সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে হামলার শিকার হয়েছেন অন্তত তিন গণমাধ্যমকর্মী। সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বর্ধিত ভবনের সামনে আজ বুধবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। আহত এক সাংবাদিককে বেসরকারি একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এদিকে সুপ্রিম কোর্টে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে আইন, বিচার ও মানবাধিকারবিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ল রিপোর্টার্স ফোরাম (এলআরএফ)।

পাবনার ঈশ্বরদীতে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা শেখ হাসিনাকে বহনকারী ট্রেনে গুলি ও বোমা হামলার অভিযোগে করা মামলায় আজ রায়ের দিন ধার্য ছিল। এ উপলক্ষে বিএনপির নেতা-কর্মীদের আদালত ও আদালত প্রাঙ্গণে উপস্থিত হতে দেখা যায়। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রায় ঘোষণা শেষ হয়।

সাধারণত কোনো মামলা, মামলার রায় ও আদেশের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট আইনজীবী বা পক্ষ হাইকোর্টের বর্ধিত ভবনের সামনে ব্রিফিং করে থাকে।

একাধিক প্রত্যক্ষদর্শীর ভাষ্যমতে, রায় ঘোষণার পর বর্ধিত ভবনের সামনে গণমাধ্যমকর্মীরা আইনজীবীদের বক্তব্য নেওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এ সময় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিবসহ পাবনা জেলা বিএনপির নেতা–কর্মীরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শীর ভাষ্য অনুযায়ী, একপর্যায়ে এক যুবক সাংবাদিকদের ঠেলে সেখানে রাখা ডায়াসের সামনে চলে আসেন। এ নিয়ে তর্ক হয়। সেখানে উপস্থিত পাবনা থেকে আসা বিএনপির নেতা-কর্মীরা সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হন। গণমাধ্যমকর্মীদের কিল–ঘুষি ও লাথি মারেন। এতে কয়েকজন সাংবাদিক আহত হন। এর মধ্যে সেখানে উপস্থিত হয়ে বিএনপির আইন সম্পাদক কায়সার কামাল ও বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস পরিস্থিতি শান্ত করেন। পাশাপাশি কায়সার কামাল মারধরের শিকার জাবেদ আখতারকে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির অ্যাম্বুলেন্সে কাকরাইলের ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে পাঠান।

জাবেদ আখতার বেসরকারি টিভি চ্যানেল এটিএন নিউজের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক ও ল রিপোর্টার্স ফোরামের প্রশিক্ষণ ও কল্যাণ সম্পাদক। ল রিপোর্টার্স ফোরাম এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, জাবেদ আখতারকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এর আগে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিকেরা ব্রিফিং বর্জন করে হাইকোর্ট বিভাগের বর্ধিত ভবনের সামনে ব্রিফিংস্থলে বসে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।

দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি

আইন, বিচার ও মানবাধিকারবিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ল রিপোর্টার্স ফোরামের (এলআরএফ) ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হাসান জাবেদ ও সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মিশন এক বিবৃতিতে বলেন, পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় সাংবাদিকদের ওপর হামলা কোনোভাবে কাম্য নয়। জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়।

ল রিপোর্টার্স ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম নূর মোহাম্মদের সই করা বিবৃতিতে বলা হয়, আজ পাবনার ঈশ্বরদীতে শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার মামলায় রায় হয় হাইকোর্টে। ওই রায়ের পর আইনজীবীদের বক্তব্য নেওয়ার জন্য সুপ্রিম কোর্টের অ্যানেক্স ভবনের সামনে অপেক্ষা করছিলেন গণমাধ্যমকর্মীরা। সে সময় ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানোর জন্য ধাক্কাধাক্কি করতে থাকেন পাবনার ঈশ্বরদী এলাকার বিএনপির কয়েক শ নেতা-কর্মী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব।

