সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, একটা দায়িত্বশীল দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর কিছু করণীয় আছে বলে আমরা মনে করি। ২৪ এর আন্দোলনে আমরাও শহীদ ছিলাম। আন্দোলনের মাধ্যমে পুরো জাতি যেমন মুক্তি পেয়েছে, তেমনই সবচেয়ে নির্যাতিত রাজনৈতিক দলটিও একইভাবে মুক্তি পেয়েছে। সুতরাং, এই প্রজন্মের প্রতি কৃতজ্ঞতা আদায় করা প্রয়োজন।

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত ‘জুলাই ২০২৪ বিপ্লবের শহীদ স্মারকের’ মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

জামায়াতের আমির বলেন, আমরা শহীদ পরিবারগুলোর কাছে গিয়েছি, তাদের প্রতি সম্মান দিতে ও তাদের থেকে দোয়া নিতে। কারণ তারা সৌভাগ্যবান, তাদের পরিবার দেশের জন্য জীবন দিয়েছে।

ডা.

শফিকুর রহমান বলেন, কিছু ইতিহাস মানুষের জন্য হয় আনন্দের, কিছু হয় বিষাদের, আর কিছু হয় গৌরবের। বিশেষত যারা দেশের জন্য জীবন দেন, অতীতেও দিয়েছেন ৪৭ সালে, বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন ও ৭১ সালে এবং সর্বশেষ ২৪ এর জুলাইয়ে। তাদের ইতিহাসটা গৌরবের।

তিনি বলেন, আজ যে গণমাধ্যমগুলো এখানে এসেছে, তারাও কিন্তু ফ্যাসিবাদের থাবা থেকে মুক্ত ছিলেন না। সেসময় তাদেরকেও জীবন দিতে হয়েছে, রিমান্ডের নামে নির্যাতন ভোগ করতে হয়েছে। বিদেশে বসে যারা বাক এবং কলমযুদ্ধ চালিয়েছিলেন, দেশের মাটিতে তাদের পরিবারকে হেনস্থা করা হয়েছে, জেলে পুরে দেওয়া হয়েছে। এমনকি নারীদেরকেও ছাড় দেওয়া হয়নি। তাদের রুচি যে কত নিম্নস্তরের ছিল, এসব কর্মকাণ্ড থেকেই তা বোঝা যায়। যারা নিজেদের জীবনটা বিলিয়ে দিয়ে আমাদের আজকের এই পরিবেশটি উপহার দিলেন, তাদের প্রতি আমি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।

জামায়াতের আমির বলেন, দেশ আমাদের সবার। কিন্তু দিন শেষে দেশের পাহারাদারিত্ব করা কিন্তু সব নাগরিকের কর্ম নয়। এই কাজ কিছু লোক করে। আবার কিছু লোক নাগরিকদের শান্তি কেড়ে নেওয়ার মতো অপকর্মে লিপ্ত হয়। আর অপকর্মটি যারা করে, তারা এটিকে তাদের পেশা মনে করেই করে। একটা সময় তা নিজের অধিকার বলেই মনে করে, আর জনগণকে নিজের প্রজা মনে করে, আর নিজেরা রাজা হয়ে বসে। কিন্তু গাছের ডালে যখন ঝাঁকুনি দেওয়া হয়, ডালের রাজারা তখন উড়ে গিয়ে পড়ে যায়।

তিনি বলেন, আমরা এখনও পরিপূর্ণভাবে ইতিহাস রচনা করতে পারিনি। জুলাই আন্দোলনে আহতরা এখন হতাশায় পড়ে যাচ্ছেন। এসময় জাতির পক্ষ থেকে একটি দায়িত্বশীল ভূমিকা নিয়ে এগিয়ে যাওয়া দরকার। অতীতে যারা ফ্যাসিস্ট শাসক ছিল, তাদের নাম ধর্মগ্রন্থেও উঠে এসেছে। একই পরিণতি সবাইকে ভোগ করতে হয়। দুঃখের বিষয় হচ্ছে, ফ্যাসিস্টরা ইতিহাস পড়ে, কিন্তু তার থেকে শিক্ষা নেয় না। আমাদের দেশের ইতিহাস বিকৃতির ইতিহাস। দেশের ইতিহাস অনেকে যার যার মতো রচনা করেছেন।

এম জি

উৎস: SunBD 24

এছাড়াও পড়ুন:

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সংগঠকসহ আটক ২, দেশীয় অস্ত্র ও ইয়াবা উদ্ধার

নারায়ণগঞ্জ শহরের ৩০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে যৌথ বাহিনীর অভিযানে জিদান নামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক সংগঠকসহ দুইজনকে আটক করা হয়েছে। এসময় জিদানের কাছ থেকে ৪ পিছ ইয়াবা ও একটি সুইস গিয়ার চাকু উদ্ধার করা হয়েছে। 

আটককৃতরা হলেন- বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নারায়ণগঞ্জ জেলা সংগঠক মো. জিদান ও  ৩০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের দালাল ইকবাল হোসেন। রোববার (৯ মার্চ) দুপুরে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে যৌথবাহিনী এ অভিযান চালায়। পরে আটককৃতদের সদর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

