বইটি সত্যিকার অর্থেই এক বসাতে পড়ার মতোই একটি গল্পের বই- যেখানে ইতিহাসের ধারাবাহিকতা আছে এবং সহজ ভাষায় প্রযুক্তির আলোচনা আছে। যেখানে লেখক বইয়ের অনুবন্ধে নিজেই জানাচ্ছেন– এটি কোনো রাজকুমার-রাজকন্যা কিংবা নায়ক-খলনায়কের গল্প নয়; এটি সেইসব অসাধারণ মানুষের গল্প, যারা নিজেদের মেধা ও পরিশ্রমে গড়ে তুলেছেন কম্পিউটার বিজ্ঞানের বিশ্ব। এই গল্প শুরু হয়েছে প্রাচীন গ্রীস অথবা রোমের অ্যাবাকাস থেকে আর শেষ হয়েছে আলিবাবার প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক-মা’র হৃদয়স্পর্শী গল্পের মাধ্যমে।

‘কম্পিউটার বিজ্ঞানীদের গল্প’ বইটি লেখক মূলত তিনটি ভাগে বিভাজিত করেছেন। প্রথম ভাগে কম্পিউটার বিজ্ঞানের যাত্রা কীভাবে শুরু হলো, দ্বিতীয় পর্বে কম্পিউটার বিজ্ঞানীদের অবদান আর বইটির শেষ অধ্যায় রচিত হয়েছে প্রযুক্তি উদ্যোক্তাদের সফলতার কাহিনী বয়ানের মধ্য দিয়ে। বইটিতে একদিকে যেমন কম্পিউটার প্রযুক্তির ঐতিহাসিক ক্যারেক্টার বা বিজ্ঞানীদের কাজের ধারাবাহিকতা অনুসরণ করেছে অন্যদিকে টেকনোলজির ডেভলপমেন্টের স্টেপ-বাই-স্টেপ তুলে ধরেছে। একইসঙ্গে রিসার্চার ও ইনোভেশন এই দুই যুগল স্রোতকে একই মোহনায় পরিচালিত করেছেন লেখক। কম্পিউটার সায়েন্সের বাঁক-বদল সৃষ্টিকারী উদ্ভাবনগুলো কোনো সুনির্দিষ্ট ল্যাব কিংবা একটি অঞ্চলে গড়ে ওঠেনি। বরং বহু গবেষকের সুদীর্ঘ অধ্যাবসায়ের মাধ্যমে আজকের এই স্মার্ট টেকনোলজি গড়ে উঠেছে।

কম্পিউটার সায়েন্সের কোর এরিয়ার মাঝে রয়েছে প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গগুয়েজ, অপারেটিং সিস্টেম, সফটওয়ার প্রযুক্তি, নেটওয়ার্কিং, আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্স, রোবোটিক্স কিংবা টেকনলজির দুনিয়ায় লেটেস্ট ক্রেজ ডিপ লার্নিং। লেখক কম্পিউটার সায়েন্সের প্রতিটা কোর এরিয়ার ইনোভেশন ও ইনোভেটরকে ডিটেইলস তুলে ধরেছেন নিপুন অথচ সহজ ভাষাশৈলীর মাধ্যমে। বইটির বিশেষত্ব হলো, বইয়ের প্রতিটি চ্যাপ্টার কিংবা অনুচ্ছেদ নন-টেক পাঠক খুব সহজেই কানেক্ট করতে পারবেন আবার টেকনিক্যালি এক্সপার্টরা ইনোভেশনগুলো ডিটেইলস এক্সপ্লোর করতে পারবেন। প্রযুক্তির দুনিয়া আজকে যে জায়গা এসেছে সেটি নিঃসন্দেহে সুদীর্ঘ সময়ের নিরলস শ্রম ও মেধার ফসল। ৪র্থ শিল্পবিপ্লবের মূল চালিকাশক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা, যা সম্পূর্ণরূপে নির্ভর করছে সাধারণ মানুষের কম্পিউটিং টেকনোলজির বহুমাত্রিক প্রয়োগ ও বিকাশের মধ্য দিয়ে। কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার ব্যাকবোন হিসেবে কাজ করছে মেশিন লার্নিং, নিউরাল নেটওয়ার্ক কিংবা ডিপ লার্নিংয়ের মতো জটিল বিষয়। টেক কিংবা নন-টেক ব্যক্তি যারা এই বিষয়গুলো সহজে বুঝতে চান তাদের জন্য এই বই অবশ্যপাঠ্য। লেখক এত সহজ ভাষায় এই কমপ্লেক্স মেকানিজমগুলোর ইনসাইট ফাইন্ডিংস তুলে ধরেছেন।

বইটি লিখেছেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক প্রফেসর ড.

মিজানুর রহমান।

আগ্রহী পাঠকগণ বইটি অর্ডার করতে পারবেন এই লিংক থেকে – https://forms.gle/fa2h8UCVNAZqsjPq7.

