যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেওয়া অপরাধীদের নিজেদের কারাগারে ঠাঁই দেওয়ার প্রস্তাব এল সালভাদরের
Published: 5th, February 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেওয়া বিশ্বের যেকোনো জায়গার ‘বিপজ্জনক অপরাধীদের’ নিজেদের কারাগারে ঠাঁই দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে এল সালভাদর। গত সোমবার দেশটি এ প্রস্তাব দিয়েছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। মধ্য আমেরিকার দেশটির প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দীর্ঘ সময় ধরে আলোচনা শেষে এ কথা জানিয়েছেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ কূটনীতিকের দায়িত্ব পাওয়ার পর প্রথমবারের মতো বিদেশ সফরে গেলেন মার্কো রুবিও। সফরে মধ্য আমেরিকার দেশগুলোর প্রতি তিনি অনুরোধ করেছেন, তারা যাতে বিপুলসংখ্যক অভিবাসীকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টায় ট্রাম্প প্রশাসনকে সহায়তা করে।
যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অভিবাসীদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর পথ মসৃণ করার পাশাপাশি এ বিষয়ে ‘তৃতীয় দেশের’ সঙ্গে চুক্তি নিশ্চিত করার চেষ্টা করছেন রুবিও। এ চুক্তির আওতায় কোনো দেশ যদি তাদের নির্বাসিত নাগরিককে গ্রহণ না করে, তবে চুক্তিভুক্ত তৃতীয় দেশ তাদের গ্রহণ করবে।এল সালভাদরের প্রেসিডেন্ট নায়েব বুকেলে ও দেশটির জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন মার্কো রুবিও। দেশটির রাজধানীর বাইরে কোটপেক এলাকায় বুকেলের বাসভবনে তাঁদের সঙ্গে প্রায় তিন ঘণ্টা বৈঠক করেন তিনি। বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেওয়া এল সালভাদরের নিজের নাগরিকদের গ্রহণ করার ক্ষেত্রে বাড়তি কিছু করার ব্যাপারেও সম্মত হয়েছেন তাঁরা।
মার্কো রুবিও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে এমএস-১৩, ট্রেন ডি অ্যারাগুয়ার মতো বিপজ্জনক অপরাধী গোষ্ঠীগুলোর সদস্য যেকোনো অবৈধ অভিবাসীকে নিজেদের কারাগারে বন্দী রাখার প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি (এল সালভাদরের প্রেসিডেন্ট), যাতে আমরা এসব অপরাধীকে সেখানে পাঠাতে পারি এবং তিনি সেখানকার কারাগারে তাঁদের ঠাঁই দেবেন।’
যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অভিবাসীদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর পথ মসৃণ করার পাশাপাশি এ বিষয়ে ‘তৃতীয় দেশের’ সঙ্গে চুক্তি নিশ্চিত করার চেষ্টা করছেন রুবিও। এ চুক্তির আওতায় কোনো দেশ যদি তাদের নির্বাসিত নাগরিককে গ্রহণ না করে, তবে চুক্তিভুক্ত তৃতীয় দেশ তাঁদের গ্রহণ করবে।
বিপজ্জনক অপরাধীদের মধ্যে যাঁরা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক বা সেখানকার বৈধ অধিবাসী, তাঁদেরও নিজ দেশের কারাগারে রাখার প্রস্তাব দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট বুকেলে। যদিও যুক্তরাষ্ট্র এ প্রস্তাব গ্রহণ করবে কি না, তা এখনো স্পষ্ট নয়।মার্কো রুবিও, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীরুবিও বলেন, বিপজ্জনক অপরাধীদের মধ্যে যাঁরা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক বা সেখানকার বৈধ অধিবাসী, তাঁদেরও নিজ দেশের কারাগারে রাখার প্রস্তাব দিয়েছেন বুকেলে। যদিও যুক্তরাষ্ট্র এ প্রস্তাব গ্রহণ করবে কি না, তা এখনো স্পষ্ট নয়। চুক্তির আরও বিশদ তথ্য সামনে আসবে বলে জানান তিনি।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইট একটি নতুন ট্যাব চালু করেছে। এতে উল্লেখ করা হয়েছে যে এল সালভাদরের কারাগারগুলোর অবস্থা ‘কঠোর ও বিপজ্জনক’।মার্কিন নাগরিকদের আইনত যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কার বা বের করে দেওয়া যায় না।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইট একটি নতুন ট্যাব চালু করেছে। এতে উল্লেখ করা হয়েছে যে এল সালভাদরের কারাগারগুলোর অবস্থা ‘কঠোর ও বিপজ্জনক’।
ওয়েবসাইটটিতে বলা হয়েছে, অতিরিক্ত ভিড় বন্দীদের স্বাস্থ্য ও জীবনের জন্য গুরুতর হুমকি। অনেক কারাগারে স্যানিটেশন, পানীয় জল, বায়ু চলাচল, তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ও আলোর ব্যবস্থা অপর্যাপ্ত কিংবা নেই বললেই চলে।
