মানুষের মন কেঁদেছে কিন্তু শেখ হাসিনার হৃদয় কাঁপেনি: গোলাম পরওয়ার
Published: 5th, February 2025 GMT
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ‘হেলিকপ্টার থেকে গুলি, মৃত মানুষকে পুড়িয়ে মারাসহ নানা অত্যাচার-নির্যাতনে আল্লাহর আরশ কেঁপেছে, মানুষের মন কেঁদেছে, কিন্তু শেখ হাসিনার হৃদয় কাঁপেনি। বরং কোটা আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী ছাত্রদের রাজাকার বলে শেখ হাসিনা দাম্ভিকতা দেখিয়েছেন। হাসিনার সেই দাম্ভিকতাই তাঁর পতনের কারণ হলো।’
আজ বুধবার সকালে খুলনা প্রেসক্লাবের ব্যাংকুয়েট হলে জুলাই ২০২৪ বিপ্লবের শহীদ স্মারক ‘২য় স্বাধীনতার শহীদ যারা’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে জামায়াতে ইসলামী।
উদ্বোধনী বক্তৃতায় মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, জুলাই আন্দোলনের শহীদেরা কোনো দলের নন, তাঁরা জাতীয় সম্পদ, জাতীয় বীর।
‘২য় স্বাধীনতার শহীদ যারা’ গ্রন্থ সম্পর্কে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ২৩টি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে জামায়াতের টিম সব শহীদ পরিবারের বাড়িতে গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করে ৭১৭ জনের তথ্যসংবলিত আড়াই হাজার পৃষ্ঠার এই ১০ খণ্ডের বই প্রকাশ করেছে। এখনো তথ্য সংগ্রহের কাজ চলমান। আরও ৯৩ জনের তথ্য নিয়ে বই সংকলনের কাজ চলছে। যতক্ষণ তথ্য আসবে, শহীদদের সংকলন ততক্ষণ চলতে থাকবে।
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, গত ১৬ বছরে দেশের সব বিভাগ তছনছ করে দিয়েছিল তৎকালীন সরকার। স্বৈরাচারের মাস্টার মাইন্ড শেখ হাসিনা, এত অন্যায় অত্যাচার করেছেন, যে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন। মানুষ আর কোনো স্বৈরাচারকে বাংলাদেশে দেখতে চায় না।
জামায়াতে ইসলামীর খুলনা অঞ্চলের পরিচালক মুহাদ্দিস আবদুল খালেকের সভাপতিত্বে এবং খুলনা মহানগর সেক্রেটারি শেখ জাহাঙ্গীর হুসাইন হেলালের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামীর খুলনা অঞ্চলের সহকারী পরিচালক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, বাগেরহাট জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা রেজাউল করিম, খুলনা জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা ইমরান হোসাইন, খুলনার পাইকগাছার শহীদ রকিবুল হাসানের বাবা গাজী রফিকুল ইসলাম, শহীদ আলিফ আহমেদের বাবা বুলবুল কবির, নর্দান ইউনিভার্সিটির রেজিস্ট্রার মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইসল ম র
এছাড়াও পড়ুন:
মৌলভীবাজারে মুরগির বাচ্চার মড়ক, খামারিরা দিশেহারা
মৌলভীবাজারে রাণীক্ষেত ভাইরাসে প্রতিদিন শত শত মুরগির বাচ্চা মারা যাচ্ছে। ওষুধ প্রয়োগ করেও প্রতিকার না মেলায় খামারিরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে।
খামারিদের দাবি, গত এক সপ্তাহে ৮ হাজার বাচ্চা মারা গিয়েছে। এতে তাদের কয়েক লাখ টাকা লোকসান হবে।
জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ বলছে, রাণীক্ষেত সিজনাল ভাইরাস। খামারে কিছু বাচ্চা মারা গিয়েছে। তবে সংখ্যা এত বেশি হবে না। খামারিদের করণীয় বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
