লালমনিরহাটের কালীগঞ্জের উত্তর বাংলা কলেজের ইংরেজি বিভাগের বহিষ্কৃত প্রভাষক শিরিন তাবাসসুম রায়হান মুসতাযীর তামান্নাকে আজ বুধবার ভোরে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পরে বিকেলে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়। 

পুলিশ ও ছাত্র-জনতার সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ তুলে আজ তামান্নাসহ সাতজনকে আসামি করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা সংগঠক রাতিলুল হাসান কালীগঞ্জ থানায় মামলা করেন। 

সরেজমিন ও মামলা সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার দুপুরের দিকে তামান্না লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়কের কালীগঞ্জ থানার মূল ফটকের সামনে ওই কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুর রউফ সরকার ও কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত আনোয়ার তুমপার অপসারণ দাবিতে অনশনে বসেন। এ সময় মহাসড়কের দুপাশে যানজটের সৃষ্টি হয়। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থী ও পুলিশ প্রশাসনের লোকজন তাকে মহাসড়ক ছেড়ে অনশন করতে বললে তিনি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। এছাড়া জেলা সদর থেকে মিটিং সেরে হাতীবান্ধা থানার ওসি মাহমুদুন্নবী কর্মস্থলে ফেরার সময় অনশনের যানজটে আটকা পড়েন। ওই পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গেও তামান্না অশোভন আচরণ করেন। এতে জনগণ বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠলে একপর্যায়ে তামান্না থানায় গিয়ে ওঠেন। এ সময় জনতা তাকে গ্রেপ্তারে দাবি তোলে এবং থানা ঘেরাও করে রাখে। পরে সেনাবাহিনীর একটি টিম রাত ৩টার দিকে থানায় এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। যৌথবাহিনীর বিশেষ পাহারায় ভোর রাতে তামান্নাকে জেলা সদরে আনা হয়।  

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক এইচ এম রাকিব হায়দার বলেন, শিক্ষার্থীদের মামলার ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনার তদন্ত চলমান। তিনি বলেন, অধ্যক্ষের অপসারণ দাবি করে গত বছরের ২৩ অক্টোবর তামান্না জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে অনশন করেন। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে এমন আশ্বাসে তখন তিনি অনশন ভেঙেছিলেন। তদন্ত প্রক্রিয়াসহ আনুষঙ্গিক কাজ চলমান রয়েছে।       

তবে তামান্না গণমাধ্যমকে জানিয়ে আসছেন, অধ্যক্ষের অনৈতিক আবদারে রাজি না হওয়ায় তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তিনি অন্যায়ের সঙ্গে আপোষ করেন না বলেই তার ওপর এমন অত্যাচার। তিনি আইনগতভাবেই সবকিছু মোকাবিলা করবেন।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

মাগুরায় শিশু ধর্ষণে জড়িতদের মৃত্যুদণ্ডসহ ৩ দাবিতে শিক্ষার্থীর অনশন

মাগুরায় শিশু ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের তিন দিনের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরসহ তিন দাবিতে চোখে ও হাতে কালো কাপড় বেঁধে আমরণ অনশনে বসেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী। আজ রোববার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা চত্বরে তিনি অনশন শুরু করেন।

ওই শিক্ষার্থীর নাম ফাতিন আলমাস। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। তাঁর বাকি দুই দফা দাবি হলো ধর্ষণের ঘটনায় একমাত্র শাস্তি হতে হবে মৃত্যুদণ্ড এবং বিচার বিভাগে পৃথক ট্রাইব্যুনাল বা ধর্ষণ নিরোধ কমিটি গঠন করতে হবে; এই বন্দোবস্তের আওতায় এক সপ্তাহের মধ্যে ধর্ষকদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

জানতে চাইলে ফাতিন আলমাস বলেন, ‘সরকার ধর্ষণের সব ঘটনা সম্পর্কে অবগত আছে। কিন্তু তারা উল্লেখযোগ্য কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। ফলে ধর্ষণের ঘটনা সমাজে নিত্য ঘটনা হয়ে গেছে। আমি এসব ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ যদি ১৮ কোটি মানুষের একটা পরিবার হয়, মাগুরার সেই শিশুটি সে পরিবারেরই একজন সদস্য। একটা পরিবারের কোনো সদস্য অসুস্থ হলে যেমন অন্য সদস্যের বসে থাকা সম্ভব নয়, একইভাবে ওই শিশুর বিষয়টি আমি চিন্তা করে প্রতিবাদ জানাতে এসেছি। এই ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিচার হওয়ার আগপর্যন্ত রাষ্ট্রযন্ত্রের বিরুদ্ধে আমার লড়াই চলবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মাগুরায় শিশু ধর্ষণে জড়িতদের মৃত্যুদণ্ডসহ ৩ দাবিতে শিক্ষার্থীর অনশন