কোটচাঁদপুরে অতিরিক্ত টাকা দাবি, তোপের মুখে সাব-রেজিস্ট্রার
Published: 5th, February 2025 GMT
ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে নিয়ম বহির্ভুতভাবে সাব-রেজিস্ট্রার অতিরিক্ত টাকা দাবি করায় ক্ষোভে দলিল লেখা বন্ধ করে দেন লেখকরা। এতে বে-কায়দায় পড়েন বিভিন্ন এলাকা থেকে জমি রেজিস্ট্রি করতে আসা মানুষ। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসের সমঝোতায় কাজ শুরু হয়।
কোটচাঁদপুর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে সপ্তাহে দুই দিন জমি রেজিস্ট্রি করা হয়। এ অফিসে জমি রেজিস্ট্রি করেন সাব-রেজিস্ট্রার তামিম আহম্মেদ চৌধুরী। বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে দলিল লেখকদের ডেকে নেন। এরপর জমি রেজিস্ট্রি নিয়ে নিয়মবহির্ভূত অতিরিক্ত টাকা চাইতে বলেন। এতে দলিল লেখকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এরপর দলিল লেখকেরা অফিস থেকে বের হয়ে যান এবং পরে দলিল লেখা বন্ধ করে দেন। এতে করে জমি রেজিস্ট্রি করতে আসা ভুক্তভোগীরা বে-কায়দায় পড়েন। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সমঝোতায় ৬ ঘণ্টা পর জমি রেজিস্ট্রি শুরু হয়।
ভুক্তভোগী হরিণদীয়া গ্রামের শফিকুল ইসলাম, রাঙ্গিযারপোতা গ্রামের আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘‘আমরা জমি রেজিস্ট্রি করতে এসেছিলাম। অফিস থেকে কাগজপত্র দেখে ওয়ারিশের জন্য ১০ হাজার টাকা আর প্রত্যয়নের জন্য ১০ হাজার টাকা দাবি করেন।’’ সাব-রেজিস্ট্রার হাতে করে টাকা নেন কি-না এমন প্রশ্নে তারা বলেন, ‘‘টাকা তো উনি হাতে করে নেন না। টাকা নেন অফিসের বড় বাবু আবদুল মালেক ও ওই অফিসের টোটন নামের আরেক জন।’’
দলিল লেখক সমিতির সভাপতি বদর উদ্দিন বলেন, ‘‘সকালে সাব-রেজিস্ট্রার আমাদের ডাকেন। কথা হয় জমি রেজিস্ট্রিতে অতিরিক্ত টাকার প্রসঙ্গে। তিনি আমাদের ওয়ারিশের জমির দলিলে টাকা বাড়িয়ে দিতে বলেন। এ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের অজুহাতে টাকা নিয়ে দিতে বলেন জমি রেজিস্ট্রি করতে আসা ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে।’’
আগে কত করে টাকা নেওয়া হতো— এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘আগে পাঁচ হাজার টাকা নেওয়া হতো। এখন আরো বাড়িয়ে দিতে বলছেন। যা আমোদের পক্ষে আদৌও সম্ভব না।’’ আর প্রত্যয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘প্রত্যয়নে টাকার কোনো ধরা-বাধা নিয়ম নেই।’’
সাব-রেজিস্ট্রার তামিম আহম্মেদ চৌধুরীর তাঁর বিরুদ্ধে তোলা সব অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘‘সকালে লেখকদের ডেকে ছিলাম জমি রেজিস্ট্রির বিষয় নিয়ে কথা বলতে। আমি উনাদের একটা কথা বলায় উনারা তাতে রাজি হননি। এরপর আমি লেখকদের চলে যেতে বললে উনারা বাইরে গিয়ে ক্ষোভ দেখান। পরে তারা দলিল লেখা বন্ধ করে দেন। এতে করেই বাধে বিপত্তি। পরে জমি রেজিস্ট্রি করতে আসা মানুষেরা ক্ষিপ্ত হয়ে যান।’’
কোট চাঁদপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) অপু কুমার বিশ্বাস বলেন, এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাজী আনিসুল ইসলাম বলেন, ‘‘ওই ঘটনার ভিকটিম সাব-রেজিস্টার। আপনারা উনার সঙ্গে কথা বলেন। এ ব্যাপারে আমার কোনো মন্তব্য নেই। আর কোনো মন্তব্য করতেও চাই না।’’ এরপর তিনি সাব-রেজিস্ট্রারকে সাংবাদিকদের ভালো করে খাইয়ে দিতে বলেন।
ঢাকা/সোহাগ/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর দল ল ল খ অফ স র
এছাড়াও পড়ুন:
‘ভালো নেই’ জানিয়ে দোয়া চাইলেন সাবেক আইজিপি শহীদুল হক
কারাগারে ‘ভালো নেই’ জানিয়ে সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন পুলিশের সাবেক আইজিপি শহীদুল হক।
বুধবার (৯ এপ্রিল) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত প্রাঙ্গণে তিনি একথা বলেন।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে সাজেদুর রহমান ওমর নামে এক ব্যক্তি নিহতের মামলায় শহীদুল হককে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করা হয়। আদালত তার উপস্থিতিতে গ্রেপ্তার দেখানোর বিষয়ে শুনানির জন্য রাখেন। আজ শুনানিকালে তাকে আদালতে হাজির করা হয়।
ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জি. এম. ফারহান ইশতিয়াকের আদালত শুনানি শেষে তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দেন।
এরপর তাকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। তখন শহীদুল হক বলেন, ‘ভালো নেই। দোয়া করবেন।’
মামলা সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত ২১ জুলাই দুপুর আড়াইটার দিকে যাত্রাবাড়ী থানাধীন ফুটওভার ব্রিজের নিচে ছাত্রজনতার সঙ্গে আন্দোলনে অংশ নেন সাজেদুর রহমান ওমর। বিকেলে আসামিদের আক্রমণে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৪ আগস্ট মারা যান। এ ঘটনায় গত ৩ জানুয়ারি যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা হয়।
গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বর উত্তরা ১৬ নম্বর সেক্টর থেকে গ্রেপ্তার করা হয় শহীদুল হককে। এরপর তাকে বিভিন্ন মামলায় রিমান্ডে নেওয়া হয়।
শহীদুল হক ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আইজিপি হিসেবে নিয়োগ পান। ২০১৮ সালের ৩১ জানুয়ারি অবসরে যান তিনি।
ঢাকা/মামুন/ইভা