আরো পড়ুন:
বিক্রির জন্য প্রস্তুত ১৩০০ কেজির মহিষ ‘পাঠান’
রংপুরে প্রাণিসম্পদ কর্মকতার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ খামারিদের
সরেজমিন বিভিন্ন খামার ঘুরে দেখা গেছে, ২২ দিন বয়সের বাচ্চা থেকে ২ মাস ১৫ দিনের বাচ্চা বেশি মারা যাচ্ছে। খামারিরা জানান, প্রভিটা ফিড লিমিটেডের হ্যাচারি থেকে উঠানো লেয়ার জাতের একদিনের বাচ্চা মরা শুরু হয়। বিষয়টি নিয়ে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা ল্যাব টেস্ট করাবেন বলে জানান। তবে তাদের কাছ থেকে ভালো কোনো পরামর্শ আসেনি। স্থানীয় পশু চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা করিয়ে তেমন ফল আসছে না। এতে খামারিরা লোকসানের শঙ্কায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
জেলার রাজনগর উপজেলার ভুজবহল গ্রামের জনতা পোল্ট্রি ফার্মে দেখা যায়, কয়েক বস্তা মরা বাচ্চা মাটিতে পুতে ফেলার জন্য রাখা হয়েছে। এ সময় খামার পরিচর্চাকারী সামুয়েল ও ছালিক মিয়া জানান, ওষুধে কাজ হচ্ছে না। এই সেডে প্রভিটা ফিড লিমিটেডের একদিন বয়সী বাচ্চার মড়ক শুরু হয়। এখন ২২ দিন বয়সী বাচ্চা মারা যাচ্ছে।
মৌলভীবাজার সদর উপজেলার বর্ষিজুড়া এলাকার জনতা পোল্ট্রির আরেক সেডে গিয়ে দেখা যায়, আড়াই মাসের বাচ্চা মরে যাচ্ছে। ৫ বস্তা মরা বাচ্চা রাখা হয়েছে। এ সময় কথা হয় পরিচর্চাকারী হেলাল মিয়ার জানান, বাচ্চা উঠানোর পর গত ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে মড়ক শুরু হয়। আজ পর্যন্ত মরা অব্যাহত রয়েছে। প্রতিদিন ২ থেকে আড়াইশত বাচ্চা মারা যাচ্ছে।
কথা হয় সদর উপজেলার পোল্ট্রি ফিড এন্ড সিক্স এর স্বত্বাধিকারী খালেদের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘‘আমরা আশা করে বাচ্চা তুলেছিলাম কিন্তু যেভাবে মড়ক দেখা দিয়েছে, এভাবে মরতে থাকলে বড় লোকসানে পড়বো। জেলা প্রাণিসম্পদের লোকজন আমাদের কাছে আসছেন না। আমরা দিশেহারা হয়ে গেছি।’’
পোল্ট্রি বিজনেস অ্যাসোসিয়েশন মৌলভীবাজারের সভাপতি হাসান আহমদ বলেন, ‘‘আমি ২০ বছর ধরে এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত। কিন্তু এত মড়ক দেখিনি। চিকিৎসা দিয়েও লাভ হচ্ছে না। একদিন বয়সী বাচ্চা থেকে শুরু করে আড়াই মাসের বাচ্চাও মারা যাচ্ছে। জেলার কমপক্ষে ২০টি খামারে মড়ক অব্যাহত রয়েছে। ৮-১০ হাজার বাচ্চা মারা গেছে। সবচেয়ে বেশি মরছে প্রভিটার বাচ্চা। আমরা বিষয়টি তাদের জানিয়েছি কিন্তু কোনো সুরাহা হচ্ছে না্। প্রাণিসম্পদ বিভাগকেও জানিয়েছি।’’
খামারে চিকিৎসা দিতে আসা পশু চিকিৎসক অমরজিৎ বলেন, ‘‘রাণীক্ষেত ভাইরাসে মড়ক একটু বেশি মনে হচ্ছে। মরা বাচ্চার ময়নাতদন্ত করে রাণীক্ষেত ভাইরাস ধরা পড়েছে।’’
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আশরাফুল আলম খান বলেন, ‘‘মাঠ পর্যায়ে আমাদের জনবল কম। মাঠের হিসাবে দুই থেকে আড়াই হাজার বাচ্চার মরার খবর পেয়েছি। আমরা আক্রান্ত বাচ্চাকে এন্টিভাইরাস, সেকেন্ডারি ভ্যাকটেরিয়া ও এ্ন্টিবায়োটিক প্রয়োগের পরামর্শ দিচ্ছি।’’
ঢাকা/বকুল