পৃথিবীতে শুরু থেকে পানি ছিল, নাকি বাইরের কোনো উৎস থেকে পানি এসেছে, তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে বিজ্ঞানীদের মধ্যে। কোনো কোনো বিজ্ঞানীর ধারণা, পৃথিবীতে প্রথম জীবের আবির্ভাব হওয়ার আগেই পানির উপস্থিতি ছিল। আবার কারও ধারণা, সৌরজগতে থাকা গ্রহাণুর মাধ্যমে পানি এসেছে পৃথিবীতে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের রুটজার্স বিশ্ববিদ্যালয় নিউ ব্রান্সউইকের একদল বিজ্ঞানী জানিয়েছেন, পৃথিবীতে পানি আগের ধারণার চেয়ে অনেক পরে এসেছে। পৃথিবী তার গঠনের চূড়ান্ত পর্যায়ে পানি পেয়েছে। নতুন এই আবিষ্কার পৃথিবীতে প্রাণের বিকাশের ক্ষেত্রে নতুন তথ্য দিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

পৃথিবীতে পানির উৎসের সময় বিষয়ে বিজ্ঞানী ক্যাথরিন বার্মিংহাম বলেন, ‘পৃথিবীতে কখন পানি এসেছে, তা গ্রহবিজ্ঞানের জন্য একটি উত্তরহীন প্রশ্ন। যদি আমরা উত্তরটি জানি, তাহলে জীবন কখন ও কীভাবে বিকশিত হয়েছিল, তা আমরা আরও ভালোভাবে জানতে পারব। নতুন গবেষণা বলছে, পৃথিবী গঠনের প্রাথমিক পর্যায়ে পানির উপস্থিতি ছিল না। অনেক পরে পানির সন্ধান মেলে পৃথিবীতে।’

আরও পড়ুনপৃথিবীর গভীরে কী রয়েছে০২ নভেম্বর ২০২৩

পৃথিবীর প্রাথমিক রাসায়নিক ইতিহাস সম্পর্কে জানতে স্মিথসোনিয়ান ইনস্টিটিউশনের ন্যাশনাল মিউজিয়াম অব ন্যাচারাল হিস্ট্রি থেকে উল্কাপিণ্ডের নমুনা পরীক্ষা করেছেন বিজ্ঞানীরা। সেই উল্কাপিণ্ডে থাকা মলিবডেনাম আইসোটোপ নতুন কৌশলে পরীক্ষা করেন তাঁরা। মলিবডেনামের আইসোটোপ পৃথিবীর ভূত্বক ও উল্কাপিণ্ড উভয়ের মধ্যেই পাওয়া যায়। এ বিষয়ে বিজ্ঞানী বার্মিংহাম বলেন, ‘পৃথিবীর শিলার মলিবডেনাম আইসোটোপ সংমিশ্রণ আমাদের পৃথিবীর মূল গঠনের সময় ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনার তথ্য প্রদান করে। সে সময় পৃথিবীর শেষ ১০ থেকে ২০টি উপাদান একত্র হচ্ছিল।’

আরও পড়ুনপৃথিবীর বাইরে কিসের কিচিরমিচির শুনছেন বিজ্ঞানীরা০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

বিজ্ঞানীরা সৌরজগতে উৎপত্তিস্থলের ভিত্তিতে উল্কাকে দুটি প্রধান দলে শ্রেণিবদ্ধ করেন। সিসি উল্কাপিণ্ডরা এসেছে সৌরজগতের বাইরে থেকে। আর এনসি উল্কাপিণ্ডের উৎপত্তি অভ্যন্তরীণ সৌরজগতে। গবেষণায় এনসি গ্রুপের উল্কাপিণ্ড বিশ্লেষণ করা হয়। বিশ্লেষণে দেখা গেছে, পৃথিবীর শিলায় থাকা মলিবডেনাম আইসোটোপের সঙ্গে এনসি উল্কাপিণ্ডে থাকা মলিবডেনামের বেশ মিল রয়েছে। এ বিষয়ে বিজ্ঞানী বার্মিংহাম বলেন, ‘আমাদের সৌরজগতে পৃথিবীর বিল্ডিং ব্লক বা গঠন উপাদানের ধূলিকণা ও গ্যাস কোথা থেকে এসেছিল ও কী ঘটেছিল, তা খুঁজে বের করতে হবে।’

