শিবলী রুবাইয়াতসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
Published: 5th, February 2025 GMT
সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন
৩ কোটি ৭৬ লাখ ২৯ হাজার টাকা ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলামসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থাটির উপপরিচালক মাসুদুর রহমান বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। সংস্থাটির মহাপরিচালক মো.
আসামিরা হলেন- বাংলাদেশ সিকিউরিটি এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন সাবেক চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম,মোনার্ক হোল্ডিং ইনকর্পোরেশনের চেয়ারম্যান জাবেদ এ. মতিন, ঝিন বাংলা ফেব্রিক্সের মালিক আরিফুল ইসলাম, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের এফএভিপি ইসরাত জাহান, ভাইস প্রেসিডেন্ট ও শাখার অপারেশন ম্যানেজার ইকবাল হোসেন ও ব্যাংকটির এসইভিপি, অডিট এন্ড ইনপেকশন ডিপার্টমেন্ট, ও সাবেক শাখা ব্যবস্থাপক সৈয়দ মাহবুব মোরশেদ।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, ভুয়া বাড়ি ভাড়া চুক্তিনামা দেখিয়ে আসামি শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম ১ কোটি ৯২ লাখ টাকা বা প্রায় ২ লাখ ২৬ হাজার ৩০৮ ইউএস ডলার ঘুস গ্রহণ করে এবং ভুয়া পণ্য বিক্রয় চুক্তি দেখিয়ে পণ্য রপ্তানির কৌশলে ১ কোটি ৮৪ লাখ ২৮ হাজার ৮২০ টাকাসহ ৩ কোটি ৭৬ লাখ ২৯ হাজার টাকা ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ আনা হয়েছে মামলায়।
এর আগে গতকাল পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক এই চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এছাড়া তার বিরুদ্ধে ৩ লাখ ৬১ হাজার ডলার বা ৩ কোটি ৬ লাখ ২৭ হাজার ২৪০ টাকা অবৈধ অর্থ ব্যাংকিং চ্যানেলে দেশে আনার সুযোগ করে দেওয়ায় মানিলন্ডারিং ধারায় অভিযোগা আনা হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ১৬১, ১৬৫-এ, ৪২০, ৪৬৮ ও ৪৭১ ধারাসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা ও মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ৪(২) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগের অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াতকে ২০২০ সালে প্রথম দফায় বিএসইসির চেয়ারম্যান হিসেবে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয় আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। বিএসইসির চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার আগে অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত সাধারণ বীমা করপোরেশনেরও (এসবিসি) চেয়ারম্যান ছিলেন।
৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর দলটির ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত অনেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা অন্তর্বর্তী সরকার। সম্প্রতি বিভিন্ন আর্থিক ও অনিয়মের অভিযোগে তাঁর পাসপোর্ট বাতিল করে অন্তর্বর্তী সরকার। এর আগে গত ৯ অক্টোবর দুদকের এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন আদালত।
এছাড়া শিবলী রুবাইয়াত ও তার ছেলে জুহায়ের সারার ইসলামি ব্যাংক থাকা হিসাব স্থগিত করা হয়েছে। একইসঙ্গে অবরুদ্ধ করা হয়েছে তাদের সব বিও (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স) হিসাব।
অভিযোগ রয়েছে, বিএসইসির চেয়ারম্যান থাকাকালীন পুঁজিবাজারের কারসাজির সঙ্গে জড়িয়ে পরেন। মিলিয়ন ডলার জালিয়াতির সঙ্গে যুক্ত একটি ব্যাংক হিসাব থেকে শিবলী রুবাইয়াতের কাছে অর্থ এসেছে বলে অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন রিপোর্টিং প্রজেক্টের (ওসিসিআরপি) প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
এএ
উৎস: SunBD 24
এছাড়াও পড়ুন:
কাজে ফিরেছেন বিএসইসির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা
কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে কাজে ফিরেছেন পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। আজ রোববার সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কার্যালয়ে নিজ নিজ কাজে ফিরেছেন। বিএসইসি অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের কর্মবিরতি স্থগিত করায় তারা কাজে ফিরেছেন।
গত বুধবার সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমানের বাধ্যতামূলক অবসরকে কেন্দ্র করে বিএসইসির বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও তিন কমিশনারের কাছে চার দফা দাবি তুলে ধরেন।
দাবি আদায়ে বিএসইসির কার্যালয়ের বিদ্যুৎ সংযোগ, সিসিটিভি সংযোগ বিচ্ছিন্ন, মূল ভবনের ফটক বন্ধ করে চেয়ারম্যান ও তিন কমিশনারকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। এরপর সেনাসদস্যরাসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা এসে চেয়ারম্যান ও তিন কমিশনারকে ‘অবরুদ্ধ’ অবস্থা থেকে উদ্ধার করেন। এই উদ্ধার অভিযানকালে বিএসইসির কয়েকজন কর্মকর্তা–কর্মচারী আহত হন। এর প্রতিবাদে চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে গত বৃহস্পতিবার থেকে কর্মবিরতির ঘোষণা দেন বিক্ষুব্ধ কর্মকর্তা–কর্মচারীরা।
বিএসইসিতে বৃহস্পতিবার অচলাবস্থা ছিল। এই অচলাবস্থার মধ্যে ওই দিন বেলা ৩টায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থার মধ্যে কার্যালয়ে আসেন চেয়ারম্যান ও কমিশনাররা। অন্যদিকে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মবিরতি অব্যাহত রাখেন।
এদিকে বুধবারের ঘটনায় বিএসইসির ১৬ কর্মকর্তা–কর্মচারীকে আসামি করে শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা হয়েছে। বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের গানম্যান বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার এ মামলা করেন। এই মামলার পর সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে কর্মকর্তা–কর্মচারীরা কর্মবিরতি বাদ দিয়ে স্বাভাবিক কাজে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন।
এ বিষয়ে অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশের পুঁজিবাজার বর্তমানে ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। দেশের পুঁজিবাজারের স্বার্থে ও বিশ্বদরবারে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের ভাবমূর্তি যাতে বিনষ্ট না হয়, তা নিশ্চিত করতে বিএসইসি অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন কমিশনের সব স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিজ নিজ দপ্তরের কাজে নিয়মিতভাবে যোগদানের উদাত্ত আহ্বান জানানো হচ্ছে।
এদিকে বিএসইসিতে গত বুধ ও বৃহস্পতিবার ঘটে যাওয়া ঘটনায় আজ কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করতে এসেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই), চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই), ডিএসই ব্রোকারস অ্যাসোসিয়েশন বা ডিবিএ, সেন্ট্রাল ডিপজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিডিবিএল), শীর্ষস্থানীয় কয়েকটি ব্রোকারেজ হাউসের শীর্ষ নির্বাহীরা। বেলা ১১টায় এসব সংগঠনের শীর্ষ নেতারা ও ব্যক্তিরা বিএসইসির চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বৈঠক চলছিল।