ইতালি ছেড়ে ফাদার রিগন রয়ে গেলেন এই বাংলাতেই, জন্মশতবর্ষে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা
Published: 5th, February 2025 GMT
‘তোমরা যেখানে সাধ চ’লে যাও—আমি এই বাংলার পারে র’য়ে যাব’। জীবনানন্দ দাশের কবিতার পঙ্ক্তির সঙ্গে যেন মিলে যায় ফাদার মারিনো রিগনের জীবন। একজন ইতালীয় হলেও বাংলার প্রেমে মজে গিয়েছিলেন তিনি। এ দেশের মাটি-মানুষ আর সংস্কৃতিকে ধারণ করেছিলেন মনে-প্রাণে।
১৯৫৩ সালে একজন মিশনারি হিসেবে বাংলাদেশে আসেন ফাদার রিগন। কিছুদিন যশোরে কাজ করার পর যান সুন্দরবনঘেঁষা জনপদ বাগেরহাটের মোংলায়। মোংলা তখন বিচ্ছিন্নপ্রায় এক জনপদ। লোকে বলত, সেখানে জলে কুমির, ডাঙায় বাঘ বাস করে। পানিপথই যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম। এমন এক পরিবেশে গিয়ে কাজ শুরু করেন মারিনো রিগন।
রিগনের কর্মকাণ্ডের গুরুত্বপূর্ণ অংশজুড়ে ছিল শিক্ষা। তখনই তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, কেবল শিক্ষার মাধ্যমেই জীবনমানের উন্নয়ন সম্ভব। স্থানীয়দের সঙ্গে নিয়ে গড়ে তোলেন সেন্ট পলস উচ্চবিদ্যালয়। স্কুল প্রতিষ্ঠা করেই ক্ষান্ত হননি। বাড়ি বাড়ি গিয়ে ছাত্র সংগ্রহ করেছেন। মানুষের বাড়িতে গিয়ে বোঝাতেন শিক্ষা কতটা জরুরি। তিনি হয়ে উঠলেন সেখানকার আলোর ফেরিওয়ালা। এভাবে একের পর এক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু করেছেন রিগন। তাঁর হাত ধরে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ১৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সেসব প্রতিষ্ঠানে আজও নিরবচ্ছিন্ন পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে হাজার হাজার ছাত্রছাত্রী।
শিশুদের সঙ্গে ফাদার মারিনো রিগন.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রাম্পকে যারা ভোট দিয়েছিলেন চাকরিচ্যুত করলেন তাদেরও
গত নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় জেনিফার পিগট তার একতলা বাড়ির বাইরে ট্রাম্পের প্রতি সমর্থন জানিয়ে লাল-নীল রঙের প্রচারণার পতাকা ঝুলিয়েছিলেন। পরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন ট্রাম্প। হঠাৎ করেই পিগটকে সিভিল সার্ভিসের চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে এবং এটা হয়েছে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্দেশেই। এখন তিনি বুঝতে পারছেন যে তিনি কত বড় ভুল করেছিলেন। খবর রয়টার্সে
পশ্চিম ভার্জিনিয়ার পার্কার্সবার্গে অবস্থিত ট্রেজারি ডিপার্টমেন্টের ব্যুরো অব ফিসকাল সার্ভিস থেকে ফেব্রুয়ারিতে বরখাস্ত হওয়া ১২৫ জনেরও বেশি ব্যক্তির মধ্যে পিগটও রয়েছেন। সেখানকার বিপুল সংখ্যক মানুষ রিপাবলিকান প্রার্থী হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ভোট দিয়েছিলেন।
রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পিগট বলেন, আমি যাদের সঙ্গে কথা বলেছি, তারা কেউই বুঝতে পারেননি যে, এই প্রশাসন ক্ষমতায় থাকলে আমাদের জীবনের ওপর কতটা বিপর্যয় নেমে আসবে। ৪৭ বছর বয়সী এই নারী বলেন, এখন তিনি যা জানতে পারছেন, তা আগে জানলে তিনি কখনই ট্রাম্পকে ভোট দিতেন না।
তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হয়তো দেশের জন্য বেশ কিছু বিষয়ে বেশ ভালোই কাজ করছেন। কিন্তু আমি এই বিষয়টি বুঝতে পারছি না। বিএফএসে পাঁচ বছর ধরে কাজ করছিলেন পিগট। সম্প্রতি তিনি পদোন্নতি পেয়েছেন। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসন হাজার হাজার ফেডারেল কর্মীকে বরখাস্ত করতে শুরু করলে তিনিও এর মধ্যে পড়ে যান।
পিগট একজন রক্ষণশীল নারী। তিনি তিনবার ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ভোট দিয়েছেন। কিন্তু এবার তিনি ট্রাম্পের বিভিন্ন পদক্ষেপে বেশ হতবাক হয়ে গেছেন।
এদিকে হোয়াইট হাউজের একজন মুখপাত্র রয়টার্সকে জানিয়েছেন যে, অপচয়, জালিয়াতি এবং অপব্যবহারের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য ট্রাম্পের পক্ষ থেকে ফেডারেল সরকারকে পুনর্গঠনের জন্য একটি ম্যান্ডেট দেওয়া হয়েছে। নভেম্বরের নির্বাচনে ট্রাম্প তার প্রতিদ্বন্দ্বী, ডেমোক্র্যাটিক ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকে ১ দশমিক ৫ শতাংশ পয়েন্টে পরাজিত করেন।