গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ বলেছেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমরা নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। সেই বাংলাদেশে আমরা এখনো দেখছি, যারা হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল, যারা আমাদের ভাইরের ওপরে গুলি চালিয়েছিল তারা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বলতে চাই, আপনাদের ছয় মাস হয়ে গেছে, আপনাদের ‘হানিমুন পিরিয়ড’ শেষ হয়েছে।” 

তিনি বলেন, “আপনারা (অন্তর্বর্তীকালীন সরকর) জুলাই গণঅভ্যুত্থানে হামলায় জড়িত আসামিদের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেননি। অর্থের বিনিময়ে বিএনপি ও প্রশাসনের কেউ কেউ আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করছে। আমরা স্পষ্ট বলছি, গণহত্যায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।”

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে কিশোরগঞ্জে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গণহত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ এবং জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খানের কাছে স্মারকলিপি প্রদান শেষে এসব কথা বলেন তিনি। 

আবু হানিফ বলেন, “যারা পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবিকে ব্যবহার করে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ছাত্ররা-জনতার ওপর হামলা চালিয়েছিল, সেসব গণহত্যাকারীদের বিচার না করতে পারলে শহীদদের রক্তের সাথে বেইমানি করা হবে। আপনাদেরকে বলছি, অনতিবিলম্বে গণহত্যার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনুন।” 

তিনি আরো বলেন, “শেখ হাসিনার দোসররা এখনো সক্রিয়, প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।”

গণঅধিকার পরিষদের কিশোরগঞ্জ জেলার সভাপতি মোহাম্মদ নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম-আহ্বায়ক শফিকুল ইসলামের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- কিশোরগঞ্জ জেলা গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব আকন্দ মোহাম্মদ উজ্জ্বল, যুগ্ম আহ্বায়ক অভি চৌধুরী, কটিয়াদি উপজেলা গণঅধিকার পরিষদের নেতা মহসিন, যুব অধিকার পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সুমন তালুকদার, জেলা সভাপতি সোহাগ মিয়া, জেলা ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতা পায়েল চৌধুরী।

ঢাকা/রুমন/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গণহত য

এছাড়াও পড়ুন:

ট্রুথ অ্যান্ড হিলিং কমিশন গঠনের আহ্বান বিশিষ্টজনদের

জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে খুনী ও তাদের দোসরদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত এবং ভিক্টিমদের মানসিক ক্ষত থেকে সারিয়ে তুলতে ট্রুথ অ্যান্ড হিলিং কমিশন (টিএইচসি) গঠনের আহ্বান জানিয়েছে বিশিষ্টজনরা।

ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ল এন্ড ডিপ্লোম্যাসি (আইআইএলডি) এবং বাংলাদেশ ২.০ ইনিশিয়েটিভ যৌথভাবে ‘ট্রুথ অ্যান্ড হিলিং কমিশন (টিএইচসি) বিরোধ-পরবর্তী বাংলাদেশ: একটি ভিকটিম-কেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি’ শীর্ষক একটি গোলটেবিল বৈঠকে তারা এই আহ্বান করেন।

রবিবার (৯ মার্চ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদে অবস্থিত ড. আব্দুল্লাহ ফারুক কনফারেন্স হলে এ গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আরো পড়ুন:

ধর্ষণের বিরুদ্ধে ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে প্রতিবাদী কণ্ঠ

ধর্ষক ও নারী নিপীড়কদের শাস্তির দাবিতে ঢাবিতে লাঠি মিছিল

সুপ্রীম কোর্টের অ্যাডভোকেট ব্যারিস্টার তাজরিয়ান আকরামের সঞ্চালনায় গোলটেবিল বৈঠকে অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক তাতসুসি আরা, ফটোগ্রাফার ও অ্যাক্টিভিস্ট শহিদুল আলম, জাতিসংঘ রেসিডেন্ট কো-অর্ডিনেটর বাংলাদেশ অফিসের সিনিয়র মানবাধিকার উপদেষ্টা হুমা খান, বিএনপি নেতা হুম্মাম কাদের চৌধুরী প্রমুখ।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কেন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক তাতসুসি আরা। তিনি সুদীর্ঘ সময় নেপাল, ভারত এবং পাকিস্তানে কাজ করেছেন। তিনি ট্রুথ এবং হিলিং সংক্রান্ত ধারণাগুলোর ব্যাখ্যা প্রদান করেন এবং এ কমিশনের জন্য অভিজ্ঞতালব্ধ পরামর্শ প্রদান করেন।

