ছ্যাঁকা খাওয়া পাবলিকদের কাছে এটা বাস্তব ঘটনা মনে হবে: বাপ্পারাজ
Published: 5th, February 2025 GMT
‘প্রেমের সমাধি ভেঙে’, ‘তুমি বন্ধু আমার চির সুখে থেকো’, ‘আমি তো একদিন চলে যাব’, ‘তোমরা সবাই থাকো সুখে’— বিরহ ঘরানার এসব গান আজও দর্শক হৃদয় ছুঁয়ে যায়। চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় এই গানগুলোতে ঠোঁট মিলিয়েছেন চিত্রনায়ক বাপ্পারাজ। এসব গানে কষ্টের মাঝেও এক ফালি হাসি দিয়ে হাজারো দর্শকের হৃদয় জয় করেন এই নায়ক।
কয়েক দিন আগে ‘প্রেমের সমাধি’ সিনেমার একটি ভিডিও ক্লিপ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। এতে বাপ্পারাজকে বলতে শোনা যায়, “চাচা, বাড়িঘর এত সাজানো কেন? আর হেনা কোথায়?” জবাবে আনোয়ার হোসেন বলেন, “হেনার বিয়ে হয়ে গেছে।” আনোয়ার হোসেন ও বাপ্পারাজের সংলাপগুলো এখন মানুষের মুখে মুখে। অন্য সবার মতো বিষয়টি বাপ্পারাজেরও নজর কেড়েছে। এ নিয়ে রাইজিংবিডির সঙ্গে কথা বলেছেন এই নায়ক।
রাইজিংবিডি: আপনার অভিনয় ও সংলাপ নিয়ে উন্মাদনায় মেতেছেন মানুষ। আপনার কেমন লাগছে?
বাপ্পারাজ: মজাই লাগছে। খারাপ কি? আমিও বুঝতে পারছি না ঘটনা কি! অসংখ্য ফোন কল পেয়েছি। কি বলব বলেন তো?
আরো পড়ুন:
জমি দখলের অভিযোগ নিয়ে মুখ খুললেন পপি
টলিউডে ফের অচলাবস্থা!
রাইজিংবিডি: দৃশ্যটি ভাইরাল হওয়ার পর নিশ্চয়ই ২৯ বছর পেছনে ফিরে গিয়েছেন?
বাপ্পারাজ: এ রকম ঠিক না। কিন্তু জিনিসটা মজার। যেখান থেকেই হোক না কেন জিনিসটা মজার। খারাপ না।
রাইজিংবিডি: ভাইরাল হওয়া দৃশ্যটির শুটিং কোথায় করেছিলেন?
বাপ্পারাজ: ‘প্রেমের সমাধি’ সিনেমার অধিকাংশ শুটিং সাভারে হয়েছে। তবে ভাইরাল হওয়া দৃশ্যটির শুটিং এফডিসিতে হয়েছিল। ‘প্রেমের সমাধি ভেঙে’ গানটির শুটিংয়ের সময় পরিচালক ইফতেখার জাহান বলেছিলেন, “গড়াগড়ি খেতে হবে।” শুরুতে রাজি হচ্ছিলাম না। শেষ পর্যন্ত গড়াগড়ি দিয়েছিলাম। ওই দৃশ্যও কিন্তু ভাইরাল।
রাইজিংবিডি: ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর পর্দার হেনার (শাবনাজ) সঙ্গে আপনার কথা হয়েছে?
বাপ্পারাজ: আমাদের একটা গ্রুপ আছে। ১৯-২০ তারিখের দিকে টাঙ্গাইলে আমাদের একটা অনুষ্ঠান হবে। সেখানে আমি যাব, হেনাও (শাবনাজ) থাকবে। সেখানে আমাদের দেখা হবে, তখন কথা হবে।
রাইজিংবিডি: প্রায় তিন দশক পর ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার কারণ কী বলে মনে করেন?
বাপ্পারাজ: ছ্যাঁকা খাওয়া পাবলিকদের জন্য এটা বাস্তব ঘটনাই মনে হবে। তারা নিজের সঙ্গে মিলিয়েছেন। যদিও এটাই স্বাভাবিক! অনেকের লাইফে এমন ঘটনা ঘটে, লাইন মারে হঠাৎ করে অন্য কোথাও বিয়ে হয়ে যায়। এমন ঘটনা অহরহ ঘটে। তাদের জীবনে এটা অনেক কষ্টের। আপনার জীবনে যেটা ঘটবে সেটা অন্যজনের মধ্যে দেখলে, অবশ্যই আপনার হৃদয়ে গেঁথে যাবে এটাই স্বাভাবিক। আমার কাছে মনে হচ্ছে, বিষয়টি অনেকটা এরকমই হয়েছে।
রাইজিংবিডি: আপনার সঙ্গে বিরহের ট্যাগ লেগে গেছে। এটাকে কীভাবে দেখেন?
