দফা দাবি জানানো হয়।