বিপিএল থেকে তাহলে চোখ সরে গেছে নাজমুলের
Published: 5th, February 2025 GMT
মাথায় তাঁর ফরচুন বরিশালের হেলমেট, গায়ে আবার জাতীয় দলের অনুশীলন জার্সি। তিনি বাংলাদেশ জাতীয় দলের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন। সব কি একটু গোলেমেলে লাগছে? লাগাটা স্বাভাবিকই।
বিপিএল এখনো শেষ হয়নি। নাজমুলের দল পৌঁছে গেছে ফাইনালে, শুক্রবার শিরোপার লড়াই তাদের। কিন্তু এই টুর্নামেন্ট থেকে নাজমুলের চোখটা যে সরে গেছে, তা অনেকটা স্পষ্ট হয়ে গেছে আজ। দুপুর সাড়ে ১২টায় ছিল ফরচুন বরিশালের ঐচ্ছিক অনুশীলন।
কিন্তু এদিন সকাল সাড়ে ১০টা থেকেই শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ইনডোরের মাঠে অনুশীলন শুরু করেন নাজমুল। সেখানে ছিলেন জাতীয় দলের সিনিয়র সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিনও। দুপুর পর্যন্ত চলেছে ওই অনুশীলন।
১৯ ফেব্রুয়ারি শুরু হচ্ছে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি, এই টুর্নামেন্টেও বাংলাদেশের অধিনায়ক নাজমুল। তিনি যে সেটারই প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, তা বোঝা কঠিন কিছু নয়।
কিন্তু সেটি বিপিএল শেষ হওয়ার আগেই? নাজমুলের জন্য এবারের বিপিএল অলিখিতভাবে শেষ হয়ে গেছে বেশ আগেই। ফরচুন বরিশালে নাম লেখানো এই ব্যাটসম্যান এবার খেলেছেন মাত্র ৫ ম্যাচ, মোট রান করেছেন ৫৬। ফর্মের এমনই পড়তি ছিল যে তাঁকে উইকেটরক্ষকের ভূমিকাও পালন করতে হয়েছে একাদশে থাকতে।
ফরচুন বরিশালের সর্বশেষ ৭ ম্যাচে একাদশে জায়গা হয়নি নাজমুল হোসেনের.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব প এল
এছাড়াও পড়ুন:
সিদ্ধিরগঞ্জে যুবলীগ ক্যাডার মোটা কবিরের গ্রেপ্তার দাবি বিএনপির
আওয়ামী লীগের শাসনামলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি মজিবুর রহমানের সেকেন্ড ইন কমান্ড ছিলো যুবলীগ ক্যাডার মোটা কবির। দীর্ঘ ৫ বছর তার বাড়িতে ভাড়া ছিল সে। ফলে সিরাজ হত্যা মামলাসহ বেশ কয়েকটি মামলার আসামি হওয়ার পরও পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করতে মজিবুর রহমানের বাড়িতে যায়নি।
এমনকি নানা অপকর্ম করেও বারবার সে পার পেয়ে যায় মজিবুর রহমানের কারণে। মজিবুর রহমানকে ব্যবহার করে অবৈধ উপায়ে প্রচুর অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে মোটা কবির। কেপিআই এলাকা হওয়ার পরও আদমজী ইপিজেডের ভেতরে তার আস্তায় সে মাদকের আসর বসাতো। কেউ প্রতিবাদ করলে ইপিজেডের বাইরে গেলে ক্ষতি করার হুমকি দিতো কবির।
ইপিজেডের ভেতর মদের বার ছিল। সেই বার থেকে মাদক এনে বাইরে চড়া দামে বিক্রি করতো সে। তার গাড়িতে সব সময় বিদেশী মদের দুই-চারটা বোতল থাকতো। ইপিজেডের কাস্টম গেট বা নিরাপত্তা গেইটে তার গাড়ি চেক করতে চাইলে নানাভাবে হুমকি ধামকি দিতো। মোটকথা গত ১৬-১৭ বছর ইপিজেডের ভেতর রামরাজত্ব কায়েম করে মোটা কবির ও তার বাহিনী।
