রাজশাহীতে শেখ হাসিনাসহ ২৭ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন
Published: 5th, February 2025 GMT
কারাগারে থাকা অবস্থায় বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টুর মৃত্যুর ঘটনায় রাজশাহীর আদালতে মামলার আবেদন করা হয়েছে। এতে আসামি হিসেবে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মোট ২৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে প্রয়াত নাসির উদ্দিন পিন্টুর ভাই নাসিম আহমেদ রিন্টু রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতে মামলার আবেদন করেন। আদালতে রিন্টুর পক্ষে আইনজীবী আবদুল মালেক রানা মামলার আবেদন উপস্থাপন করেন।
আদালতে রিন্টুর সঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সহ-সম্পাদক শফিকুল হক মিলন, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন তপু, নগর যুবদলের সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ সুইট, ছাত্রদল নেতা এমদাদুল হক লিমনসহ দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
আরো পড়ুন:
গোপালগঞ্জে দেয়ালে দেয়ালে ‘শেখ হাসিনাতেই আস্থা’ পোস্টার
বাবার হত্যাকারীদের শেখ হাসিনা রক্ষা করেছেন: রেজা কিবরিয়া
মামলার আরজিতে দেখা গেছে, আসামির তালিকায় রয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, সাবেক মন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, আসাদুজ্জামান কামাল, আনিসুল হক, হাজী মো.
এছাড়াও তৎকালীন আইজিপি, তৎকালীন আইজি প্রিজন, তৎকালীন ঢাকা ও রাজশাহীর ডিআইজি প্রিজন, রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের তৎকালীন সিনিয়র জেল সুপার শফিকুল ইসলাম, জেলার শাহাদত হোসেন, কারা চিকিৎসক আবু সায়েম, কয়েদি রাব্বানী ও বিডিআর বিদ্রোহ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আবু কাহার আকন্দের নাম রয়েছে মামলার আসামিদের তালিকায়।
ছাত্রদলের সভাপতি থাকা অবস্থায় ২০০১ সালের নির্বাচনে ঢাকার লালবাগ-কামরাঙ্গীরচর চর আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন নাসির উদ্দিন পিন্টু। পরে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক হন তিনি। ঢাকার পিলখানা হত্যা মামলায় তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছিল। এ ছাড়া, একটি অস্ত্র লুটের দায়ে তার ১০ বছরের কারাদণ্ড হয়েছিল।
নাসির উদ্দিন পিন্টু ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে নির্বাচন করতে মনোনয়নপত্রও জমা দিয়েছিলেন। তবে আদালতে সাজা হওয়ায় মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে যায়। নির্বাচন করতে পারেননি তিনি।
নারায়ণগঞ্জ কারাগার থেকে ২০১৫ সালের ২০ এপ্রিল পিন্টুকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। কয়েক দিন পরে তিনি অসুস্থবোধ করলে ২৬ এপ্রিল তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। এরপর তাকে আবার কারাগারে নেওয়া হয়। পরে নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে চিঠি দিয়ে কারাগারে চিকিৎসক ডাকা হয়। চিঠি পেয়ে একজন চিকিৎসক গেলেও তাকে কারাগারে ঢুকতে দেওয়া হয়নি অভিযোগ ওঠে। ২০১৫ সালের ৩ মে দুপুরে কারাগার থেকে পিন্টুকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ কারণে নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন-২০১৩ এর ৭ (১) ধারা মতে আদালতে এ মামলার আবেদন করা হয়েছে।
নাসির উদ্দিন পিন্টুর ভাই নাসিম আহমেদ রিন্টু বলেন, “আমার ভাইয়ের জনপ্রিয়তা ও বিএনপির প্রতি তার অবদানকে ভয় পাচ্ছিল হাসিনা সরকার। তাই তাকে পরিকল্পিতভাবে পিলখানা মামলায় ফাঁসিয়ে সাজা দেওয়া হয়। এরপর কারাগারে নিয়ে হত্যা করা হয়।”