আটক জিদানের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, হাসপাতালের দালালি, ইয়াবা বিক্রি ও সেবনসহ নানা অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে।  এ ঘটনার পর মো. জিদানকে সংগঠন থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটি।

জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় অতি সামান্য আহত হয় জিদান। আহত হওয়ার সুবাদে নারায়ণগঞ্জ-৩০০ শয্যা বিশিস্ট হাসপাতাল তথা খানপুর হাসপাতালে চিকিৎসা নেয় সে। চিকিৎসা নেয়ার সময় হাসপাতালের দালাল চক্রের হোতা নুরুল ইসলামসহ অন্যদের সাথে সখ্যতা গড়ে উঠে তার। 

পরবর্তীতে সুস্থ হয়ে দালালদের গডফাদার নুরুল ইসলামের সাথে মিলে হাসপাতালের ঔষুধ চুরি, হাসপাতালে বসে ইয়াবা সেবন ও বিক্রি সহ নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়ে। এমন বেশ কিছু অভিযোগের প্রেক্ষিতে যৌথ বাহিনী তার বিরুদ্ধে গোপন তদন্ত শুরু করে। তদন্ত করতে গিয়ে তারা জিদান ও তার সহযোগীদের নানা অপকের্মর সত্যতা পায়। 

যারা গোপনে তদন্ত করছিলেন তারা খবর পান একটি কক্ষে জিদান ও তার সহযোগীরা ইয়াবা সেবন করছে। এসময় তারা ঐ কক্ষে প্রবেশ করলে জিদান ও তার সহযোগীরা তাদেরকে আটকে রেখে নির্যাতন করে। মারধরের শিকার ব্যক্তিরা যৌথ বাহিনীকে বিষয়টি জানালে তারা অভিযান পরিচালনা করে চারজনকে উদ্ধার করে এবং জিদান ও তার এক সহযোগী ইকবাল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে।

জিদানের ব্যাগ থেকে একটি সুইস গিয়ার ও ৪ পিছ ইয়াবা উদ্ধার করে যৌথ বাহিনী। পরে তাদের দুজনকে নারায়ণগঞ্জ সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানা গেছে। 

পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, জিদান হোসেন ছাত্রনেতার পরিচয়ে হাসপাতালের স্টাফদের হুমকি দিয়ে আসছিলেন এবং নানা অনৈতিক সুবিধা আদায় করছিলেন। পাশাপাশি, তিনি হাসপাতালের অভ্যন্তরে ইয়াবা সেবন ও বিক্রির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। বিষয়টি নিয়ে কয়েকজন ভুক্তভোগী সেনাবাহিনীর কাছে অভিযোগ করলে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে যৌথ বাহিনী অভিযান চালায় এবং ঘটনাস্থল থেকে তাদের আটক করা হয়।

এদিকে, আটকের পরপরই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা কমিটি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জিদান হোসেনকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করার ঘোষণা দেয়। জেলা কমিটির আহ্বায়ক নিরব রায়হান ও সদস্য সচিব মোহাম্মদ জাবেদ আলম স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, সংগঠনের নীতি ও আদর্শের পরিপন্থী কাজে লিপ্ত থাকার কারণে জিদান হোসেনকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হলো। বহিষ্কৃত ব্যক্তির কোন ধরণের অপকর্মের দায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, নারায়ণগঞ্জ জেলা নিবে না। জেলায় দায়িত্বরত সকল পর্যায়ের ব্যক্তিদের তার সঙ্গে সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখার নির্দেশনা প্রদান করা হলো।

তারা আরও বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কখনো চাঁদাবাজ, দখলদারীত্ব, অবৈধ কারবারি, নীতি-আদর্শ ও শৃঙ্খলা পরিপন্থি, রাষ্ট্র বিরোধী, আইন বিরোধী কার্যকলাপ সমর্থন করে না। যদি কেউ এতে জড়িত আছে বলে প্রমাণিত হয় তবে তার বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, নারায়ণগঞ্জ জেলা দায়বদ্ধ থাকবে না এবং তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ আইনত ব্যবস্থা নেয়ার ব্যাপারে কোন প্রকার আপত্তি থাকবে না। 

নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. এমএ বাশার বলেন, দুপুর ১২ টার সময় দালাল ধরতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা আসেন। তারা সাদা পোষাকে থাকায় তাদের সাথে হাসপাতালের একজন স্টাফ নজরুলের সাথে তাদের কথা কাটাকাটি হয়। 

এসময় নজরুল তাদেরকে এক রুমে বসতে বলেন। পরবর্তীতে সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে নজরুলসহ দালাল চক্রের বেশ কয়েকজনকে আটক করে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে আমি সেনাবাহিনীকে জানালে তারা হাসপাতালের স্টাফ নজরুলকে ছেড়ে দেয়।

নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দিন জানান, জিদান হোসেন নামে এক ছাত্র সংগঠক ও তার সহযোগী ইকবাল হোসেনকে আটক করেছে যৌথ বাহিনী। তাদের কাছ থেকে একটি সুইস গিয়ার ও ৪ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে। আটককৃতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সংগঠকসহ আটক ২, দেশীয় অস্ত্র ও ইয়াবা উদ্ধার
  • মাদক ব্যবসায়ী ও মাদক সেবীদের স্থান যুবদলে হবে না : সজল