নড়াইলে নিখোঁজের ৪ দিন পর বাগেরহাট থেকে সুরাইয়া শারমিন দৃষ্টি (৩১) নামের এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে ফকিরহাট উপজেলার নলধা মৌভোগ ইউনিয়নের জয়পুর গ্রামের একটি পুকুর থেকে শরীরে ইটবাঁধা ও গলায় রশির ফাঁস লাগানো অবস্থায় মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ।

এ ঘটনায় গতকাল ফকিরহাট থানায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা করা হয়।

সুরাইয়া নড়াইল পৌরসভার আলাদাতপুরের বাসিন্দা এবং নড়াইল সদর হাসপাতালে আউটসোর্সিংয়ে চাকরি করতেন। তাঁর স্বামী মাহফুজ একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। তাঁদের একটি কন্যাসন্তান আছে। গত শুক্রবার যশোরে একটি কাজের কথা আছে জানিয়ে পরিচিত এক বোনের বাসার উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন ওই গৃহবধূ।

সুরাইয়ার লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। আজ বুধবার সকালে নড়াইল পৌরসভার আলাদাতপুরে তাঁর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তখনো মরদেহটি বাড়িতে পৌঁছায়নি। সেখানে ভিড় করেছেন এলাকার লোকজন, আত্মীয়স্বজন আহাজারি করছেন। মুঠোফোনে মেয়ের ছবি দেখে বারবার কাঁদছেন মা সবেজান বেগম। কোনোভাবেই নিজের মনকে সান্ত্বনা দিতে পারছেন না তিনি।

সবেজান বেগম বলেন, শুক্রবার দুপুরে একসঙ্গে তাঁরা খাবার খেয়েছেন। যশোরে পরিচিত এক আত্মীয়ের কাছে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন সুরাইয়া। এর পর থেকে তাঁর সঙ্গে আর কথা হয়নি। তাঁর ভাষ্য, ‘আমার মেয়ে যদি অসুস্থ থাকত, পাঁচ দিন ভুগত, আমি মনকে বুঝ দিতে পারতাম। এখন তো আমি আমার মনকে বুঝ দিতে পারতিছিনে। আমার মণিরে কত যে কষ্ট দিয়ে মারিছে। আমি তো আমার সন্তানকে ফিরে পাব না। আমার মেয়েকে যারা হত্যা করেছে, তাদের বিচার চাই আমি।’

সুরাইয়ার পরিবারের সদস্যরা জানান, ওই গৃহবধূ যশোরের দড়াটানায় পৌঁছে ছোট বোন বন্যাকে মুঠোফোনে জানিয়েছিলেন। এরপর পরিবারের কারও সঙ্গে তাঁর কোনো যোগাযোগ হয়নি। যশোরে যে নারীর কাছে যাওয়ার কথা ছিল, পরিবারের লোকজন তাঁর কাছে সুরাইয়ার খবর জানতে চান। ওই নারী প্রথমে জানান, ওই গৃহবধূ তাঁর কাছেই আছেন। পরে ওই নারী বিষয়টি অস্বীকার করে জানান, সুরাইয়ার সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে, তিনি খুলনায় এক বান্ধবীর কাছে গিয়েছেন। এরপর বারবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করতে না পেরে শনিবার নড়াইল সদর থানায় একটি জিডি করেন সুরাইয়ার মা। পরে গতকাল বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার জয়পুর গ্রামের একটি পুকুর থেকে সুরাইয়ার মরদেহ উদ্ধারের খবর পায় পরিবার। সেখানে গিয়ে সুরাইয়ার মরদেহটি শনাক্ত করে তারা।

সুরাইয়ার ছোট বোন বন্যা জানান, ‘যেখানে লাশটি উদ্ধার করা হয়েছে, ওই এলাকায় আঁখি নামে তার (সুরাইয়া) এক বান্ধবীর বাসা আছে। আমরা জানতে পারছি, আপু সেখানেই গিয়েছিল।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নড়াইল সদর থানা-পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাজেদুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় ফকিরহাট থেকে দুজনকে আটক করেছে পুলিশ। আর নড়াইল থেকে আজ সকালে একজনকে আটক করা হয়েছে। তাঁকে ফকিরহাট থানায় হস্তান্তর করা হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর ব র গ হবধ

এছাড়াও পড়ুন:

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক ৬ লেন দাবিতে কফিনযাত্রা

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক ছয় লেনে উন্নীত করার দাবিতে কফিন নিয়ে পদযাত্রা ও গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পালিত হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে মহাসড়কের লোহাগাড়ার চুনতি জাঙ্গালিয়ায় ‘আমরা ১১ জনে’র ব্যানারে এ কর্মসূচি হয়।

সড়ক দুর্ঘটনায় গত ৩১ মার্চ চুনতি জাঙ্গালিয়ায় ৫ ও ১ এপ্রিল ১১ জন নিহত হন। গতকাল নিহত ১১ জনের কফিন অবয়ব নিয়ে পদযাত্রা হয়। পরে ১১ আন্দোলনকারী কাফন পরে মহাসড়কে প্রায় আধা ঘণ্টা রক্তাক্ত লাশের মতো অবস্থান করেন।

আন্দোলনকারীরা জানান, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক মৃত্যুকূপে পরিণত হয়েছে। এ সড়ক ছয় লেনে উন্নীত করার বিষয়ে সরকারকে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমরা  আর দীর্ঘ লাশের মিছিল চাই না।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