ভূমিপল্লীতে বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে চাঁদাবাজিতে লিপ্ত জিয়াউল হক, ক্ষোভ
Published: 5th, February 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ভূমিপল্লী আবাসন এলাকায় বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে চাঁদাবাজি, মামলা বাণিজ্য ও বহিরাগত সন্ত্রাসী দ্বারা ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ উঠেছে জিয়াউল হক ভুঁইয়ার বিরুদ্ধে।
২০২৪ সালের ১ নভেম্বর তিনি ভূমি পল্লী আবাসনের বাসাবাড়ির বর্জ্য অপসারণের তদারকির দায়িত্ব পান। পরে তার বিতর্কিত কর্মকান্ডের কারণে চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারি তাকে ওই পদ থেকে অব্যাহতি দেয় ভূমিপল্লী কর্তৃপক্ষ। অভিযুক্ত জিয়াউল হক ভুঁইয়া সিদ্ধিরগঞ্জের ভূমিপল্লী আবাসিক এলাকার ৩নং রোডের বাসিন্দা।
ভূমিপল্লী কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, গত ৩১ জানুয়ারি বিকেলে ভূমি মন্ত্রণালয় কর্মকর্তা ও কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সাধারণ সম্পাদক মো.
এতে অংশগ্রহণকারীরা বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে চাঁদাবাজি, মামলা-বাণিজ্য, বহিরাগত সন্ত্রাসী দ্বারা ভয়ভীতি প্রদর্শন, শারিরিক নির্যাতন এবং আবাসনের বাড়ি মালিকদের বিরুদ্ধে অসম্মানজনক লিফলেট বিতরণ ও ভূমিপল্লির সিকিউরিটি কর্তৃক চুরির বিষয়ে প্রমাণ দাখিল করা হয়।
এতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, ভূমিপল্লী আবাসিক এলাকার সিকিউরিটি ইনচার্জ রিফাত ও সিকিউরিটি বিপ্লবের চাঁদাবাজ মো: জিয়াউল হককে চাদাঁবাজিসহ অন্যান্য অসৎ কাজে সহায়তা করে এবং গেটে আটককৃত মালামাল চোরাই বাজারে বিক্রি করে। দায়িত্বের প্রতি চরম অবহেলা ও অসৎ আচরণে জড়িত থাকায় তাদের দুইজনকে ৩১ জানুয়ারি চাকরিচ্যুত করেন সভার সভাপতি।
২০২০ সালে পোষ্টার নেতা জিয়াউল হক ভূমিপল্লি কমপ্লেক্স জামে মসজিদের প্রিয় শায়েখ আহমদুল্লাহকে (রাহা:) বহিরাগত সন্ত্রাসী দ্বারা মসজিদের ভিতরে অসম্মান ও লাঞ্চিত করতে চেয়েছিল। সাধারণ মুসুল্লিরা তাতে বাঁধা দেন।
তখন স্বঘোষিত পোষ্টার নেতা জনাব জিয়াউল হক নিরীহ নামাজী মো: আরিফ সিকদার এবং মো: মাহমুদকে মারধর করে এবং মসজিদে নামাজের সামনে রাখা কাঠ দিয়ে মাথায় আগাত করে হত্যা করার চেষ্টা করেন।
এই ন্যাক্কারজনক ঘটনায় এবং সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের জন্য জিয়াউল হককে মসজিদ কমিটি থেকে তখন বহিষ্কার করা হয় এবং ভূমিপল্লিবাসী তার বিরুদ্ধে ২০২০ সলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন।
ওই বছর ভূমিপল্লি কমপ্লেক্স জামে মসজিদের অভ্যন্তরে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে বহিষ্কার ও হত্যাচেষ্টা মামলাকে তিনি এখন রাজনৈতিক মামলা অবহিত করে ভূমিপল্লিতে পোষ্টার লাগিয়ে বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে চাঁদাবাজির রাজত্ব কায়েম করেছেন।
ভূমিপল্লি আবাসিক এলাকায় ব্যবসায়ী মো: মোজাম্মেল জানান, তার কাছ থেকে বিএনপির নাম ভাঙ্গানো পোস্টার নেতা মো: জিয়াউল হকের নেতৃত্বে তার ভাগিনা সিকিউরিটি ইনচার্জ রিফাত এবং সিকিউরিটি বিপ্লব ৪ হাজার ৫০০ টাকা চাঁদা নেয় এবং ভূমিপল্লিতে ব্যবসা করতে চাইলে প্রতি মাসে তাদেরকে ১ হাজার ৫০০টাকা করে তাদের চাঁদা দিতে হবে বলে জানিয়ে যান।
চটপটি বিক্রেতা মো: লিমন জানান, তার কাছ থেকে জিয়াউল হক জুলাই বিপ্লবের পর থেকে প্রথম তিন মাস ৭৫০০টাকা এবং পরের তিন মাস ৪৫০০ টাকাসহ সর্বমোট ১২ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করেন।
গরুর মাংস বিক্রেতা মো: রফিকুল ইসলাম জানান, জিয়াউল হক তার কাছে প্রতি সপ্তাহে ৩/৪ কেজি গরুর মাংস নিতো, মাংসের টাকা চাইলে জিয়াউর হক দিতেন না, মাঝেমধ্যে ৫০০ টাকা ধরিয়ে দিতেন। সে মাংসের বকেয়া টাকা চাওয়ায়, তাকে গত দুই-তিন মাস ধরে ভূমিপল্লিতে মাংস বিক্রয় বন্ধ করে দিয়ে, ভূমিপল্লী থেকে বের করে দেয় এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন করে ভুমিপল্লি আবাসিক এলাকায় প্রবেশ করতেই দিচ্ছেন না।
ফুলগাছ বিক্রেতা মিশু জানান, জিয়াউল হক তার ভাগিনা সিকিউরিটি রিফাত এবং সিকিউরিটি বিপ্লবের মাধ্যমে তার কাছে অগ্রীম ৩ হাজার টাকাসহ প্রতি মাসে ৩ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দিলে ভূমিপল্লি আবাসিক এলাকায় ফুলগাছ বিক্রি করতে দিবে না।
