নিখোঁজের ৪ দিন পর পুকুর থেকে ইটবাঁধা অবস্থায় গৃহবধূর লাশ উদ্ধার
Published: 5th, February 2025 GMT
নড়াইলে নিখোঁজের ৪ দিন পর বাগেরহাট থেকে সুরাইয়া শারমিন দৃষ্টি (৩১) নামের এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে ফকিরহাট উপজেলার নলধা মৌভোগ ইউনিয়নের জয়পুর গ্রামের একটি পুকুর থেকে শরীরে ইটবাঁধা ও গলায় রশির ফাঁস লাগানো অবস্থায় মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় গতকাল ফকিরহাট থানায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা করা হয়।
সুরাইয়া নড়াইল পৌরসভার আলাদাতপুরের বাসিন্দা এবং নড়াইল সদর হাসপাতালে আউটসোর্সিংয়ে চাকরি করতেন। তাঁর স্বামী মাহফুজ একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। তাঁদের একটি কন্যাসন্তান আছে। গত শুক্রবার যশোরে একটি কাজের কথা আছে জানিয়ে পরিচিত এক বোনের বাসার উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন ওই গৃহবধূ।
সুরাইয়ার লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। আজ বুধবার সকালে নড়াইল পৌরসভার আলাদাতপুরে তাঁর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তখনো মরদেহটি বাড়িতে পৌঁছায়নি। সেখানে ভিড় করেছেন এলাকার লোকজন, আত্মীয়স্বজন আহাজারি করছেন। মুঠোফোনে মেয়ের ছবি দেখে বারবার কাঁদছেন মা সবেজান বেগম। কোনোভাবেই নিজের মনকে সান্ত্বনা দিতে পারছেন না তিনি।
সবেজান বেগম বলেন, শুক্রবার দুপুরে একসঙ্গে তাঁরা খাবার খেয়েছেন। যশোরে পরিচিত এক আত্মীয়ের কাছে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন সুরাইয়া। এর পর থেকে তাঁর সঙ্গে আর কথা হয়নি। তাঁর ভাষ্য, ‘আমার মেয়ে যদি অসুস্থ থাকত, পাঁচ দিন ভুগত, আমি মনকে বুঝ দিতে পারতাম। এখন তো আমি আমার মনকে বুঝ দিতে পারতিছিনে। আমার মণিরে কত যে কষ্ট দিয়ে মারিছে। আমি তো আমার সন্তানকে ফিরে পাব না। আমার মেয়েকে যারা হত্যা করেছে, তাদের বিচার চাই আমি।’
সুরাইয়ার পরিবারের সদস্যরা জানান, ওই গৃহবধূ যশোরের দড়াটানায় পৌঁছে ছোট বোন বন্যাকে মুঠোফোনে জানিয়েছিলেন। এরপর পরিবারের কারও সঙ্গে তাঁর কোনো যোগাযোগ হয়নি। যশোরে যে নারীর কাছে যাওয়ার কথা ছিল, পরিবারের লোকজন তাঁর কাছে সুরাইয়ার খবর জানতে চান। ওই নারী প্রথমে জানান, ওই গৃহবধূ তাঁর কাছেই আছেন। পরে ওই নারী বিষয়টি অস্বীকার করে জানান, সুরাইয়ার সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে, তিনি খুলনায় এক বান্ধবীর কাছে গিয়েছেন। এরপর বারবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করতে না পেরে শনিবার নড়াইল সদর থানায় একটি জিডি করেন সুরাইয়ার মা। পরে গতকাল বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার জয়পুর গ্রামের একটি পুকুর থেকে সুরাইয়ার মরদেহ উদ্ধারের খবর পায় পরিবার। সেখানে গিয়ে সুরাইয়ার মরদেহটি শনাক্ত করে তারা।
সুরাইয়ার ছোট বোন বন্যা জানান, ‘যেখানে লাশটি উদ্ধার করা হয়েছে, ওই এলাকায় আঁখি নামে তার (সুরাইয়া) এক বান্ধবীর বাসা আছে। আমরা জানতে পারছি, আপু সেখানেই গিয়েছিল।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নড়াইল সদর থানা-পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাজেদুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় ফকিরহাট থেকে দুজনকে আটক করেছে পুলিশ। আর নড়াইল থেকে আজ সকালে একজনকে আটক করা হয়েছে। তাঁকে ফকিরহাট থানায় হস্তান্তর করা হবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান নির্ধারণে সভা অনুষ্ঠিত
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করতে ভূমির স্থান পুনঃবিবেচনার লক্ষ্যে অংশীজন সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে হবিগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডমিতে এ অংশীজন সভা অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা প্রশাসক ড. মো. ফরিদুর রহমানের সভাপতিত্বে ও হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক আব্দুল্লাহ আল মাসুমের সঞ্চালনায় সভায় প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৈয়দ সায়েম উদ্দিন আহম্মদ।
সভায় মতামত ব্যক্ত করেন, হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার এএনএম সাজেদুর রহমান, জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর মো. আব্দুল হাই, জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি আবুল ফয়েজ মো. খায়রুল ইসলাম, সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর সৈয়দ জাদিল উদ্দিন আহম্মেদ, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দলোনের (বাপা) হবিগঞ্জ শাখার সভাপতি অধ্যাপক ইকরামুল ওয়াদুদ, হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মনসুর উদ্দিন আহমেদ ইকবাল।
আরো মতামত দেন, বিএনপির হবিগঞ্জ জেলা শাখার যুগ্ম-আহবায়ক হাজী এনামুল হক, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর হবিগঞ্জ জেলা আমীর কাজী মাওলানা মখলিছুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক কাজী মহসিন আহমদ, ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি শামসুল হুদা, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সৈয়দ মুশফিক আহমেদ, হবিগঞ্জ জেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক আমিনুল ইসলাম বাবুল, হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ফজলুর রহমান, শোয়েব চৌধুরী প্রমুখ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৈয়দ সায়েম উদ্দিন আহম্মদ স্কেচ ম্যাপ ও গুগল ম্যাপের সহায়তায় সম্ভাব্য সাতটি স্থানের সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য উপস্থাপন করেন। এরপর উপস্থিত অংশীজনরা সম্ভাব্য স্থানগুলো নিয়ে মতামত প্রদান করেন।
জেলা প্রশাসক ড. মো, ফরিদুর রহমান বলেন, “অংশীজনদের মতামত বিবেচনায় নিয়ে ফিজিবিলিটি স্টাডি শেষে হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসের ভূমি চূড়ান্ত করা হবে। এ ক্ষেত্রে হবিগঞ্জবাসীর মতামতের প্রাধান্য যেমন দেওয়া হবে, বিশেষজ্ঞদের মতামতের মাধ্যমে একটি আদর্শ বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে যাতে এ প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠতে পারে তেমন ভূমিই নির্বাচন করা হবে।”
ঢাকা/মামুন/মেহেদী