তিনি আরো বলেন, “গ্রেপ্তারের পর নির্যাতনের কারণে আমার ভাই প্রচণ্ড অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তার সুচিকিৎসা নিশ্চিতে পরিবারের পক্ষ থেকে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছিল। হাইকোর্ট আদেশ দিয়েছিলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ আই হসপিটালে নিজ খরচে তার নিয়মিত চিকিৎসা চলবে। কিন্তু হাইকোর্টের আদেশ অমান্য করে তাকে ঢাকায় না রেখে প্রথমে নারায়ণগঞ্জ ও পরে রাজশাহী কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর চিকিৎসা না করে সুপরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করা হয়।”
নাসিম আহমেদ রিন্টুর আইনজীবী আবদুল মালেক রানা বলেন, “আদালতে মামলার আরজি জমা দেওয়া হয়েছে। আদালত বক্তব্য শুনেছেন। তবে তাৎক্ষণিকভাবে আদালত কোনো আদেশ দেননি। আজ বিকেলে কিংবা পরে আদালত আদেশ দিতে পারেন। তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য এটি কোনো তদন্ত সংস্থার কাছে পাঠানো হতে পারে।”
ঢাকা/কেয়া/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ আওয় ম ল গ ব এনপ র তৎক ল ন চ ক ৎসক আহম দ
এছাড়াও পড়ুন:
হঠাৎ কেন ঘোড়ার পিঠে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এ মডেল
টগবগ করে ছুটছে ঘোড়া। রাজধানীর একশ ফিটের এলাকায় ঘোড়ার পিঠে চড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তারকা মডেল সায়রা আক্তার জাহান। কোনো শুটিংয়ের আয়োজন নেই। নেই চিরচেনা লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশনেরও হাঁকডাক। কাছে আসতেই অনেকে চিনে ফেলেছেন সায়রাকে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কেউ কেউ এই দৃশ্যও দেখছেন। তাহলে কি তিনি কোনো সিনেমা কিংবা ওয়েব সিরিজে শুটিংয়ের জন্য ঘোড়ায় চড়া শিখছেন। বিষয়টি পরিষ্কার করলেন সায়রা নিজেই।
সমকালকে তিনি বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই আমি ঘোড়াপাগল ছিলাম। ইচ্ছা ছিল হর্স রাইডিং শিখব। এ জন্য মূলত শেখা। মরুভূমিতে ঘোড়ায় চড়ার বিষয়টি কল্পনা করতাম আমি। ঘোড়া সহজাতভাবে মহৎ। এ কারণে প্রাণীটির প্রতি আমার মায়া অনেক। আমাদের সবার এমন কিছু আছে, যা আমরা কল্পনা ও অনুভব করি। আমার জন্য এটি ছিল সর্বদা ঘোড়া। অবশেষে, আমার দিবাস্বপ্ন সত্য হয়েছে। ঘোড়ার পিঠে চড়ার প্রথম স্বাধীন অভিজ্ঞতা আমার পরিকল্পনা অনুযায়ী হয়নি। তবে আমার জন্য এটি সহজ করায় বন্ধু ইমরান ওসমানকে ধন্যবাদ জানাই। সে ঘোড়াপ্রেমীদের জন্য ‘বুরাক’ নামে ঘোড়ার রাইডিং স্কুল খোলার উদ্যোগ নিয়েছে। সপ্তাহের একটি নির্দিষ্ট সময় আমি সেখানে ক্লাস করছি।’
শুধু প্যাশন ছিল বলেই ঘোড়া চালনা শিখছেন নাকি অন্য কোনো বিষয় মাথায় রেখেছেন? ‘হ্যাঁ, অন্য একটি কারণও আছে। ঘোড়া নিয়ে পুরোপুরি অ্যাকশনধর্মী সিনেমা এদেশে এখনও কেউ বানায়নি। আমি চাই আগামীতে কেউ এ ধরনের গল্প নিয়ে সিনেমা নির্মাণ করুক। তখন চাইলেই আমি কাজ করতে পারব।’
হর্স রাইডিংয়ের অভিজ্ঞতা নিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘ঘোড়া চালনা খুব উপভোগ করছি। যারা ঘোড়াপ্রেমী তাদের এটি অবশ্যই অনেক ভালো লাগবে। প্রথমে একটু ভয় কাজ করছিল। পরে ঠিক হয়ে গেছে। ঘোড়ার পিঠে ওঠা আমার জন্য অনেক সহজ। এখন ঘোড়া নিয়ে দৌড়ানো শিখছি। আশা করছি, কিছুদিনের মধ্যে তা আয়ত্ত হবে। নতুন বছরের শুরুতে শেখা শুরু করেছি। শরীরে যতদিন শক্তি থাকবে, ততদিনই শিখব। কারণ এটি আমার প্যাশন। যে কেউ কনফিডেন্ট হলেই ঘোড়া চালনা শিখতে পারবে। তবে এ কাজে অবশ্যই লেগে থাকতে হবে।’
বিজ্ঞাপন ও মিউজিক ভিডিও দিয়ে শোবিজে যাত্রা শুরু সায়রার, এরপর বড় পর্দায় অভিষেক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করে একটি বহুজাতিক কোম্পানিতে চাকরি শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে হঠাৎই কাজ থেকে বিরতি নেন।
গত ভালোবাসা দিবসে মুক্তি পেয়েছে তাঁর অভিনীত ক্লোজআপ কাছে আসার গল্প ‘লেগুনা’। আবুল খায়ের চাঁদের পরিচালনায় এ গল্পে তাঁকে দেখা গেছে মফস্বলের এক মেয়ের চরিত্রে। এরপর আরও কিছু কাজ করেছেন। এবারও ভালোবাসা দিবসে ভিন্ন আয়োজনে তাঁকে পাওয়ার যাবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন সায়রা।