গরমে বিদ্যুতের ঘাটতি সামাল দিতে এসির ব্যবহার কমানোর দিকে নজর উপদেষ্টার
Published: 5th, February 2025 GMT
এবার গরমের সময় দেশে ৭০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট পর্যন্ত লোডশেডিং হতে পারে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। গ্রীষ্ম মৌসুমে বিদ্যুতের এই ঘাটতি মেটাতে শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের (এসি) ব্যবহার কমানোর ওপর জোর দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর গণি রোডের বিদ্যুৎ ভবনে পবিত্র রমজান মাস ও গ্রীষ্ম মৌসুমে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ পরিস্থিতির সার্বিক বিষয়ে আন্তমন্ত্রণালয় সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির। তিনি বলেন, আসন্ন রমজানে আমদানি করা গ্যাসের ওপর নির্ভর করে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ–ব্যবস্থা করা হবে। এলএনজি থেকে এখন দিনে ৯০ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হয়। রমজানে তা ৩০ কোটি ঘনফুট বাড়িয়ে ১২০ কোটি ঘনফুট দেওয়া হবে। বাড়তি গ্যাস দিতে পেট্রোবাংলাকে বলা হয়েছে।
আসন্ন রমজানে ১৫ হাজার ৭০০ মেগাওয়াট ও গ্রীষ্মের সময় ১৮ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ লাগতে পারে বলে উল্লেখ করেন জ্বালানি উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘গরমের সময় লোডশেডিং সহনীয় রাখতে এসির ব্যবহার ১৬-১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় না রেখে ২৫ থেকে ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা করতে পারি। তাহলে ২ থেকে ৩ হাজার মেগাওয়াট ঘাটতি কমে যাবে। সেটা যদি করা সম্ভব হয়, তাহলে রোজার পাশাপাশি গরমেও লোডশেডিং সহনীয় রাখা যাবে।’
এসির ব্যবহার কমাতে টেলিভিশন, মসজিদের ইমামসহ বিভিন্ন মাধ্যমে সচেতনতা তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানান উপদেষ্টা ফাওজুল কবির। একই সঙ্গে অবৈধ গ্যাস ও বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।
বিদ্যুৎ উপদেষ্টা বলেন, ময়মনসিংহ এলাকায় লোডশেডিং বেশি হয়। সেখানে যাতে লোডশেডিং কম হয়, সে চেষ্টা থাকবে। গ্রামের চেয়ে রাজধানীতে বেশি লোডশেডিং হবে বলে জানান তিনি।
অন্তর্বর্তী সরকার বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে কি না এ প্রশ্নের জবাবে ফাওজুল কবির খান বলেন, বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর চাপ ছিল। তবে দাম বাড়ানোর কোনো চিন্তা নেই। ব্যয় সংকোচন করে পরিস্থিতি মোকাবিলা করা হবে। তা ছাড়া গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব রয়েছে। তবে বর্তমান সংযোগের বেলায় দাম অপরিবর্তিত থাকবে। অবশ্য যাঁরা নতুন গ্যাসের সংযোগ নিতে চান কিংবা অতিরিক্ত সংযোগের প্রয়োজন হয়, তাঁদের বাড়তি দাম দিতে হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবহ র উপদ ষ ট রমজ ন
এছাড়াও পড়ুন:
নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় থাকায় স্বস্তি
গত বছরের তুলনায় এবার পবিত্র রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে স্থিতিশীল আছে। এতে স্বস্তি প্রকাশ করছেন সাধারণ ক্রেতারা।
শুক্রবার (৭ মার্চ) রাজধানীর নিউ মার্কেট ও কারওয়ান বাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ বাজারগুলো ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পবিত্র রমজানের শুরুতে সয়াবিন তেলের যে সরবরাহ সংকট ছিল, তা এখন অনেকটাই কমেছে। তবে, চাহিদা বেশি ও উৎপাদনের মৌসুম না হওয়ায় বেড়েছে লেবুর দাম। এখন বাজারে এক হালি লেবু বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়।
গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে কিছুটা কমেছে সবজির দাম। এখন বাজারে প্রতি কেজি বেগুন মানভেদে ৬০ থেকে ৭০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, গাজর ৪০ টাকা, শিম ৫০ টাকা, মুলা ৩০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৬০ টাকা, টমেটো ২০ থেকে ২৫ থেকে টাকা, চিচিঙ্গা ৫০ টাকা, দেশি শসা ৪০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৭০ টাকা, প্রতি পিস লাউ ৫০ টাকা, জালি কুমড়া ৫০ টাকা, প্রতি পিস মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা এবং বড় সাইজের ফুলকপির জোড়া ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
আলু বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ২০ থেকে ২৫ টাকায়। পেঁয়াজের কেজি ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, রসুনের কেজি ২৩০ টাকা ও দেশি আদার কেজি ১২০ টাকা। প্রতি কেজি মসুর ডাল ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা এবং ছোলা ১০০ থেকে ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
নদীর মাছ বাদে গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে চাষের মাছের দাম কিছুটা কমেছে। এখন মাঝারি সাইজের চাষের রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায়। চাষের পাঙাসের কেজি ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০ টাকা, কৈ ২২০ টাকা, শিং ৫০০ টাকা, পাবদা ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, চিংড়ি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, দেশি পাঁচমিশালি ছোট মাছ ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৪০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকায়।
এখন প্রতি ডজন ফার্মের ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২১০ টাকায়। সোনালি জাতের মুরগি ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৮০ থেকে ৮০০ থেকে টাকায়। খাসির মাংসের দাম ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা প্রতি কেজি।
রাজধানীর সালেক গার্ডেন কাঁচাবাজারে কেনাকাটা করতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী কাইয়ুম মজুমদার রাইজিংবিডি ডটকম বলেছেন, গতবারের রমজানের তুলনায় এবার অধিকাংশ পণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে আছে। তবে, লেবুর দাম বেশি। রমজানে সবাই ইফতারে লেবুর শরবত খেতে চায়। কিন্তু, চাহিদামতো লেবুর সরবরাহ নেই। আশা করি, লেবুর দামও কমবে।
রাজধানীর নিউ মার্কেটর সবজি বিক্রেতা মো. মেহেদী হাসান এ প্রতিবেদককে বলেন, বাজারে গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে প্রায় সব সবজির দাম কমছে। ক্রেতারাও চাহিদা অনুযায়ী সবজি কিনতে পারছেন। লেবুর দাম সামান্য বেশি। এখন লেবুর মৌসুম না থাকায় সরবরাহ কম।
ঢাকা/রায়হান/রফিক