লিফলেট বিতরণ না করতে অনুরোধ, আ.লীগের হাতুড়িপেটায় আহত স্বেচ্ছাসেবক দলের ৫
Published: 5th, February 2025 GMT
নড়াইলের লোহাগড়ায় লিফলেট বিতরণ করছিলেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। লিফলেট বিতরণ না করতে অনুরোধ করায় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীদের হাতুড়ি, লোহার রড দিয়ে পিটিয়েছেন তারা। এ ঘটনায় পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক এসকে মিন্টুসহ ৫ জন আহত হয়েছেন। তাদের লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার রাতে পৌর সভার চোরখালী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আজ বুধবার মিন্টুর চাচা বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ এজাহারভুক্ত দুজনকে আটক করেছে।
আহত এসকে মিন্টু বলেন, ‘মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে জানতে পারি চোরখালী এলাকায় আনিস মোল্যার চায়ের দোকানে আওয়ামী লীগের কর্মীরা লিফলেট বিতরণ করছেন। বিষয়টি জানার পর বিএনপির কর্মীদের নিয়ে আনিসের দোকানে গিয়ে আওয়ামী লীগের কর্মীদেরকে এ ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার অনুরোধ করি। এলাকায় অশান্তি সৃষ্টি না করার আহবান জানাই। এ সময় আওয়ামী লীগের কর্মীরা আমাদের সঙ্গে তর্ক শুরু করেন। একপর্যায়ে চোরখালী গ্রামের আওয়ামী লীগ কর্মী মনিরুজ্জামান মনির নেতৃত্বে আক্কাস ফকির, ইদ্রিস সরদার, রবিউল মল্লিক, ইব্রাহিম মোল্যা, আনিস মোল্যা, ঝন্টু ফকিরসহ ২৫-৩০ জন হাতুড়ি, লোহার রড, রামদা, লাঠি নিয়ে হামলা চালান। এতে আমিসহ পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ড ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ঝন্টু মিয়া, বিএনপি কর্মী হাফিজুর রহমান, বাবলু শেখ, দোলেনা বেগমকে পিটিয়ে গুরুতর আহত হয়েছি।’
লোহাগড়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী সুলতানুজ্জামান সেলিম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানাই।
লোহাগড়া থানার ওসি আশিকুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় চোরখালী গ্রামের আবুল কালাম আজাদ বাদী হয়ে ২৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয়ে কয়েকজনকে আসামি করে মামলা করেছেন। পুলিশ এজাহারভুক্ত আসামি আক্কাস ফকির ও ঝন্টু ফকিরকে আটক করেছে। অন্যদের আটকের চেষ্টা চলছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আওয় ম ল গ ব এনপ আহত র কর ম আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
সিলেটে থানায় লালগালিচা দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বললেন, ‘এগুলো ওঠাও’
সিলেটে থানা পরিদর্শনে গিয়ে লালগালিচা বিছানো দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। এ সময় তিনি লালগালিচায় না উঠে থানার সামনে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কুশল বিনিময় করেন। এরপর সিলেটের পুলিশ কমিশনারকে লালগালিচা সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেন।
বৃহস্পতিবার দুপুর পৌনে ১২টায় সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গাড়িতে বিমানবন্দর থানায় যান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। এ সময় থানার সামনে তাঁকে স্বাগত জানাতে লালগালিচা বিছিয়ে মঞ্চ প্রস্তুত করা ছিল। কিন্তু তিনি লালগালিচায় না হেঁটে সালাম দিতে প্রস্তুত থাকা পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। এরপর মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. রেজাউল করিমের কাছে লালগালিচা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন উপদেষ্টা।
এ সময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে বলতে শোনা যায়, ‘এগুলো ওঠাও...। না করেছি যেটি কেন রাখছ থানায়? এখন ওঠাও।’ এ সময় পুলিশ কমিশনারকে বলতে শোনা যায়, ‘প্রথম আসছেন সে জন্য...’। এতে উপদেষ্টা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি বারবার বলেছি, এগুলো হবে না। প্রটোকল করতে করতে তোমাদের সময় শেষ। মেইন কাম করতে পারতেছ না।’ পরে উপদেষ্টা থানার ভেতরে প্রবেশ করলে লালগালিচা সরিয়ে নেওয়া হয়। এরপর কমিশনারসহ অন্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে কিছুক্ষণ বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন উপদেষ্টা।
‘মবকে এখন পুলিশ ভয় পাচ্ছে না’এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘মবকে এখন পুলিশ ভয় পাচ্ছে না। এটা কিন্তু অনেক কমে আসছে। সিলেটে যে ঘটনা ঘটেছে, তাদের কিন্তু আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। অনেকেরই কিন্তু ধরে ফেলা হয়েছে। এখানে কিন্তু কাউকে পাস করা হয়নি যে এইটা আমার এই ভাইয়ের ছেলে কিংবা এইটা এই ভাইয়ের ভাই—এই হিসেবে কিন্তু আমরা করিনি। যে অন্যায় করেছে, তাকেই আমরা আইনের আওতায় আনছি।’
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, সবার কাছে গণমাধ্যমের মাধ্যমে অনুরোধ, কেউ যেন আইন নিজের হাতে তুলে না নেন। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হাতেই আইন থাকবে। পুলিশের মানসিকতা পরিবর্তন সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘চেঞ্জ অনেক হয়েছে। রোজার সময় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যে যা–ই বলুক না কেন, আগের চেয়ে অনেক উন্নতি হয়েছে।’
পুলিশের গাড়ি থেকে আসামি ছিনতাইয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘যারা ছিনতাই করে নিচ্ছে, তাদের কিন্তু আমরা আইনের আওতায় নিয়ে আসছি। এগুলোর ক্ষেত্রে আপনারা সত্যি ঘটনা যেটা, সঙ্গে সঙ্গে জানাবেন, আমরা ব্যবস্থা নেব। অনেক সময় তাদের অ্যাকশন নিতে দেরি হয়। এতে আমাদের অনেক সংকট রয়ে গেছে। এদের গাড়িঘোড়ার কিন্তু অনেক সংকট। অনেক গাড়ি নষ্ট হয়ে গেছে। পুড়ে গেছে। থানা পুড়ে গেছে। এগুলো তো সব আমরা করে দিতে পারিনি। আমরা তো একটা নতুন গাড়ি পর্যন্ত কিনে দিতে পারিনি। যেহেতু প্রসিডিউর অনেক ইয়ে...টাকা স্যাংশন হতে। এটা যদি হয়, তাদের অবস্থার আরও উন্নতি হবে।’
অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘অস্ত্র যতটা এক্সপেক্টেশন ছিল, তত কমপ্লিট হয় নাই। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। যেটা আমরা পারিনি, সেটা তো আমরা বলব না। অস্ত্র বাইরে থাকলে তো কিছুটা হুমকি থাকবে।’