এক্টিভিস্ট শহিদুল আলম বলেন, “ভিক্টিমরা ন্যায়বিচার চায়। যার জন্য প্রয়োজন জাতীয় ডায়ালগ এবং এদের গল্পগুলো তুলে আনার জন্য প্রয়োজন নির্দিষ্ট ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করা।”

জাতিসংঘ রেসিডেন্ট কো-অর্ডিনেটর বাংলাদেশ অফিসের সিনিয়র মানবাধিকার উপদেষ্টা হুমা খান জুলাই অভ্যুত্থানে সরকারের একটা অংশেরই কেবল পরিবর্তন হয়েছে উল্লেখ করে বলেন, “পুলিশ, বিচার বিভাগসহ অধিকাংশ জায়গায় পূর্ববর্তী লোকদের উপস্থিতিতে কিভাবে ভিক্টিমদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। এই অঞ্চলের নির্যাতনের ইতিহাস কেবল ১৬ বছরের নয়, বরং দক্ষিণ এশিয়ার সুদীর্ঘ সময়ের এমন নিভৃত অনেক রাজনৈতিক, ঐতিহাসিক নির্যাতন রয়েছে।”

এ গোলটেবিল আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বিশিষ্ট নেতা, অ্যাক্টিভিস্ট আলী আহসান জুনায়েদ। তিনি জুলাই আন্দোলনে যাত্রাবাড়ীতে তার লোমহর্ষক অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন।

এছাড়া বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ প্রফেশনালসের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আতাউর রহমান তালুকদার, ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইম ট্রাইব্যুনালের সিনিয়র গবেষক খন্দকার রাকীব, সাংবাদিক সাকিব সরকার, নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক ওমর নাসিফ আব্দুল্লাহ ও জাহিদুল ইসলাম মিয়াজি, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক খন্দকার রাকিব, ওমর নাফিস আব্দুল্লাহ, জাহিদুল ইসলাম মিয়াজী, বিইউপির শিক্ষক আতাউর রহমান অপূর্ব প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ট্রুথ অ্যান্ড হিলিং কমিশন (টিএইচসি) এর উপর আইআইএলডি এর নির্বাহী পরিচালক শফিউল আলম শাহীনের প্রস্তাবনায় একটি ওয়ার্কিং কমিটি গঠিত হয়। কমিটির সদস্যগণ হলেন মুহাম্মদ আসাদুল্লাহ, হুমা খান, সাইফুদ্দিন আহমেদ, আতাউর রহমান তালুকদার, আলী আহসান জুনায়েদ, সাকীব সরকার, হারুন ওর রশীদ, তাজরিয়ান আকরাম, নওশিন শর্মিলা রিতু, শফিউল আলম শাহীন এবং রাজীব মন্ডল।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গণঅভ্যুত্থানের পরে সমাজে কোনো পরিবর্তন আসেনি
  • ট্রুথ অ্যান্ড হিলিং কমিশন গঠনের আহ্বান বিশিষ্টজনদের
  • ভাসানী বললেন ‘লা-কুম দ্বীনুকুম অলইয়াদ্বীন’
  • নতুন রাজনৈতিক দলের কাছে তরুণদের প্রত্যাশা
  • আশা করি আমরা এই নির্বাচনে জিতব: এএফপিকে নাহিদ
  • ‘চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে নারীর বীরত্ব অসামান্য’
  • ‌‘জুলাই কমিউনিটি এলায়েন্স মিরপুর’র আত্মপ্রকাশ
  • জুলাই কমিউনিটি অ্যালায়েন্স মিরপুর’র আত্মপ্রকাশ
  • গণঅভ্যুত্থানে আহত আরো ১২৪২ জনের তালিকা প্রকাশ