কুবিতে বিপ্লব পরবর্তী শিক্ষাঙ্গন ও গণমাধ্যম নিয়ে আলোচনা
Published: 5th, February 2025 GMT
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের নবম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ‘জুলাই বিপ্লব পরবর্তী শিক্ষাঙ্গন ও গণমাধ্যম’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১টায় কুবির ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের সম্মেলন কক্ষে এ সভার আয়োজন করা হয়।
এর আগে, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড.
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুল হাসানের সভাপতিত্বে ও বিভাগের প্রভাষক মো. মশিউর রহমানের সঞ্চালনায় সভায় আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মুতাসিম বিল্লাহ, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কাজী এম. আনিছুল ইসলাম, নৃবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ড. শামীমা নাসরিন প্রমুখ।
প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মুতাসিম বিল্লাহ বলেন, “জুলাই বিপ্লবের ওই সময়ে যারা আন্দোলন করেছে, তাদের বাইরে অনেকেই চেয়েছিল আন্দোলনে আসতে। কিন্তু আসেনি কেন? কারণ একটা ভয় ছিল। যদি তারা আসে, তাহলে তারা হয়তো তাদের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান সবকিছু থেকে বঞ্চিত হবে। এ ভয়ের পিছনেও একটা কারণ আছে, সেটা হলো আত্মসম্মানবোধ কম থাকা। আর এটা কমে যাওয়ার পিছনের কারণটা হচ্ছে অলসতা।”
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কাজী এম. আনিছুল ইসলাম বলেন, “গণমাধ্যমে ফ্যাসিজম তৈরি হয়, যখন আপনি মেনে নেন। জুলাইয়ে চুপ না থেকে এর বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলার পরই ফ্যাসিস্ট পালাতে বাধ্য হয়েছে। গণমাধ্যমের ফ্যাসিজম দূর করতে পারে আপনার আমার আওয়াজ। তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে আবার ফ্যাসিজম আঁকড়ে বসেছে, শিক্ষার্থীদের মতামতকে উপেক্ষা করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা আবার জেগে উঠলে এখান থেকেও ফ্যাসিবাদ বিলুপ্ত করা সম্ভব।”
তিনি বলেন, “এই অন্তর্বতীকালীন সরকার জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ব্যর্থ হয়েছে। সাধারণ মানুষ, ব্যবসায়ীসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষ এখন অনিশ্চয়তায় সময় পার করছে। এখন এ সরকারের আচরণেও ফ্যাসিজম লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তাই সরকারকে উচিৎ একটি গণতান্ত্রিক ধারা তৈরি করে ক্ষমতা থেকে সরে যাওয়া।”
২০১৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮তম বিভাগ হিসেবে যাত্রা শুরু করে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ।
ঢাকা/এমদাদুল/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বিএসইসিতে আন্দোলন: এখনও কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেননি চেয়ারম্যান
গত বৃহস্পতিবারে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি কর্মকর্তারা লাগাতার কর্ম বিরতির ঘোষণা দিলেও আজ রোববার বেশিরভাগ কর্মকর্তারা কাজে যোগ দিয়েছেন। তবে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। কর্মকর্তাদের ডেস্কে গিয়ে দেখা গেছে, স্বাভাবিক কোন কাজ চলছে না। সকলের মধ্যে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে শেয়ারবাজারের সব অংশীজনদের সঙ্গে আজ সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত টানা দু'ঘণ্টা বৈঠক করেছেন বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদসহ তিন কমিশনার।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে চেয়ারম্যান রাশেদ মাকসুদ জানান, তিনি এখনও কোনো কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য আলোচনা করেননি।
গত বুধবার বিএসইসির চেয়ারম্যান ও তিন কমিশনারকে চার ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে তাদের পদত্যাগ দাবি ও চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত কর্মকর্তাদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগে চেয়ারম্যানের গানম্যান আশিকুর রহমান বাদী হয়ে নির্বাহী পরিচালক মাহবুবুল আলম ও রেজাউল করিমসহ ১৬ জন কর্মকর্তাকে আসামি করে একটি মামলা করেছিলেন।
রাজধানীর শেরে বাংলা নগর থানায় করা ওই মামলায় গ্রেপ্তার আতঙ্কে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা আজ কমিশনে কাজে যোগদান করেননি।
সাংবাদিকরা বিএসইসির চেয়ারম্যানের কাছে ওই মামলায় কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার করা হবে কিনা, কিংবা এ বিষয়ে কমিশনের পরবর্তী সিদ্ধান্ত কি জানতে চেয়েছিলেন। চেয়ারম্যান এ প্রশ্নের কোনো উত্তর দেননি।
এর আগে কমিশনের সঙ্গে শেয়ারবাজার অংশজনরা জরুরি বৈঠক করার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম এবং পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন।
ডিএসই চেয়ারম্যান বলেন, কর্মকর্তাদের যৌক্তিক কোনো দাবি বা ক্ষোভ থাকলে তা যথাযথ আইন ও নিয়ম মেনে প্রক্রিয়ায় কমিশন বা সরকারের কাছে জানানোর উপায় রয়েছে। কমিশনের কোনো সিদ্ধান্তে কেউ বিক্ষুব্ধ হলে তা আইনি প্রক্রিয়ায় মোকাবেলা করারও অধিকার অন্য সবার মত কমিশন কর্মকর্তাদেরও রয়েছে। এ ঘটনায় দেশের শেয়ারবাজারের সুনাম ক্ষুণ্ন হয়েছে বলে মনে করেন তিনি।
গত বুধবার চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের অবরুদ্ধ করে তাদের দাবি জানানো এবং পরবর্তী ঘটনাক্রমগুলো ছিল অনাকাঙ্ক্ষিত- এমন মন্তব্য করে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান বলেন, সকল অংশীজন আশা করে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা আর যাতে না ঘটে, তার জন্য সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষ দায়িত্বশীল আচরণ করবেন।
ডিএসইর চেয়ারম্যান বলেন, বিএসইসি হচ্ছে শেয়ারবাজারের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা। এ সংস্থার সুনাম সংবেদনশীলতা ও মর্যাদা সমুন্নত রাখার দায় বাজার সংশ্লিষ্ট সকল অংশীজনের।
বুধবারের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় কমিশনের নিরীহ, সৎ ও দক্ষ কর্মকর্তারা যাতে কোনোরূপ হয়রানির শিকার না হন, তা নিশ্চিত করতে কমিশনের কাছে অনুরোধ করেছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
তবে বিগত দিনে শেয়ার বাজারে যেসব অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে তার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়ায় বিচার নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন তিনি।
মমিনুল ইসলাম আরও জানান, উদ্ভূত ঘটনায় শেয়ারবাজারে লেনদেন স্বাভাবিক রাখতে তৎপর রয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ। এ ঘটনায় কেউ যাতে পরিস্থিতির সুযোগ নিতে না পারে, তার জন্য স্টক এক্সচেঞ্জের সারভিলেন্স এবং মনিটরিং কার্যক্রম বাড়ানো হয়েছে।
এদিকে আজ ঢাকার শেয়ারবাজার ডিএসইতে স্বাভাবিক লেনদেন হলেও দর হারিয়েছে ২৭৪ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড। দর বেড়েছে ৫৮টির।
টাকার অংকে মোট লেনদেন হয়েছে ৩৩৬ কোটি টাকার শেয়ার ও ফান্ড। তবে প্রধানমূল্য সূচক ডিএসইএক্স ২৯ পয়েন্ট হারিয়ে ৫১৭৪ পয়েন্টে নেমেছে।