কথাসাহিত্যিক হাবিব আনিসুর রহমান আর নেই
Published: 5th, February 2025 GMT
বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক হাবিব আনিসুর রহমান আর নেই। বুধবার বেলা ১২টা ১০ মিনিটে আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। সহধর্মিণী কথাসাহিত্যিক নাসিমা আনিস সমকালকে জানান, হাবিব আনিসুর রহমান কিডনি রোগ, উচ্চরক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও রক্তে সংক্রমণজনিত রোগে ভুগছিলেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭২ বছর।
সন্ধ্যায় মাগরিবের নামাজের পর রাজধানীর কাঁটাবন সেন্ট্রাল মসজিদ প্রাঙ্গণে তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সহধর্মিনী, ছেলে-মেয়েসহ তিনি অসংখ্য পাঠক, শিক্ষার্থী ও শুভানুধ্যায়ী রেখে গেছেন।
পরিবার জানায়, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ছেলে দেশে আসার পর নিজ গ্রাম মেহেরপুরের বল্লভপুরে হাবিব আনিসুর রহমানকে সমাধিস্থ করা হবে।
হাবিব আনিসুর রহমান ৬ জানুয়ারি ১৯৫৪ মেহেরপুরের বল্লভপুরে জন্মগ্রহণ করেন। সমসাময়িক বাংলা কথাসাহিত্যে তিনি ব্যক্তির ইতিহাসভিত্তিক স্বতন্ত্র ধারা যোগ করতে সক্ষম হয়েছেন বলে মনে করা হয়।
নাসিমা আনিস জানান, হাবিব আনিসুর রহমান জীবনের সরল উপস্থাপনে বিশ্বাস করতেন। কলমে তুলে আনতে চেয়েছেন তাঁর শৈশব, যৌবন, নিজ শহর ও গ্রামের মানুষের অব্যক্ত গল্পগুলো। ষোলটি গ্রন্থের লেখক হাবিব আনিসুর রহমানের উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলো: গল্পগ্রন্থ- গুলেনবারি সিনড্রোম ও অন্যান্য গল্প, অষ্টনাগ ষোলচিতি, পোড়ামাটির জিলাপি ও অন্যান্য গল্প; উপন্যাস- পক্ষি ও সারমেয় সমাচার, পুষ্পরাজ সাহা লেন, আমাদের নতিপোতা গ্রামের ইতিহাস, নেফারতিতি, রৌদ্র ও ত্রাতাগণ। এছাড়া, বন্দিভূতের ফন্দি, ছোটকু মোটকু তাঁর কিশোর গল্পগ্রন্থ।
যৌবনে দূরারোগ্য গুলেনবারি সিনড্রোমে আক্রান্ত হয়েছিলেন, এতে তাঁর স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরবর্তীতে সুস্থ হলেও রোগের প্রভাব থেকে কখনও পুরোপুরি মুক্ত হতে পারেননি। তিনি পায়ের পাতার একাধিক আঙুল জীবনের শেষাবধি নাড়াতে পারতেন না। ২০১০ সাল থেকে কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘকাল ডায়লাইসিসের মাধ্যমে সুস্থ থাকার লড়াই করেছেন। এরই মাঝে নিরলস চালিয়ে গেছেন সাহিত্যচর্চা। কথাসাহিত্যে অবদানের জন্য মৃত্যুর মাত্র চারদিন আগে ৩১ জানুয়ারি ২০২৫ সোনার বাংলা সাহিত্য পরিষদের পক্ষ থেকে এসবিএসপি সাহিত্য পুরস্কার ও সম্মাননা ২০২৪এ ভূষিত হন। তাঁর অন্যান্য পুরস্কারগুলোর মধ্যে রয়েছে জীবননগর সাহিত্য পরিষদ সম্মাননা (২০১১), কাঙাল হরিনাথ মজুমদার পদক (২০১৫)।
হাবিব আনিসুর রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাস বিষয়ে স্নাতকোত্তর অর্জনের পর বিষয়ভিত্তিক গবেষণায় অংশ নেন এবং ১৯৭৯ সালে পাবলিক সার্ভিস কমিশন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে শিক্ষকতায় যোগদানের পর দীর্ঘ দশ বছর চট্টগ্রাম কলেজে ইতিহাসের প্রভাষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ ও যশোর সরকারি এম এম কলেজে শিক্ষকতা করেন ও ২০০৫ সালে অধ্যাপক পদে উন্নীত হন। পরে স্বেচ্ছাবসর গ্রহণ করে লেখায় মনোনিবেশ করেন।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
‘মানবিক করিডর’ প্রদানের বিষয়ে সতর্কতা প্রয়োজন: জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল
জাতিসংঘ প্রস্তাবিত বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে রাখাইনে সহায়তার জন্য ‘মানবিক করিডর’ প্রদানের বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে সতর্কতা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল।
আজ মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সভাপতি বদরুদ্দীন উমর ও সম্পাদক ফয়জুল হাকিম এ আহ্বান জানান।
বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, ভারতসহ সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্রগুলোর ভূরাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের সংঘাত এড়িয়ে যেতে হলে মানবিক করিডর প্রদানের বিষয়ে সতর্কতা প্রয়োজন।
বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অন্তর্বর্তী সরকারের কর্তব্য উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, এমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত গ্রহণ করতে হবে।
জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা প্রদানের প্রস্তাব কোন শর্তে অন্তর্বর্তী সরকার বিবেচনা করেছে, প্রশ্ন তুলে বিবৃতিতে বলা হয়, এ শর্ত সম্পর্কে জনগণকে জানাতে হবে। জনগণকে অবহিত না করে জাতীয় নিরাপত্তা প্রশ্নে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না।
বিবৃতিতে জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল জানায়, রাখাইনে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের আগে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের দৃঢ় অঙ্গীকার আদায়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।