বইটির প্রকাশক– অর্জন রিসার্চ অ্যান্ড ডাটা প্রসেসিং। বইমেলায় পাওয়া যাবে– মেঘদূত প্রকাশন, স্টল– ৬-৭, অমর একুশে বইমেলা-২০২৫। বইটির মূল্য– ৩৫০ টাকা। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বইম ল বইট র

এছাড়াও পড়ুন:

ছবিমুক্ত এনআইডির দাবিতে পর্দানশীন নারীদের সমাবেশ

ছবি তুলে নয়, শুধু ফিঙ্গারপ্রিন্টের মাধ্যমে ছবিমুক্ত জাতীয় পরিচয়পত্র বা এনআইডি দেওয়ার দাবিতে রাজশাহীতে সমাবেশ করেছেন পর্দানশীন নারীরা। মহিলা আনজুমানের রাজশাহী জেলা ও মহানগর মজলিসের ব্যানারে বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে এ কর্মসূচি পালিত হয়। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন নারীরা।

এর আগে সমাবেশে পর্দানশীন নারীরা বলেন, ‘‘শুধু পরিপূর্ণ পর্দা করার কারণে পর্দানশীন নারীরা বৈষম্যের শিকার। গত ১৬ বছর অসংখ্য পর্দানশীন নারীর নাগরিকত্ব আটকে রাখা হয়েছে। শিক্ষাক্ষেত্রেও করা হচ্ছে বঞ্চিত। পরিচয় যাচাইয়ে জোর করে বেগানা পুরুষের সামনে চেহারা খুলতে বাধ্য করা হচ্ছে। পর্দানশীন নারীরা এসব হেনস্তার অবসান চান।’’ চেহারার বদলে তারা ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিয়ে পরিচয় যাচাইয়ের দাবি তোলেন।

তারা বলেন, ‘‘রাষ্ট্রে মৌলিক অধিকার আটকে রেখে পর্দানশীন নারীদের গুনাহ করতে বাধ্য করা হচ্ছে, যা তার ধর্মীয় বা দ্বীনি অধিকার লঙ্ঘন। আবার একজন পর্দানশীন নারী তার চেহারা কাউকে দেখাতে চান না, এটা তার গোপনীয়তার অধিকার। ফলে জোর করে চেহারা দেখাতে বাধ্য করা তার গোপনীয়তার অধিকার লঙ্ঘন।’’ তারা এর অবসান চান।

পর্দানশীন নারীরা আরও বলেন, ‘‘মানুষের মুখের ছবি পরিবর্তনশীল। সময়ের ও অবস্থার সঙ্গে মানুষের চেহারার দৃশ্য পরিবর্তন হয়। এ থেকে প্রমাণিত হয়, মুখচ্ছবি পরিচয় যাচাইয়ের নির্ভরযোগ্য মাধ্যম নয়। ছবি ও চেহারা মিলিয়ে সনাক্তকরণ একটি দুর্নীতিবান্ধব পদ্ধতি, অপরদিকে ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিয়ে সনাক্তকরণ দুর্নীতিরোধক পদ্ধতি। আধুনিক বিশ্ব চেহারা ও ছবি মিলিয়ে পরিচয় যাচাইয়ে সেকেলে পদ্ধতি বর্জন করে ফিঙ্গারপ্রিন্ট পদ্ধতি গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশেও তা চালু করতে হবে।’’ 

সমাবেশে পর্দানশীন নারীরা তিনটি দাবি পেশ করেন। সেগুলো হলো, বিগত ১৬ বছর যে সমস্ত সাবেক ইসি কর্মকর্তা পর্দানশীন নারীদের নাগরিকত্ব আটকে রেখে মানবাধিকার বঞ্চিত করেছেন, তাদের বিচারের আওতায় আনা; পর্দানশীন নারীদের ধর্মীয় ও গোপনীয়তার অধিকার অক্ষুন্ন রেখে অবিলম্বে এনআইডি ও শিক্ষা অধিকার প্রদান করা; সকল ক্ষেত্রে পরিচয় সনাক্তে চেহারা ও ছবি মেলানোর পদ্ধতি বাতিল করে আধুনিক ফিঙ্গারপ্রিন্ট যাচাই পদ্ধতি বাধ্যতামূলক করা এবং পর্দানশীন নারীদের ফিঙ্গারপ্রিন্ট নেওয়ার সময় কোনো পুরুষ নয়, নারী সহকারী বাধ্যতামূলকভাবে রাখার ব্যবস্থা করা।

সমাবেশ শেষে পর্দানশীন নারীরা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং জেলা ও বিভাগীয় শিক্ষা কর্মকর্তাকে স্মারকলিপি দেন। কর্মসূচিতে কয়েকশত পর্দানশীন নারী উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/কেয়া/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