ধাক্কাধাক্কির সময় এটিএন নিউজের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জাবেদ আখতারের সঙ্গে কথা–কাটাকাটি হয় বিএনপি নেতা-কর্মীদের। একপর্যায়ে পাবনার ঈশ্বরদী এলাকার বিএনপির ২০ থেকে ২৫ নেতা-কর্মী জাবেদ আখতারকে লাথি ও কিল-ঘুষি মারতে থাকেন। এ সময় তাঁকে রক্ষা করতে গিয়ে তাঁদের মারধরের শিকার হন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আজিজুল ইসলাম পান্নু, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক হাসান জাবেদসহ বেশ কয়েকজন। ভাঙচুর করা হয় টেলিভিশনের মাইক্রোফোনও।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গণম ধ যমকর ম জ ব দ আখত র ব এনপ র উপস থ ত আইনজ ব কর ম র

এছাড়াও পড়ুন:

অন্তর্বর্তী পরিষদ পুনর্গঠন প্রশ্নে রুল, দুজন সদস্যের কার্যক্রম পরিচালনা স্থগিত

রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদ পুনর্গঠনসংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের দুজন সদস্যের কার্যক্রম পরিচালনা তিন মাসের জন্য স্থগিত করা হয়েছে।

এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার রুলসহ আদেশ দেন। যে দুজন সদস্যের কার্যক্রম পরিচালনায় স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে, তাঁরা হলেন প্রণতি রঞ্জন খীসা ও রাঙাবী তঞ্চঙ্গ্যা।

এর আগে গত বছরের ৭ নভেম্বর রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদ পুনর্গঠন করে প্রজ্ঞাপন করে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়। রাঙামাটি পার্বত্য জেলার ১০টি উপজেলা থেকে প্রতিনিধি না নেওয়া, হত‌্যা মামলার আসামি এবং একই পরিবারের একাধিক সদস‌্যকে নিয়ে জেলা পরিষদ পুনর্গঠনের অভিযোগ তুলে ৭ নভেম্বরের প্রজ্ঞাপনের বৈধতা নিয়ে গত জানুয়ারি মাসে রিটটি করা হয়। রাঙামাটির চার উপজেলাবাসীর পক্ষে আইনজীবী রাজীব চাকমাসহ চার ব্যক্তি রিটটি করেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. সুলতান উদ্দিন। রিট আবেদনকারীদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী নিকোলাস চাকমা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তানিম খান।

পরে আদেশের বিষয়টি জানিয়ে আইনজীবী মো. সুলতান উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ১০টি উপজেলার প্রতিটি উপজেলা থেকে পরিষদে একজন প্রতিনিধি থাকার কথা। তবে ১৪ সদস্যের মধ্যে ৯ জনই রাঙামাটি সদর উপজেলার। বাকি পাঁচজনের তিনজন সংরক্ষিত। একজন হত্যা মামলার আসামি। হাইকোর্ট রুল দিয়ে দুজন (প্রণতি রঞ্জন খীসা ও রাঙাবী তঞ্চঙ্গ্যা) সদস্যের কার্যক্রম পরিচালনা তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছেন। ফলে তাঁরা পরিষদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারছেন না।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আদালত প্রাঙ্গণে পলক বললেন, ধর্ষণের বিরুদ্ধে জেগে ওঠো বাংলাদেশ
  • তারেক রহমানের নির্দেশনায় ‘জাতীয়তাবাদী চালক দলের’ জুয়েল ও তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে মামলা
  • রাজধানীতে ছিনতাইকারীর কবলে আইনজীবী
  • আদালত প্রাঙ্গণে ইনু বললেন, আমি ঠিক আছি, চিন্তা করবেন না
  • চকবাজার থানার মামলায় আসামি শেখ হাসিনাসহ ১৩ জন
  • ইনু বললেন, আমি ঠিক আছি, আপনারা চিন্তা করবেন না
  • গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বিশেষ নিরাপত্তা প্ররক্ষা নির্দেশিকা বাতিল
  • অন্তর্বর্তী পরিষদ পুনর্গঠন প্রশ্নে রুল, দুজন সদস্যের কার্যক্রম পরিচালনা স্থগিত
  • কুষ্টিয়ার আদালতে হাস্যোজ্জ্বল ইনু, আইনজীবীদের বললেন ‘কোনো চিন্তা কইরেন না’
  • বিচারালয়ের দুর্নীতি তুলে ধরতে সাংবাদিকদের আহ্বান অ্যাটর্নি জেনারেলের