জাভেদের মামলায় কঙ্গনাকে শেষ সুযোগ দিলেন আদালত
Published: 5th, February 2025 GMT
অভিনেত্রী-বিজেপি সাংসদ কঙ্গনা রনৌত ও ভারতের প্রখ্যাত গীতিকার জাভেদ আখতারের মধ্যে আইনি লড়াই দীর্ঘদিনের। সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর পর এক সাক্ষাৎকারে কঙ্গনার বেশ কিছু মন্তব্যে রীতিমতো ক্ষুব্ধ জাভেদ আখতার। অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়েরও করেন তিনি।
মঙ্গলবার জাভেদ আখতারের করা সেই মানহানির মামলায় কঙ্গনার বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করার আগে আদালত তাঁকে শেষ সুযোগ দিয়েছে।
ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের ১৪ জুন নিজ বাড়ি থেকে তরুণ অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তিনি আত্মহত্যা করেছেন নাকি খুন হয়েছেন-সেই মীমাংসা আজও হয়নি। সেসময় তার মৃত্যু নিয়ে সোশাল মিডিয়ায় বিস্তর আলোচনা-সমালোচনা হয়। তবে সবাইকে ছাপিয়ে যায় কঙ্গনার বক্তব্য। সুশান্ত সিং রাজপুত বলিউডের স্বজনপোষণ বা নেপোটিজম’র শিকার- এজন্য জাভেদ আখতারকে দায়ী করেন কঙ্গনা। বিষয়টি অসম্মানজনক উল্লেখ করে কঙ্গনার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেন জাভেদ আখতার।
মুম্বাই আদালতে সেই মামলায় একে একে ৪০ দিন মামলার শুনানিতে যাননি কঙ্গনা। মঙ্গলবারও শুনানির দিন ধার্য ছিল। কিন্তু এদিনও আদালতে উপস্থিত হাননি তিনি।
কঙ্গনার আইনজীবী রিজওয়ান সিদ্দিকি আদালতে জানান, সংসদীয় কাজে ব্যস্ত অভিনেত্রী। আদালতে হাজির হওয়া সম্ভব নয়। তা শুনে জাভেদ আখতারের আইনজীবী জয় কে ভরদ্বাজ পাল্টা আপিল করেন, আদালতের গুরুত্বপূর্ণ ৪০ দিন নষ্ট করেছেন সাংসদ-অভিনেত্রী। তাই তাঁর বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হোক।
পরে বিচারক জানিয়ে দেন, কঙ্গনা রনৌতের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার আগে শেষ সুযোগ দেওয়া হচ্ছে তাঁকে। অন্যথায় গ্রেপ্তারি এড়ানো কঠিন হবে তাঁর।
যদিও মামলা ও আদালতের রায় নিয়ে এখনও প্রতিক্রিয়া জানাননি অভিনেত্রী ও বিজেপি সাংসদ কঙ্গনা রনৌত। সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন ও এই সময়।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ ভ দ আখত র জ ভ দ আখত র
এছাড়াও পড়ুন:
শেখ হাসিনার আমলেই চাকরি থেকে বঞ্চিত হয়েছি: আদালতকে তুরিন
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ আদালতে বলেছেন, ‘‘বলা হচ্ছে, আমি ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে সাপোর্ট করেছি। অথচ তার আমলেই চাকরি থেকে বঞ্চিত হয়েছি। ৬ বছর ধরে বঞ্চিত। বুঝলাম না, আমি কোন পক্ষের লোক।’’
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসাইনের আদালতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আব্দুল জব্বার নামে এক শিক্ষার্থীকে হত্যাচেষ্টা মামলায় রিমান্ড শুনানিতে এসব দাবি করেন তুরিন আফরোজ।
এর আগে, সোমবার রাতে উত্তরার একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে তুরিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। মঙ্গলবার তাকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উত্তরা পশ্চিম থানার সাব-ইন্সপেক্টর সুমন মিয়া।
বেলা ১টার দিকে তুরিন আফরোজকে আদালতে হাজির করা হয়েছে। তাকে ঢাকার সিএমএম আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। শুনানিকালে তাকে এজলাসে তোলা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। তুরিন আফরোজের পক্ষে শুনানি করতে কয়েকজন আইনজীবী আদালতে উপস্থিত হন। তবে তুরিন আফরোজ জানান, তার আইনজীবী আছে। তখন বিচারক জানতে চান, কে আপনার আইনজীবী। তুরিন আফরোজ বলেন, ‘‘সাইফুল করিম।’’ তবে তাকে খুঁজে পাননি তুরিন আফরোজ।
তখন তুরিন আফরোজ বলেন, ‘‘মাননীয় আদালত, আমি আপনার অনুমতি নিয়ে কথা বলতে চাই।’’ আদালত তাকে অনুমতি দেন। তখন বিচারককে উদ্দেশ করে তুরিন আফরোজ বলেন, ‘‘আমি দুই, তিন, পাঁচ মিনিট, কতটুকু সময়ে শেষ করব বললে ভালো হয়।’’ আদালত বলেন, ‘‘বলেন আপনি।’’
তখন তুরিন আফরোজ বলেন, ‘‘গত ৪ তারিখে আমার বিরুদ্ধে নীলফামারীতে মামলা। পরদিন ৫ আগস্ট ঢাকায় মামলা।’’
তখন আদালত বলেন, ‘‘ঢাকায় মামলা হয়েছে ২৭ মার্চ। ঘটনা ৫ আগস্টের। নীলফামারীর তথ্য এখানে নেই।’’ তুরিন আফরোজ বলেন, ‘‘আচ্ছা, যাই হোক।’’
তিনি বলেন, ‘‘আমার লার্নেড ফ্রেন্ড (রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী) সাংঘর্ষিক কথা বলেছেন। নীলফামারীতে ৪ আগস্ট এবং ঢাকায় ৫ আগস্টের ঘটনায় মামলা। মামলাগুলো ফেব্রিকেটেড। ৫ আগস্টের আগে পুরো সময় কোথায় ছিলাম সব ডকুমেন্ট দিতে পারব। এ সময় আমার টিউমারের অপারেশন হয়।’’
তুরিন আফরোজ বলেন, ‘‘গত চার বছর আমি মিডিয়াতে কিছু বলিনি, লিখিনি। বলা হচ্ছে, ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে সাপোর্ট করেছি। ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে সাপোর্ট করলাম। আবার তার আমলেই চাকরি থেকে বঞ্চিত হয়েছি। ৬ বছর ধরে চাকরি থেকে বঞ্চিত। বুঝলাম না আমি কোন পক্ষের লোক।’’
তিনি বলেন, ‘‘আমি আইনের প্রতি আস্থাশীল। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে না। তদন্ত কর্মকর্তা ১০ দিনের রিমান্ড চেয়েছেন। আপনি ২০ দিন দিলেও দিয়ে দেন। কারণ আমি জানি, আমি কোনো অন্যায় করিনি। আমি ন্যায়বিচার পাব।’’
পরে আদালত তার চার দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।
জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শেষ দিন ৫ আগস্ট দুপুর ১২টার দিকে আবদুল জব্বার উত্তরা পশ্চিম থানাধীন ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ওপর বিএনএস সেন্টারের সামনে গুলিবিদ্ধ হন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন তিনি। গত ২৭ মার্চ উত্তরা পশ্চিম থানায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৫০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ১০০/১৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা মামলাটি দায়ের করেন। এজাহারনামীয় ৩০ নং আসামি তুরিন আফরোজ।
ঢাকা/মামুন/এনএইচ