আরও পড়ুনঅবৈধ অভিবাসীদের তাড়ানোর প্রক্রিয়ার আওতা বাড়িয়েছেন ট্রাম্প২২ জানুয়ারি ২০২৫বুকেলে এক্সে দেওয়া এক পোস্টে লিখেছেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে তার কারাব্যবস্থার একটি অংশ বাইরে করার সুযোগ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন।
রুবিওর ঘোষণার পর প্রেসিডেন্ট বুকেলে এক্সে লেখেন, ‘পারিশ্রমিকের বিনিময়ে আমরা শুধু দোষী সাব্যস্ত হওয়া অপরাধীদের (দণ্ডপ্রাপ্ত মার্কিন নাগরিকসহ) আমাদের বড় কারাগারে নিতে ইচ্ছুক। যুক্তরাষ্ট্রের জন্য এই পারিশ্রমিক তুলনামূলকভাবে কম হলেও আমাদের জন্য তাৎপর্যপূর্ণ হবে, যা আমাদের পুরো কারাব্যবস্থাকে টেকসই করে তুলবে।’
আরও পড়ুনঅবৈধ অভিবাসীদের ৩০ দিনের মধ্যেই গুয়ানতানামো বেতে পাঠাতে চান ট্রাম্প০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫আরও পড়ুন২০৫ অবৈধ ভারতীয় অভিবাসীকে দেশে ফেরত পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম র ক ন পরর ষ ট র গ রহণ করব অপর ধ দ র ব র কর র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
সুদানে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের ওপর হামলার ঘটনায় জাতিসংঘ মহাসচিবের তীব্র নিন্দা
সুদানে জাতিসংঘের এক ঘাঁটিতে ড্রোন হামলায় ছয় শান্তিরক্ষী নিহত হয়েছেন। তাঁরা সবাই বাংলাদেশের নাগরিক। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘আমি সুদানের কাদুগলিতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীর লজিস্টিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে নৃশংস ড্রোন হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীদের লক্ষ্য করে হামলা আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় যুদ্ধাপরাধ হিসেবে গণ্য হতে পারে।’
সুদানের কোরদোফান অঞ্চলের কাদুগলি শহরে অবস্থিত জাতিসংঘের ভবনটিতে গতকাল শনিবার এ হামলা হয়।
গুতেরেসের বিবৃতিতে বলা হয়, হামলায় আরও আট শান্তিরক্ষী আহত হয়েছেন। হতাহত ব্যক্তিদের সবাই বাংলাদেশের নাগরিক। তাঁরা ইউএন ইন্টারিম সিকিউরিটি ফোর্স ফর আবেইয়ের (ইউএনআইএসএফএ) হয়ে দায়িত্বরত ছিলেন।
গুতেরেস বলেন, ‘দক্ষিণ কোরদোফানে আজ (শনিবার) শান্তিরক্ষীদের ওপর যে হামলা হয়েছে, তা অগ্রহণযোগ্য। এর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে।’
হামলায় নিহত শান্তিরক্ষীদের সবাই বাংলাদেশি। তাঁরা ইউএন ইন্টারিম সিকিউরিটি ফোর্স ফর আবেইয়ের (ইউএনআইএসএফএ) হয়ে দায়িত্বরত ছিলেন। হামলায় আরও আট শান্তিরক্ষী আহত হয়েছেন।সুদানের সেনাবাহিনী ওই হামলার দায় র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) নামে দেশটির আধা সামরিক বাহিনীর ওপর চাপিয়েছে।
সুদানে দুই বছরের বেশি সময় ধরে গৃহযুদ্ধ চলছে। দেশটির সেনাবাহিনী ও আরএসএফের মধ্যে এ লড়াই চলছে।
আরএসএফ তাৎক্ষণিকভাবে হামলার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
সুদানের সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, এ হামলা বিদ্রোহী মিলিশিয়া এবং এর পেছনে যাঁরা আছেন, তাঁদের ধ্বংসাত্মক কৌশলের স্পষ্ট প্রকাশ।
সুদান সেনাবাহিনী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও পোস্ট করেছে। ভিডিওতে একটি স্থান থেকে ঘন কালো ধোঁয়া আকাশে উঠতে দেখা যাচ্ছে। তারা বলেছে, এটি জাতিসংঘের স্থাপনা।
বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী হতাহত হওয়ার এ ঘটনায় গভীর শোক ও উদ্বেগ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
দক্ষিণ কোরদোফানে আজ (শনিবার) শান্তিরক্ষীদের ওপর যে হামলা হয়েছে, তা অগ্রহণযোগ্য। এর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে।.আন্তোনিও গুতেরেস, জাতিসংঘ মহাসচিবযেখানে হামলা হয়েছে, সেই তেলসমৃদ্ধ অঞ্চল আবেই নিয়ে সুদান ও দক্ষিণ সুদানের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। ২০১১ সালে সুদান থেকে আলাদা হয়ে দক্ষিণ সুদান একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। এর পর থেকে সেখানে জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশন মোতায়েন রয়েছে।
দুই দেশের সীমান্তে অবস্থিত আবেই বিশেষ প্রশাসনিক মর্যাদার অঞ্চল।
সুদানের আবেই অঞ্চলে একটি সড়কে দায়িত্ব পালন করছেন জাতিসংঘের একজন শান্তিরক্ষী