Prothomalo:
2025-03-10@03:15:00 GMT

সুরা লোকমানের উপদেশগুলো

Published: 5th, February 2025 GMT

সুরা লোকমান পবিত্র কোরআনের ৩১তম সুরা। সুরাটি মক্কায় অবতীর্ণ। এতে ৪ রুকু, ৩৪ আয়াত। যারা নামাজ পড়ে, জাকাত দেয় এবং পরলোকে বিশ্বাস করে, তাদের জন্য পবিত্র কোরআন একটি একক কিতাব ও পথনির্দেশক। লোকমান হাকিম একটি পরিচিত নাম।লোকমান স্বীয় পুত্রের প্রতি আল্লার একত্ব বা তার কৃতজ্ঞতা স্বীকার, মা-বাবার সেবা, নামাজ আদায়, জাকাত প্রদান ও বিপদে ধৈর্য ধারণ সম্পর্কে যেসব উপদেশ দিয়েছিলেন, তা উল্লেখ করা হয়েছে। অহংকার না করা, সংযতভাবে চলাফেরা এবং নম্রভাবে কথা বলার জন্য উপদেশ দিয়ে বলা হয়েছে, গলার আওয়াজের মধ্যে গর্দভের গলাই সবচেয়ে শ্রুতিকটু।

লোকমান তার ছেলেকে উপদেশ দিয়েছিলেন। উপদেশগুলো বদলে দিতে পারে জীবনে চলার ধরন।

উপদেশ–১: আল্লাহর কোনো শরিক কোরো না । আল্লাহর শরিক করা তো চরম সীমালঙ্ঘন।

আরও পড়ুনফজরের নামাজ পড়লে ১০ পুরস্কার পাওয়া যায়২২ নভেম্বর ২০২৩

উপদেশ–২: নামাজে দাঁড়ালে অন্তরের হেফাজত করা। নামাজে দাঁড়ালে তখন মনকে স্থির রাখা কষ্ট হয়ে পড়ে। ধরা যাক কোনো একটা জিনিস হারিয়ে ফেলেছেন। অনেক খুঁজেও পাননি। দেখা যায়, নামাজে দাঁড়াতেই মনে পড়ে, জিনিসটা অমুক জায়গায় শয়তান মনকে স্থির থাকতে দেয় না। নামাজে দাঁড়ালেই সারা দিনের হিসাব কষে। নামাজে দাঁড়ালে কাজের রুটিন তৈরি করে। লোকমান হাকিম বলেন, নামাজের সময় অন্তরের হেফাজত কর।

উপদেশ–৩: খাবার ধীরেসুস্থে খাওয়া। তাড়াহুড়ো করে খাবার খেতে গিয়ে গলায় আটকে যায় অথবা খাবার ওপরে উঠে নাক জ্বালাপোড়া করে। একটু অসতর্কতায় বড় বিপদ ডেকে নিয়ে আসতে পারে। এজন্য লোকমান হাকিম খাওয়ার সময় তাড়াহুড়ো করতে নিষেধ করেছেন।

আরও পড়ুনসুরা ইয়াসিনে আছে এক কাঠমিস্ত্রির ঘটনা০৪ নভেম্বর ২০২৩

উপদেশ–৪ : অন্যের ঘরে গিয়ে এদিক-ওদিক না তাকানো। এ অভ্যাস থাকলে দূর করা উচিত। লোকমান হাকিম বললেন, অন্যের ঘরে যেন চোখের হেফাজত করে। আপনার জন্য তারাও যেন লজ্জিত না হয় আপনিও যাতে লজ্জিত না হন।

উপদেশ–৫: কথা বলা বা ভাষণ দেওয়ার সময় নিজেকে সংযত রাখা। অসতর্কভাবে কথা বললে বিপদ হতে পারে। বেশি কথা বললে নিজের মর্যাদার হানী হয়।

উপদেশ–৬: মৃত্যুকে এক মুহূর্তের জন্যও না ভুলে যাওয়া। মৃত্যুর কথা স্মরণ রাখা। কারণ যে কোনো সময় মৃত্যু চলে আসতে পারে।

উপদেশ–৭: আল্লাহকে স্মরণ করা। আল্লাহ বলেন, তোমরা আমাকে স্মরণ কোরো, আমিও তোমাদের স্মরণ করব (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৫২)। যার অন্তরে সব সময় আল্লাহর জিকির থাকবে, যার জিভ সব সময় আল্লাহর জিকিরে ব্যস্ত থাকবে, আল্লাহ তাঁকে প্রিয় বান্দাদের কাতারে শামিল করে নেবেন।