সূত্র: আর্থ ডটকম

আরও পড়ুনএক সেকেন্ডের জন্য পৃথিবীর ঘূর্ণন বন্ধ হলে কী হতে পারে০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আইস ট প

এছাড়াও পড়ুন:

ময়মনসিংহে সাহিত্য আড্ডার স্থানসহ নানা স্থাপনা গুঁড়িয়ে দিল প্রশাসন

ময়মনসিংহ ব্রহ্মপুত্র নদীর তীরে গড়ে উঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে যৌথ অভিযানে নেমেছে জেলা প্রশাসন ও ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন। এ সময় সাহিত্য সংসদের ‘বীক্ষণ’ আসরের সাহিত্য আড্ডার স্থাপনাসহ পার্কের ভেতরে এবং বাইরে গড়ে উঠা ভ্রাম্যমাণ দোকান, বিজয়ী পিঠা বাড়িসহ সব ধরনের অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। আজ বুধবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত নগরীর সার্কিট হাউজ মাঠ সংলগ্ন জয়নুল উদ্যান পার্কে এই অভিযান চালানো হয়। 

এ অভিযানের এক পর্যায়ে জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. মুফিদুল আলম নিজে উপস্থিত থেকে উচ্ছেদ কার্যক্রম তদারকি করেন। এ সময় পার্কের সৌন্দর্য রক্ষা এবং প্রাকৃতিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে প্রশাসনের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানান নগরবাসী। তবে এ উচ্ছেদ অভিযানে ক্ষোভ ও অসেন্তাষ প্রকাশ করেছেন কবি সাহিত্যিকরা। তারা এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, প্রায় ৪০ বছর ধরে এই স্থানটিতে দেশের খ্যাতনামা এবং নবীণ কবি সাহিত্যকদের নিয়ে সপ্তাহের প্রতি শুক্রবার বসে সাহিত্য সংসদের ‘বীক্ষণ’ আসর নামে সাহিত্য আড্ডা। এতে কবিতা পাঠের পাশাপাশি শিল্প সংস্কৃতি নিয়ে চলে আলোচনা ও মতবিনিময়।

স্থানীয়রা জানান, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের ফলে পার্কটি তার স্বরূপ ফিরে পাবে। এতে আমার মত অন্য দর্শনার্থীরা প্রকৃতির নিরিবিলি পরিবেশে সময় কাটাতে পারবে।  

নতুন বাজার এলাকার শাহজাহান কবির বলেন, একাধিকবার পার্কেও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ হলেও প্রভাবশালী মহলের মদদে ফের তৈরি হয় অবৈধ স্থাপনা। কিন্তু দর্শনার্থীরা চায় পার্কের নিরিবিলি ও মনোরম পরিবেশ। তবে এ উচ্ছেদ অভিযানে ক্ষোভ ও অসেন্তাষ প্রকাশ করেছেন কবি সাহিত্যিকরা। তারা এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, প্রায় ৪০ বছর ধরে এই স্থানটিতে দেশের খ্যাতনামা এবং নবীণ কবি সাহিত্যকদের নিয়ে সপ্তাহের প্রতি শুক্রবার বসে সাহিত্য সংসদের ‘বীক্ষণ’ আসর নামে সাহিত্য আড্ডা। এতে কবিতা পাঠের পাশাপাশি শিল্প সংস্কৃতি নিয়ে চলে আলোচনা ও মতবিনিময়। 

ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের সচিব সুমনা আল মজীদ বলেন, মূলত জেলা প্রশাসনের জায়গা থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। এর মূল উদ্দেশ্য জয়নুল উদ্যোনের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি এবং প্রকৃতির নির্মল পরিবেশ গড়ে তোলা। তাছাড়া পার্কের বেশ কয়েকটি স্থাপনায় দীর্ঘদিন ধরে অসামসাজিক কার্যকলাপ চলার অভিযোগে অভিযান চালানো হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