মিডিয়ায় শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচার নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হুঁশিয়ারি
Published: 5th, February 2025 GMT
‘শেখ হাসিনার কোনো বক্তব্য যদি মিডিয়াতে প্রচার করা হয়, সেটার পরিণতি সেই মিডিয়াকেই নিতে হবে।’ বুধবার বিকেলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ভেরিফায়েড পেজে এ কথা বলা হয়েছে। এতে লেখা হয়েছে, ‘খুনি, গণহত্যাকারী, ফ্যাসিস্ট হাসিনার কোনো বক্তব্য যদি মিডিয়াতে প্রচার করা হয়, সেটার পরিণতি সেই মিডিয়াকেই নিতে হবে।’
একই কথা বলেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহও। ‘৫ আগস্টের পর শেখ হাসিনা ও ছাত্রলীগ চ্যাপ্টার ক্লোজড’ এই মন্তব্য করে তিনি বলেছেন, ‘শেখ হাসিনা ও ছাত্রলীগ প্রসঙ্গ এ দেশে আর নেই। তাঁর কোনো ভাষণ যদি এখন কোনো গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়, তাহলে সে গণমাধ্যম শেখ হাসিনাকে সহযোগিতা করছে বলে ধরে নিতে হবে। সুশীলতাকে ছুড়ে ফেলে দেওয়া হয়েছে বলেই গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। হাসিনার প্রশ্নে কোনো সুশীলতা নয়।’
বুধবার রাজধানীর বাংলামোটরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘আপনার চোখে নতুন বাংলাদেশ’ শিরোনামে এক জনমত কর্মসূচি চালু প্রসঙ্গে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
গণমাধ্যমের উদ্দেশে হাসনাত বলেন, ‘মিডিয়ায় এখনও দেখি ভাশুরের নাম মুখে নিতে কেমন যেন লাগে। এখনো সাবেক প্রধানমন্ত্রী লেখা হয়। উনি কি সাবেক, নাকি ফ্যাসিবাদের “বুচার অব দিস মাদারল্যান্ড”? তিনি এই বাংলাদেশের বুচার (কসাই)। তিনি চেয়ার টিকিয়ে রাখতে দুই হাজার মানুষকে হত্যা করেছেন। কেন মিডিয়াতে ফ্যাসিবাদী খুনি হাসিনা লেখা হয় না? ফ্যাসিবাদী খুনি হাসিনা যদি না লেখেন বা না বলেন, আপনারা আওয়ামী কাঠামো বা মিডিয়া রয়েছে, সেটির সিলসিলা অব্যাহত রাখছেন।’
তিনি বলেন, ৫ আগস্টের পর ফ্যাসিবাদবিরোধী যে দলগুলো আছে, তাদের সঙ্গে আমাদের মতের পার্থক্য হবে, রাজনৈতিক মতপার্থক্য হবে, বিভাজন থাকবে। কিন্তু এক জায়গায় স্পষ্ট, হাসিনা ও ফ্যাসিবাদের পুনর্বাসন কোনোভাবে এ দেশে হতে দেওয়া হবে না।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরউদ্দীন পাটওয়ারী, সদস্যসচিব আখতার হোসেন, মুখপাত্র সামান্তা শারমিন প্রমুখ।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ট র পর
এছাড়াও পড়ুন:
জবির লংমার্চে পুলিশের বাধা, স্মারকলিপি দেবে প্রতিনিধিদল
গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান গণহত্যার প্রতিবাদে ও ফিলিস্তিনের সমর্থনে আয়োজিত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ‘মার্চ ফর প্যালেস্টাইন’ কর্মসূচি পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। পরে তাঁতীবাজার মোড় থেকে তারা লংমার্চ কর্মসূচি প্রত্যাহার করে ক্যাম্পাসে ফিরে আসে।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির ব্যানারে ক্যাম্পাস থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের দূতাবাসের উদ্দেশ্যে এ পদযাত্রা শুরু করেন তারা।
তবে আজ থেকে শুরু হওয়া এসএসসি পরীক্ষার কথা উল্লেখ করে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ক্যাম্পাসে ফিরে যেতে অনুরোধ করে। পুলিশের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে এবং বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে বিক্ষোভকারীরা তাঁতীবাজার মোড় থেকে রায়সাহেব বাজার দিয়ে ক্যাম্পাসে ফিরে আসেন।
এ সময় ‘ফ্রম দ্যা রিভার টু দ্যা সি, প্যালেস্টাইন উইল বি ফ্রি’, ‘ইসরাইলের কালো হাত, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’, ‘ইসরাইলি আগ্রাসন, বন্ধ করো করতে হবে’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীরা। এ ছাড়াও তাদের হাতে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে লেখা বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।
কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা জানান, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, মার্কিন দূতাবাস ও সৌদি আরবের দূতাবাসে স্মারকলিপি প্রদান করবে প্রতিনিধিদল। স্মারকলিপিগুলো বাংলা, ইংরেজি ও আরবি ভাষায় লেখা হয়েছে।
ইসলামী ছাত্রশিবিরের জবি শাখার সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম বলেন, “আমরা মুসলিম জাতি, খালিদ বিন ওয়ালিদের উত্তরসূরি। কিন্তু আমরা তা ভুলে গেছি। আজ আমরা শুধু ফতোয়াবাজিতে ব্যস্ত। এরই সুযোগে ইহুদি-খ্রিস্টানরা মুসলিম ভাই-বোনদের হত্যা করছে। আমি মুসলিম যুবকদের জাগরণের আহ্বান জানাচ্ছি।”
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছ উদ্দিন বলেন, “যদি গাজার ফিলিস্তিনদের উপর বর্বরতা বন্ধ না হয়, তাহলে জাতিসংঘের অফিসে পরের সপ্তাহে স্মারকলিপি প্রদান করা হবে। আমরা শিক্ষক সমিতি গাজায় গণহত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।”
এর আগে গত সোমবার (৭ এপ্রিল) দুপুর ১২টায় ‘গ্লোবাল স্ট্রাইক ফর গাজা’র প্রতি সমর্থন জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে সংহতি সমাবেশে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. রইছ উদ্দীন তিন দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন।
তিন দফার মধ্যে রয়েছে—গাজায় বর্বরোচিত গণহত্যার প্রতিবাদে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রতিবাদ জানানো, মার্কিন দূতাবাসের উদ্দেশে লংমার্চ ও স্মারকলিপি দেওয়া এবং দেশে ইসরায়েলি পণ্য নিষিদ্ধ করা।
ঢাকা/লিমন/মেহেদী