বাপ্পারাজ: আমি কিন্তু বিরহের সিনেমা খুব বেশি করিনি। আমার অভিনীত বিরহের সিনেমাগুলো বেশি হিট করেছে। যার জন্য মনে হয়েছে আমার সব সিনেমাই বিরহের। আমি একশর মতো সিনেমায় অভিনয় করেছি। তার মধ্যে বিরহের সিনেমা ১০টি হবে। কিন্তু ওগুলোই হিট হয়েছে। বিষয়টি দর্শকদের কাছে এমন মনে হয়েছে যে, ওই ব্যাটা বাস্তব জীবনে এমনই। এটা আমার কাছে অনেক বড় প্রাপ্তি; একজন শিল্পীর জীবনে অনেক বড় পাওয়া। এত বছর পরও দর্শকরা আমার ডায়লগ মনে রেখেছেন। এগুলো সোশ্যাল মিডিয়ায় সবাই পোস্ট করছেন। কিন্তু কোনো বাজে মন্তব্য নেই।
রাইজিংবিডি: নিটোল প্রেম-বিরহরে সিনেমা এখন খুব বেশি দেখা যায় না। এর কারণ কী বলে মনে করেন?
বাপ্পারাজ: মানুষ আগে পরিবার নিয়ে হলে গিয়ে সিনেমা দেখতো; বর্তমানে মানুষের লাইফ এতটাই ফাস্ট হয়ে গেছে যে, কাজ নিয়েই অনেক ব্যস্ত। সিনেমা হলে পরিবার নিয়ে দুই ঘণ্টা কাটানো, রাস্তাঘাটের যা অবস্থা, তাতে এর সঙ্গে আরো দুই ঘণ্টা যোগ করতে হয়। সুতরাং সিনেমা দেখার চেয়ে চাইনিজে গিয়ে পরিবার নিয়ে খাওয়া সহজ। এখন পরিবার নিয়ে সিনেমা দেখব, এমন সিনেমার গল্প আর নেই। আমরা হাসলে দর্শক হাসতো, আমরা কাঁদলে দর্শক কাঁদতো। এখন আর ওই জিনিসটাও নেই।
রাইজিংবিডি: ওয়েব ফিল্মে প্রথমবার কাজ করেছেন। কাজের অভিজ্ঞতা জানতে চাই।
বাপ্পারাজ: এটা একটু আলাদা অভিজ্ঞতা। এর আগে এমন চরিত্রে অভিনয় করিনি। ওয়েব ফিল্মে এটাই আমার প্রথম কাজ। আমার বয়সের সঙ্গে ম্যাচ করে এমন একটা চরিত্রে অভিনয় করেছি, মনে হয় খারাপ হবে না।
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র পর ব র ন য় আপন র
এছাড়াও পড়ুন:
সিনেমার পাঠশালা খুলছেন অমিতাভ রেজা
নন্দিত বিজ্ঞাপন নির্মাতা এবং জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত চলচ্চিত্রের পরিচালক অমিতাভ রেজা চৌধুরী সিনেমা পাঠশালা নিয়ে একটি ভার্চুয়াল ফিল্ম স্কুল চালুর উদ্যোগ নিয়েছেন।
‘সিনেমা পাঠশালা’ নামে এই ভার্চুয়াল ফিল্ম স্কুল আগামী প্রজন্মের চলচ্চিত্র নির্মাতাদের প্রশিক্ষণের জন্য একটি ছয় সপ্তাহব্যাপী বিশেষ কোর্স চালু করছে, যেখানে চলচ্চিত্র নির্মাণের গল্প বলার কৌশল, সিনেমাটোগ্রাফিক টেকনিক এবং হাতে-কলমে চিত্রনাট্য উন্নয়নের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হবে৷ কোর্সের অন্যতম আকর্ষণ হলো ‘ওয়ান-টু-ওয়ান শর্ট ফিল্ম স্ক্রিপ্ট ডেভেলপমেন্ট সেশন’। যেখানে অংশগ্রহণকারীরা অমিতাভ রেজা এবং আমন্ত্রিত অতিথি প্রশিক্ষকদের সঙ্গে সরাসরি কাজ করার সুযোগ পাবেন।
এই উদ্যোগ সম্পর্কে অমিতাভ রেজা চৌধুরী বলেন, “সিনেমা হলো শক্তিশালী গল্প বলার একটি মাধ্যম, এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে আমি নতুন চলচ্চিত্র নির্মাতাদের পথচলায় দিকনির্দেশনা দিতে চাই।”
তিনি জানান, ক্লাস শুরু হবে আগামী মার্চ থেকে। এই কোর্সটি প্রতি বৃহস্পতিবার, শুক্রবার ও শনিবার অনলাইনে অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশসহ বিশ্বের যেকোনও স্থান থেকে আগ্রহীদের অংশ নেওয়ার সুযোগ করে দেবে এই প্লাটফর্ম।
অমিতাভ রেজা এক ফেসবুক ষ্ট্যাটসে লেখেন, ‘এতদিন ধরে আমি যে ছায়ার রাজ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছি তার নাম সিনেমা। ৩০ বছরের এই যাত্রা আমার জন্য শুধু পেশা নয়, এটা আমার বাড়ি, আমার উন্মাদনা — আমার পৃথিবীকে বোঝার উপায়। গল্প বলা কখনোই শেষ হয় না; এটা একটা অনন্ত পথচলা। আর এখন, এই পথের মাঝখানে দাঁড়িয়ে, আমি খুঁজছি কিছু নতুন সহযাত্রী—যারা ছবিতে শ্বাস নেয়, যারা স্বপ্ন দেখে, আর শব্দের গভীরে হারিয়ে যায়।সই কারণেই আমি শুরু করছি ভার্চুয়াল সিনেমা পাঠশালা। নতুন এই উদ্যোগটি আমি সাজিয়েছি ছয় সপ্তাহের পাইলট অনলাইন কোর্স দিয়ে।’