ভূমিপল্লি আবাসিক এলাকায় কর্মরত সিকিউরিটিরা জানান, জিয়াউল হক সাহেব তাদের কাছ থেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেয়। তারপর তার ভাগিনা সিকিউরিটি রিফাত ও সিকিরিটি বিপ্লবের মাধ্যমে ছয় জনকে বলে চাকুরি স্থায়ীকরণের জন্য জন প্রতি ৫,০০০ করে সর্বমোট ৩০,০০০ টাকা চাঁদা দিতে হবে জানান।
ভূমিপল্লি আবাসিক এলাকার সকল বৈধ ও অবৈধ অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে জিয়াউল হকের নেতৃত্বে চলে। বছরে দুই একবার নাম ওয়াস্তে ড্রেন পরিষ্কার, বছরে দুই একবার নামকা ওয়াস্তে রাস্তা মেরামত, বছরে দুই একবার নামকা ওয়াস্তে মশার ঔষধ দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকাসহ, দুধবিক্রেতা, সবজিবিক্রেতা, গাছবিক্রেতা, মধুবিক্রেতাদের কাছ থেকে চাঁদা উত্তোলন করেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত জিয়াউল হক বলেন, এটা নিয়ে মিটিং চলমান রয়েছে। ভূমি পল্লী এলাকায় সেবা নিশ্চিত করণে আমি একটা দায়িত্ব পেয়েছিলাম। আমি কারো কাছে টাকা চাই না। আর টাকা চাওয়ার আমার কোনো এখতিয়ার নেই। ভূমি পল্লী একটি সমিতি।
আমি কোনো অনিয়মের মধ্যে জড়িত থাকলে তা সমিতির ব্যাপার, আমার না। কারণ আমি যদি কোনো অনিয়ম থাকে তাহলে ওই সমিতি আমাকে নোটিশ করবে। কিন্তু তারা এখনো পর্যন্ত আমাকে কোনো নোটিশ করে নাই। আর আমি বিএনপির রাজনীতি করি।
পল্টন থানা পূর্বের কমিটির সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছিলাম। তাই আমি কিভাবে দলের নাম ভাঙ্গাবো। মূলত আমার কাজের কারণে কয়েকজনের স্বার্থের উপর আঘাত এসেছে। তাই তারা এখন আমার বিরুদ্ধে এসব অপপ্রচার করছে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স দ ধ রগঞ জ ব এনপ ন র য়ণগঞ জ ব এনপ র ন ম ভ ঙ গ য় মসজ দ
এছাড়াও পড়ুন:
হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান নির্ধারণে সভা অনুষ্ঠিত
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করতে ভূমির স্থান পুনঃবিবেচনার লক্ষ্যে অংশীজন সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে হবিগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডমিতে এ অংশীজন সভা অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা প্রশাসক ড. মো. ফরিদুর রহমানের সভাপতিত্বে ও হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক আব্দুল্লাহ আল মাসুমের সঞ্চালনায় সভায় প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৈয়দ সায়েম উদ্দিন আহম্মদ।
সভায় মতামত ব্যক্ত করেন, হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার এএনএম সাজেদুর রহমান, জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর মো. আব্দুল হাই, জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি আবুল ফয়েজ মো. খায়রুল ইসলাম, সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর সৈয়দ জাদিল উদ্দিন আহম্মেদ, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দলোনের (বাপা) হবিগঞ্জ শাখার সভাপতি অধ্যাপক ইকরামুল ওয়াদুদ, হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মনসুর উদ্দিন আহমেদ ইকবাল।
আরো মতামত দেন, বিএনপির হবিগঞ্জ জেলা শাখার যুগ্ম-আহবায়ক হাজী এনামুল হক, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর হবিগঞ্জ জেলা আমীর কাজী মাওলানা মখলিছুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক কাজী মহসিন আহমদ, ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি শামসুল হুদা, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সৈয়দ মুশফিক আহমেদ, হবিগঞ্জ জেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক আমিনুল ইসলাম বাবুল, হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ফজলুর রহমান, শোয়েব চৌধুরী প্রমুখ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৈয়দ সায়েম উদ্দিন আহম্মদ স্কেচ ম্যাপ ও গুগল ম্যাপের সহায়তায় সম্ভাব্য সাতটি স্থানের সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য উপস্থাপন করেন। এরপর উপস্থিত অংশীজনরা সম্ভাব্য স্থানগুলো নিয়ে মতামত প্রদান করেন।
জেলা প্রশাসক ড. মো, ফরিদুর রহমান বলেন, “অংশীজনদের মতামত বিবেচনায় নিয়ে ফিজিবিলিটি স্টাডি শেষে হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসের ভূমি চূড়ান্ত করা হবে। এ ক্ষেত্রে হবিগঞ্জবাসীর মতামতের প্রাধান্য যেমন দেওয়া হবে, বিশেষজ্ঞদের মতামতের মাধ্যমে একটি আদর্শ বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে যাতে এ প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠতে পারে তেমন ভূমিই নির্বাচন করা হবে।”
ঢাকা/মামুন/মেহেদী