বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ এনে মামলা করেছেন এক ছাত্রী। এ ঘটনায় ওই ছাত্রকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী বাদী হয়ে বরিশাল মহানগর পুলিশের বন্দর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। মামলার পরেই ওই ছাত্রকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম আজ বুধবার দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। বিষয়টির তদন্ত চলছে। আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থীর অভিযোগ, অভিযুক্ত ছাত্র দীর্ঘদিন ধরে তাঁকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ভুক্তভোগী তাঁর এক সহপাঠীর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন-১ এর ষষ্ঠতলায় পড়াশোনা নিয়ে আলাপ করছিলেন। ওই সময় ওই ছাত্র তাঁকে ফোন করে সিঁড়ির কাছে আসতে বলেন। সেখানে পৌঁছালে তিনি জোরপূর্বক তাঁকে টেনেহিঁচড়ে সিঁড়ির ওপরের ছাদে নিয়ে যান। এরপর বেঞ্চের ওপর বসিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা করেন। ভুক্তভোগী প্রতিরোধ করলে ওই ছাত্র তাঁকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন, এতে তাঁর বাঁ হাতে সামান্য আঘাত লাগে। ঘটনার পর তিনি (ভুক্তভোগী ছাত্রী) চিৎকার দিলে সহপাঠীরা ছুটে আসেন। পরে তাঁর বিভাগীয় চেয়ারম্যান ও ছাত্র উপদেষ্টার মাধ্যমে প্রক্টরিয়াল বডির কাছে বিষয়টি লিখিত অভিযোগ দেন।

শিক্ষার্থীদের সূত্র জানায়, ঘটনার পর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন উভয় পক্ষের সঙ্গে কয়েক দফা আলোচনা করে। এ সময় দুই বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পরে প্রক্টর, দুই বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা বন্দর থানায় গিয়ে মামলা করেন।

অভিযুক্ত ছাত্র অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ওই ছাত্রীর সঙ্গে তাঁর চার-পাঁচ মাস ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এর সূত্র ধরে মঙ্গলবার বিকেলে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে যার। এ সময় সম্পর্ক নিয়ে সন্দেহের জেরে তাঁদের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। এর জেরেই তাঁর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আনা হয়েছে।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ টি এম রফিকুল ইসলাম বুধবার বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঘটনার বিষয়ে অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা দ্রুত পদক্ষেপ নিই। দুজন নারী সহকারী প্রক্টরকে ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা বলার জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তাঁদের মাধ্যমে আমরা ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে আশ্বস্ত করি যে তদন্ত কমিটির মাধ্যমে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে একাডেমিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই সঙ্গে ভুক্তভোগী এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নিতে চাইলে সে ক্ষেত্রেও আমরা তাঁকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেব। সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ফরিদপুরে পুলিশের ওপর হামলা করে আসামি ছিনতাই, গ্রেপ্তার ৩

ফরিদপুরের সালথায় পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে আসামিকে ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত শনিবার বিকেলে উপজেলার সোনারপুর ইউনিয়নের ফুকরা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে গতকাল রোববার দুপুরে তাঁদের আদালতে পাঠানো হয়।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন সালথা উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের ফুকরা গ্রামের আওয়াল শিকদার (৬০), ফরিদ শিকদার (৩৩) ও সাকিব মাতুব্বার (২৩)।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানান, ফুকরা গ্রামে অভিযান চালিয়ে পরোয়ানাভুক্ত আসামি বাবুল শিকদারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ সময় তাঁর স্বজনেরা পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে বাবুলকে ছিনিয়ে নেন। বাবুল দ্রুত বিচার আইনের এক মামলায় পরোয়ানাভুক্ত আসামি।

এ বিষয়ে গতকাল রাতে সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান জানান, গত শনিবার বিকেলে ফুকরা গ্রামে গিয়ে পরোয়ানাভুক্ত আসামি বাবুলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ সময় পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে তাঁকে ছিনিয়ে নেন পরিবারের সদস্যেরা। হামলায় একজন এসআই, একজন এএসআইসহ চার পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

ওসি আতাউর রহমান বলেন, আসামি ছিনতাই ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। পরে অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