আরও পড়ুনরুমির ‘মসনভি’তে কোরআনের মর্মবাণী১৫ নভেম্বর ২০২৩

উপদেশ–৮ : কারো উপকার করলে সেটা একেবারের জন্য ভুলে যাওয়া । কেউ কারও কাছে সহজে হাত পাতে না; অভাবে পড়ে কিংবা বিপদে পড়ে মানুষ সাহায্য চায়। উপকার করলে তা নিয়ে খোঁটা দেওয়া যাবে না।

উপদেশ–৯ : কেউ আঘাত দিয়ে থাকলে ভুলে যেতে হবে।

আরও পড়ুনআল্লাহর কাছে আশ্রয় চাওয়া হয় সুরা নাসে০৯ নভেম্বর ২০২৩.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ল কম ন হ ক ম র জন য আল ল হ উপদ শ স মরণ

এছাড়াও পড়ুন:

প্রশাসন কেন এমন নির্বিকার

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ রোপওয়ের (রজ্জুপথ) সংরক্ষিত বাংকার এলাকার যে চিত্র প্রথম আলোর প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, তাতে করে কারও কাছে স্বাধীন–সার্বভৌম অঞ্চল বলে বিভ্রমের সৃষ্টি হতে পারে। হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন ৩৫৯ একরের এই বাংকার থেকে নির্বিচার পাথর লুট করে চলেছে।

গত ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে যে শিথিলতা তৈরি হয়েছে, তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে স্থানীয় প্রশাসনের নির্বিকারতা। ফলে সাত মাসে আনুমানিক ২০০ কোটি টাকার পাথর লুট হয়ে গেছে। নির্বিচার লুটের কারণে বাংকারটি শিগগিরই পাথরশূন্য হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

স্থানীয় লোকজনের বরাতে, আগে মানুষ আড়ালে-আবডালে পাথর তুলত। ৫ আগস্ট বাংকারের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর (আরএনবি) আবাসনসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো ভাঙচুর করা হয়। এর পর থেকে প্রকাশ্যে পাথর তোলা হচ্ছে। মাঝেমধ্যে প্রশাসনের অভিযান চললে লুটপাটকারীরা সটকে পড়ে। অভিযানকারীরা চলে গেলে আবার লুটপাট শুরু হয়। দিনে পাথর উত্তোলন কম হলেও বিকেলের পর থেকে সারা রাত অবাধে চলে।

পাথর তুলে শ্রমিকেরা বারকি নৌকার মালিকদের কাছে বিক্রি করছেন। নৌকার মালিকেরা ক্রাশার মিলমালিকদের কাছে তা বিক্রি করছেন। সেসব পাথর মেশিনে ভেঙে ছোট করে পাথর ব্যবসায়ীদের কাছে সরবরাহ করা হয়। ব্যবসায়ীরা ট্রাক ও পিকআপে করে পাথর দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠান।

ফলে পাথর উত্তোলন, পাথর বিক্রি, পাথর ভাঙা ও পাথর পরিবহন—সব কাজ এতটাই পদ্ধতিগতভাবে চলছে যে পুরো বিষয়টা যে অবৈধ, সেটা কে বলবে? উপজেলা প্রশাসনের ভাষ্য হচ্ছে, নিয়মিত অভিযান চালিয়েও লুটপাট ঠেকানো যাচ্ছে না। অভিযান চালাতে গেলে লুটপাটকারীরা সরে যায়। চলে এলে আবার পাথর উত্তোলন শুরু করে দেয়।

বোঝাই যাচ্ছে, অতি প্রভাবশালী গোষ্ঠী এর পেছনে রয়েছে। ফলে শুধু শ্রমিকদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে এটা বন্ধ করা যাবে না। শ্রমিকদের কাছ থেকে পাথর যাঁরা কিনছেন, যাঁরা ভাঙছেন এবং যাঁরা দেশের বিভিন্ন জায়গায় পাথর পাঠাচ্ছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে এই লুট কি আদৌ বন্ধ করা যাবে?

৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সময় বাংকারটির নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আরএনবির সদস্যরা আক্রান্ত হয়েছিলেন। তাঁদের আবাসনও ভাঙচুর করা হয়েছিল। ফলে তাঁরা দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে একধরনের নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছেন। দিনের বেলা তাঁরা পাহারায় থাকলেও সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত পুরো এলাকা অরক্ষিত থেকে যাচ্ছে।

প্রশ্ন হচ্ছে, এভাবে প্রকাশ্যে পাথর লুট হবে আর প্রশাসন কেন চোখ বন্ধ করে রাখবে? ভোলাগঞ্জের সংরক্ষিত বাংকার এলাকা থেকে যেকোনো মূল্যে পাথর লুট বন্ধ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্রশাসনের নির্লিপ্ততা, অজুহাত কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