এদিকে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের অভিযোগ, আওয়ামীলীগের সভাপতি মজিবুর রহমানের বাড়িতে থেকে ওই বাড়ির নিচ তলায় ছোট একটি রুমে বসে কম্পিউটারে মামলার এজাহার লেখার সময় বিভিন্ন সময় কবির বিএনপির নেতাকর্মীদের নাম ঢুকিয়ে দিতো মামলায়।
কবিরের দায়িত্ব ছিল ওই সময় সরকার বিরোধী আন্দোলনে বিএনপির যে সকল নেতাকর্মী ফ্রন্ট লাইনে থাকতো সেই সকল নেতাকর্মীদের ছবি ও নাম কালেক্ট করতো।
মোটা কবির তার লোকজন দিয়ে এই ছবি ও নাম কালেক করাতো। পরে তাদের মামলায় ঢুকিয়ে দিতো। এছাড়া আদমজী ইপিজেডের ব্যবসা দখল করতেও অনেক নিরিহ মানুষকে মামলায় ঢুকিয়ে দিয়েছে কবির। তবে নানা অপকর্মের কারণে যুবলীগ ক্যাডার হওয়ার পরও মামলা থেকে রক্ষা পায়নি মোটা কবির ওরফে লোহা চোর কবির।
বর্তমানে তার বিরুদ্ধে একাধিক হত্যাসহ এক ডজন মামলা রয়েছে। ৫ আগস্টের পর আত্মগোপন করে কবির। সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে পালিয়ে যাওয়া আওয়ামীলীগ নেতাদের সাথে যোগাযোগ রয়েছে তার। তাকে দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে বলে জানিয়েছে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা।
আবার কৌশলে বিএনপির কতিপয় লোককে টাকা দিয়ে বিএনপিতে ঢুকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বিএনপি একাধিক নেতাকর্মী জানান, সব সরকারের আমলে সুযোগ নিয়েছে মোটা কবির। কিন্তু এবার আর সেই সুযোগ তাকে দেয়া হবে না। বাসায় ঢুকে নেতাদের পা ধরে বসে থাকে সুবিধার জন্য। এটা তার অন্যতম কৌশল।
বিভিন্ন বাজার থেকে কমদামে ফরমালিনযুক্ত মাছ কিনে নিয়ে বলে ‘স্যার’ আপনার জন্য মেঘনা নদী, কখনো বলে মাওয়া ঘাট, কখনো বলে ভৈরব থেকে এই মাছ কিনে এনেছি। ইপিজেডের ব্যবসায়ি হাতিয়ে নিতে নানা ছলছাতুরী ছিল তার। আর নেতাদের ম্যানেজ করতো অবৈধ টাকার ভাগ ও বিদেশী মদ দিয়ে। কবির পালিয়ে যাওয়ার পর ইপিজেডের ভেতর থেকে ভয়ঙ্কর তথ্য প্রকাশ পাচ্ছে।
আর সেটা হলো গ্রাম থেকে কাজের সন্ধানে আসা গরীব অসহায় সুন্দরী মেয়েদের কাজ দেয়ার কথা বলে ইপিজেডের ভেতর বিভিন্ন ফ্যাক্টরীতে বিদেশী কর্মকর্তাদের মনোরঞ্জনের জন্য পাঠাতো কবির। নারী সাপ্লাইয়ের বিনিময়ে অবৈধ সুবিধা নিতো মোটা কবির।
তার অপকর্মের নানা তথ্য এখন আদমজী ইপিজেডের ভেতর, মিজমিজি, সিআইখোলা, সিদ্ধিরগঞ্জপুল এলাকার মানুষের মুখে মুখে। কবিরের মালিকানাধীন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ‘এ কে এন্টারপ্রাইজ’ এর বিষয়ে খোঁজ খবর নিলে তার আয়ের তথ্য বেরিয়ে আসবে। তবে সে তার অবৈধ অর্থ-সম্পদ রক্ষায় নানাভাবে দৌড়ঝাপ করছে।
আর সুযোগ খুঁজতেছে ৫ আগস্টের পর হত্যা মামলাগুলোর জামিন করাতে। আত্মগোপনে থাকা কবিরকে আইনের আওতায় আনার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন বিএনপি তথা তার দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ লোকজন।