বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ‘হেলিকপ্টার থেকে গুলি, মৃত মানুষকে পুড়িয়ে মারাসহ নানা অত্যাচার-নির্যাতনে আল্লাহর আরশ কেঁপেছে, মানুষের মন কেঁদেছে, কিন্তু শেখ হাসিনার হৃদয় কাঁপেনি। বরং কোটা আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী ছাত্রদের রাজাকার বলে শেখ হাসিনা দাম্ভিকতা দেখিয়েছেন। হাসিনার সেই দাম্ভিকতাই তাঁর পতনের কারণ হলো।’

আজ বুধবার সকালে খুলনা প্রেসক্লাবের ব্যাংকুয়েট হলে জুলাই ২০২৪ বিপ্লবের শহীদ স্মারক ‘২য় স্বাধীনতার শহীদ যারা’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে জামায়াতে ইসলামী।

উদ্বোধনী বক্তৃতায় মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, জুলাই আন্দোলনের শহীদেরা কোনো দলের নন, তাঁরা জাতীয় সম্পদ, জাতীয় বীর।

‘২য় স্বাধীনতার শহীদ যারা’ গ্রন্থ সম্পর্কে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ২৩টি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে জামায়াতের টিম সব শহীদ পরিবারের বাড়িতে গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করে ৭১৭ জনের তথ্যসংবলিত আড়াই হাজার পৃষ্ঠার এই ১০ খণ্ডের বই প্রকাশ করেছে। এখনো তথ্য সংগ্রহের কাজ চলমান। আরও ৯৩ জনের তথ্য নিয়ে বই সংকলনের কাজ চলছে। যতক্ষণ তথ্য আসবে, শহীদদের সংকলন ততক্ষণ চলতে থাকবে।

জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, গত ১৬ বছরে দেশের সব বিভাগ তছনছ করে দিয়েছিল তৎকালীন সরকার। স্বৈরাচারের মাস্টার মাইন্ড শেখ হাসিনা, এত অন্যায় অত্যাচার করেছেন, যে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন। মানুষ আর কোনো স্বৈরাচারকে বাংলাদেশে দেখতে চায় না।

জামায়াতে ইসলামীর খুলনা অঞ্চলের পরিচালক মুহাদ্দিস আবদুল খালেকের সভাপতিত্বে এবং খুলনা মহানগর সেক্রেটারি শেখ জাহাঙ্গীর হুসাইন হেলালের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামীর খুলনা অঞ্চলের সহকারী পরিচালক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, বাগেরহাট জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা রেজাউল করিম, খুলনা জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা ইমরান হোসাইন, খুলনার পাইকগাছার শহীদ রকিবুল হাসানের বাবা গাজী রফিকুল ইসলাম, শহীদ আলিফ আহমেদের বাবা বুলবুল কবির, নর্দান ইউনিভার্সিটির রেজিস্ট্রার মো.

শাহ আলম, খুলনা আলিয়া কামিল মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত মুফতি মাওলানা আবদুর রহীম, খুলনা মহানগর ছাত্রশিবির সভাপতি আরাবাত হোসেন প্রমুখ।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসল ম র

এছাড়াও পড়ুন:

১৫ বছরের জঞ্জাল পরিষ্কার করেই নির্বাচন হতে হবে: গোলাম পরওয়ার

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরের ‘জঞ্জাল’ পরিষ্কার করেই আগামী সাধারণ নির্বাচন হতে হবে বলে মন্তব্য করছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। 

তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশের মানুষ ২০১৪, ১৮ ও ২৪ এর মতো নির্বাচন আর দেখতে চায় না। অন্তর্বর্তী সরকার যে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে, সেই নির্বাচন হতে হবে পুলিশ ও সিভিল প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকল রাষ্ট্রীয় অর্গানগুলো সংস্কার করে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। ১৫ বছরের জঞ্জাল পরিষ্কার করেই হতে হবে আগামী নির্বাচন।’’

অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘‘সেইসঙ্গে যারা বিগত দেড় দশকে লুটপাট, খুন, দুর্নীতি, অনিয়ম করেছেন, তাদের ট্রাইব্যুনালে বিচার করতে হবে।’’  

আরো পড়ুন:

নিবন্ধন পেল বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি, প্রতীক ফুলকপি

নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক পলাতক ফ্যাসিবাদকে সুযোগ করে দিতে পারে: এ্যানি

মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে খুলনা মহানগর সংলগ্ন হরিণটানা থানাধীন আরাফাত নগর ইউনিট জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ সব কথা বলেন।

হরিণটানা থানা জামায়াতে ইসলামীর আমীর আব্দুল গফুর কর্মী সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন। সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলাম এবং আমির হোসেনের পরিচালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনা জেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি মুন্সী মিজানুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক মিয়া গোলাম কুদ্দুস, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের খুলনা মহানগরী সভাপতি আজিজুল ইসলাম ফারাজি ও ডুমুরিয়া উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর মাওলানা মোক্তার হোসাইন। 

অন্যানের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সোনাডাঙ্গা থানা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জাহিদুর রহমান নাঈম, ১৮ নম্বর ওয়ার্ড আমীর মশিউর রহমান রমজান, শ্রমিক নেতা কাজী মাহফুজুর রহমান, জামায়াত নেতা সাখাওয়াত হোসেন লিখন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মতিউর রহমান, ডা. ফজলুর রহমান, ডা. মো. ইসমাইল হোসেন, মোহাম্মদ শহিদুল আলম, মাওলানা আফজাল হোসাইন, রেদওয়ান উল্লাহ ইব্রাহিম প্রমুখ।

অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘‘আগামী নির্বাচন হতে হবে ৫ আগস্টের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে একটি জাতীয় ঐক্যের নির্বাচন। সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে একটি শান্তিপূর্ণ, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধশালী কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হবে।’’  

জামায়াতের আমীর ডা. শফিকুর রহমানের উদ্বৃত্তি তিনি বলেন, ‘‘স্বাধীনতার ৫৩ বছরে অনেক শাসন দেখেছি। এবার জামায়াতে ইসলামীকে দেখতে। তাই এবারের স্লোগান হবে ‘সব দল দেখা শেষ, জামায়াতে ইসলামীর বাংলাদেশ’।’’ তিনি একটি কল্যাণ রাষ্ট্র ও ইনসাফপূর্ণ সমাজ গঠনে সকলকে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানান।

জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আরো বলেন, ‘‘কথিত মানবতাবিরোধী সাজানো অপরাধের নামে জামায়াতের যে সকল নেতা হত্যার শিকার হয়েছেন, আমরা তাদের কাছে ঋণী। তাদের ঋণ পরিশোধ করতে হবে। আজকে যেই বাংলাদেশ হয়েছে, মানবতাবিরোধী অপরাধে শহীদরাও সেই বাংলাদেশ চেয়েছিলেন। সুতরাং সেই বিচার হতেই হবে। জুডিশিয়াল ক্যু করে জামায়াত নেতাদের ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। সেই জুডিশিয়াল ক্যু’র সঙ্গে যারা জড়িত রয়েছে, তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।’’

তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশের মানুষ ফ্যাসিবাদ কখনো মেনে নেবে না। আমরা সবাই ঐক্যমতের ভিত্তিতেই চলতে চাই। যারা কিছু কিছু সুবিধা নিচ্ছেন, তারা আমাদের সঙ্গে একমত নাও হতে পারেন। আমরা গণতান্ত্রিক উপায়ে নির্বাচন চাই, তা হবে সুষ্ঠুভাবে, সঠিকভাবে। আমরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে বাংলাদেশের সরকার গঠন করতে চাই।’’ 

জামায়াতে ইসলামীর এই নেতা বলেন, ‘‘বিগত ফ্যাসিবাদ সরকার জনগণের সকল অধিকার; বাক স্বাধীনতা, গণতান্ত্রিক অধিকার, সাংবিধানিক অধিকার, মিডিয়ার স্বাধীনতা, শিক্ষা, ধর্মীয় মূল্যবোধ সবকিছু তছনছ করে দিয়েছে। দেশের সর্বত্র এবং প্রশাসনের মধ্যে ফ্যাসিবাদের দোসররা এখনো ঘাপটি মেরে বসে আছে। তাদের অপসারণ করে বিচারের আওতায় আনতে হবে।”

জাতীয় ঐক্য গড়ার পদক্ষেপ হিসেবে জামায়াতের মাঠ পর্যায়ের দায়িত্বশীল ও ইউনিট নেতাদের কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।

ঢাকা/রেজাউল/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ১৫ বছরের জঞ্জাল পরিষ্কার করেই নির্বাচন হতে হবে: গোলাম পরওয়ার