ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ এনে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থী আব্দুল কাদির সোহানের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন এক নারী শিক্ষার্থী। অভিযুক্ত সোহান বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী।

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১২টায় ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থী বাদী হয়ে বরিশাল বন্দর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।

এদিকে, মামলায় অভিযুক্ত আব্দুল কাদির সোহানকে গ্রেপ্তার করেছে বন্দর থানা পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেন বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম।

মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থীকে প্রায়ই প্রেমের প্রস্তাব দিতেন অভিযুক্ত আব্দুল কাদির সোহান। ভুক্তভোগী গতকাল মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন-১ এর ষষ্ঠ তলায় সহপাঠির সঙ্গে পড়াশুনা করছিলেন। সাড়ে ৪টার দিকে অভিযুক্ত সোহান তাকে কল দিয়ে সিড়িতে নিয়ে যান। সেখান থেকে ভুক্তভোগীকে টেনে-হিঁচড়ে ষষ্ঠ তলা সিড়ির উপরের ছাদে নিয়ে ধর্ষণ করার চেষ্টা করেন।

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে, দুজনের মধ্যে ৪ মাস ধরে প্রেমের সম্পর্ক চলছে। ঘটনার সময় মেয়েটির চিৎকার শুনে অন্যান্য সহপাঠীরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। পরে সহপাঠীদের সহযোগিতায় ভুক্তভোগী নিজ বিভাগের চেয়ারম্যান ও ছাত্র উপদেষ্টা কাজী মো.

জাহাঙ্গীর কবিরের মাধ্যমে প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন।

এ নিয়ে দুই বিভাগের শিক্ষকদের উপস্থিতিতে কয়েক দফায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আলোচনা করেন। একপর্যায়ে দুই বিভাগের শিক্ষার্থীরা মুখোমুখি অবস্থান নেন। পরে আলোচনা শেষে প্রক্টর, দুই বিভাগের শিক্ষক ও ভুক্তভোগী থানায় এসে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ এনে মামলাটি দায়ের করেন।

মঙ্গলবার অভিযুক্ত আব্দুল কাদির সোহান ধর্ষণচেষ্টার ঘটনা অস্বীকার করে বলেন, “তার সঙ্গে আমার দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্ক ছিল। আমি তাকে খুঁজতে যাই। একপর্যায়ে লিফ্টের ষষ্ঠ তলায় গিয়ে তাকে পাই এবং তার সঙ্গে বাকবিতণ্ডা জড়িয়ে পড়ি। কিন্তু ধর্ষণচেষ্টার কোন ঘটনাই ঘটেনি।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. এ টি এম রফিকুল ইসলাম বলেন, “ঘটনাটি দুঃখজনক। আমরা বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গে আলোচনা করি ও উপাচার্য জানাই। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে দোষীকে একাডেমিক শাস্তি যাতে হয়, সে বিষয়টি নিয়ে কাজ করবে। পাশাপাশি আইনি সহায়তায় মেয়েটির পাশে থাকবে।”

বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, “আমরা অভিযোগের ভিত্তিতে মামলাটি গ্রহণ করেছি। আসামীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরবর্তীতে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

ঢাকা/সাইফুল/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

ভৈরবে ব্যবসায়ীকে তুলে নিয়ে মুক্তিপণ আদায়, ডিবির দুই সদস্য বরখাস্ত

কিশোরগঞ্জের ভৈরব থেকে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) সদস্য পরিচয়ে এক ব্যবসায়ীকে অস্ত্রের মুখে তুলে নেওয়া হয়। ৫ ঘণ্টা পর ১ লাখ ৯৩ হাজার টাকা দিয়ে মুক্তি পেয়েছেন ওই ব্যবসায়ী। এ ঘটনায় ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) দেলোয়ার হোসেন ও কনস্টেবল ইসমাইল হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

গতকাল শনিবার কিশোরগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী এক আদেশে অভিযুক্ত দুজনের বিরুদ্ধে এই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেন। আজ রোববার দুপুরে মুঠোফোনে কিশোরগঞ্জ ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুল হক প্রথম আলোকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, প্রাথমিক তদন্তে দেলোয়ার ও ইসমাইলের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যাওয়ায় পুলিশ সুপার শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নিয়েছেন।

ভৈরব উপজেলার মানিকদী নতুন বাজারে আমির হোসেন নামের এক ব্যক্তি মুদিদোকানে ব্যবসা করেন। অভিযোগ রয়েছে, গত সোমবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে সাদা রঙের একটি মাইক্রোবাস আমির হোসেনের দোকানের সামনে থামে। মাইক্রোবাস থেকে ডিবি পুলিশের আটজন সদস্য নামেন। নেমেই আমির হোসেনের কাছে জানতে চান জ্বালানি তেল বিক্রি করেন কি না। পরে ওই দোকানে তল্লাশি শুরু করেন। একপর্যায়ে আমির হোসেনকে বাইরে নিয়ে যেতে চান। আমির হোসেন যেতে চাননি। তখন কপালে অস্ত্র ঠেকিয়ে গাড়িতে ওঠানো হয়। পরে গাড়ি দিয়ে তাঁকে ভৈরব ও কুলিয়ারচরের বিভিন্ন প্রান্তে নেওয়া হয়। চলমান অবস্থায় তাঁর কাছে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করা হয়। না দিতে পারলে এক হাজার পিস ইয়াবা দিয়ে চালান দেওয়ার কথা বলা হয়। একপর্যায়ে এসআই দেলোয়ারের মুঠোফোন দিয়ে পরিবারের লোকজনের সঙ্গে আমির হোসেন যোগাযোগ করেন এবং ১ লাখ ৯৩ হাজার টাকা দেওয়া হয়। তাঁকে পাঁচ ঘণ্টা আটকে রাখা হয়।

আমির হোসেন বলেন, ‘আমার অপরাধ আমি জানি না। গাড়ির ভেতর মারধর করা হয়েছে, টাকা দেওয়ার পর আমাকে ছাড়া হয়। বিষয়টি আমি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি।’

এ বিষয়ে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া এসআই দেলোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমির হোসেনের কাছে মাদক আছে—এমন অভিযোগ পেয়ে অভিযান চালানো হয়েছিল। কিন্তু ওই দিন তাঁর কাছ থেকে কিছুই পাওয়া যায়নি। মনে হয়েছে, আমির হোসেনকে নিয়ে আরও কয়েকটি বাড়িতে অভিযান চালানো গেলে মাদক পাওয়া যেতে পারে। সেই কারণে তাঁকে গাড়িতে ওঠানো হয়। কিন্তু তাতেও আমরা সফল হইনি। শেষে দুজনকে ছেড়ে দিয়েছি। এর মধ্যে লেনদেনের কোনো বিষয় নেই।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভৈরবে ব্যবসায়ীকে তুলে নিয়ে মুক্তিপণ আদায়, ডিবির দুই সদস্য বরখাস্ত