চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতেও আছেন বাংলাদেশের আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা
Published: 5th, February 2025 GMT
চ্যাম্পিয়নস ট্রফির জন্য ১৫ জন ম্যাচ অফিশিয়ালের নাম ঘোষণা করেছে আইসিসি। ৮ দলের এই টুর্নামেন্টে আম্পায়ারিংয়ের দায়িত্বে থাকবেন ১২ জন। তাঁদের মধ্যে আছেন বাংলাদেশের আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ। ম্যাচ রেফারির দায়িত্বে থাকবেন তিনজন।
পাকিস্তান ও আরব আমিরাতে ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি। শেষ হবে ৯ মার্চ। পাকিস্তানের করাচি, লাহোর, রাওয়ালপিন্ডি এবং আরব আমিরাতের দুবাইয়ে ম্যাচগুলো হবে।
আরও পড়ুনভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবতে রোহিত শর্মাকে সময় বেঁধে দিয়েছে বিসিসিআই৩১ মিনিট আগে১২ জন আম্পায়ারের মধ্যে ৬ জন ২০১৭ সালে সর্বশেষ চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে দায়িত্ব পালন করেছেন। সেই টুর্নামেন্টের ফাইনালে আম্পায়ারিংয়ের দায়িত্ব পালন করা রিচার্ড কেটেলবরো এবারও আছেন। ২০১৭ সংস্করণ থেকে বাকি পাঁচ আম্পায়ার হলেন—ক্রিস গ্যাফানে, কুমার ধর্মসেনা, রিচার্ড ইলিংওয়ার্থ, পল রাইফেল ও রড টাকার।
বাকি ছয় আম্পায়ার হলেন, মাইকেল গফ, আদ্রিয়ান হোল্ডস্টক,এহসান রাজা, শরফুদ্দৌলা, অ্যালেক্স হোয়ার্ফ ও জোয়েল উইলসন। ২০২৩ সালে ভারতে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপে তাঁরা সবাই ম্যাচ পরিচালনা করেছেন। সে বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচটি পরিচালনা করেন কেটেলবরো ও ইলিংওয়ার্থ। শরফুদ্দৌলা সেই বিশ্বকাপে ৫ ম্যাচ পরিচালনা করেন।
বোর্ডার–গাভাস্কার ট্রফিতে সিডনি টেস্টে আম্পায়ার ছিলেন শরফুদ্দৌলা.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শরফ দ দ ল
এছাড়াও পড়ুন:
দুর্নীতির টাকা আড়ালে জেলার সোহেল স্ত্রীকে সাজান মাছচাষি
চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার (বরখাস্ত) সোহেল রানা বিশ্বাসের স্ত্রী হোসনে আরা পপি মাছ চাষ করে দুই কোটি টাকা আয় করেছেন। এ আয় থেকে সোহেল রানাকে ৮০ লাখ টাকা দান করেছেন। কিন্তু এগুলো সবই কাগজে-কলমে। ৯ বছর তিনি মাছ চাষ করলেও কোন পুকুরে চাষ করেছেন, কোথায় বিক্রি করেছেন– তার দালিলিক কোনো প্রমাণ নেই। স্বামীর অবৈধ আয় আড়াল করতে নিজেকে মৎস্য চাষি সাজাতে গিয়ে করেছেন অভিনব জালিয়াতি। ২০১৭ সালে কেনা তিনটি ১০০ টাকার স্ট্যাম্পকে ২০১১ সালে কেনা স্ট্যাম্প দেখিয়ে ভুয়া লিজ চুক্তি করেন পপি। তবে এই দম্পতির শেষরক্ষা হচ্ছে না। দুদক ময়মনসিংহে ছয়টি ব্যাংকে পপির আটটি অ্যাকাউন্টে ২ কোটি ১ লাখ টাকার হদিস পেয়েছে। কিন্তু এ সম্পদ অর্জনের কোনো বৈধ ও গ্রহণযোগ্য উৎস পাওয়া যায়নি।
সোহেল রানা চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে জেলার হিসেবে কর্মরত থাকা অবস্থায় ছুটি নিয়ে ২০১৮ সালের ২৬ অক্টোবর ট্রেনে বাড়ি যাওয়ার সময় ভৈরবে দুই বস্তায় ৪৪ লাখ ৪৩ হাজার টাকাসহ রেলওয়ে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন।
চট্টগ্রামে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এর সহকারী পরিচালক এনামুল হক বলেন, হোসেনে আরা পপি গৃহিণী। সোহেল রানা বিশ্বাস দুর্নীতির অর্থ আড়াল করতে পপিকে মৎস্য চাষি বানান। যে স্ট্যাম্পের মাধ্যমে জমি নিয়ে মৎস্য চাষের কথা বলা হয়, সেই স্ট্যাম্প ২০১১ সালে কেনা দেখানো হলেও তদন্তে দেখা যায়, তিনটি স্ট্যাম্পই ২০১৭ সালে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসন থেকে বিতরণ করা হয়েছে। স্ট্যাম্প জালিয়াতি করে পপি দুই কোটি টাকা মৎস্য খাত থেকে আয় দেখালেও এ অর্থ মূলত স্বামীর দুর্নীতির অর্থ। তদন্ত প্রতিবেদনে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। গত ৩০ জানুয়ারি প্রতিবেদনটি চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে।
তবে অভিযুক্ত পপি বলেন, ‘আমি মাছ চাষ করেই দুই কোটি টাকা আয় করেছি। স্ট্যাম্পগুলোও সঠিক। দুদক তদন্ত করে কী পেয়েছে, জানি না। আমার স্বামীও কোনো দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত নন।’ পপি ময়মনসিংহ জেলার ধোবাউড়া উপজেলার পোড়াকান্দুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা। দুদক তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, পপি ২০১১ সাল থেকে স্বামীর বাড়ির পরিবর্তে নেত্রকোনায় বাবার বাড়িতে মৎস্য ব্যবসা শুরু করেন বলে দাবি করেন। কিন্তু ব্যবসায়ী হিসেবে ব্যবসার বিল ভাউচার, ট্রেড লাইসেন্স, নিজের নামে কোনো পুকুর, মৎস্য চাষি হিসেবে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের কোনো প্রত্যয়নপত্র দুদককে দেখাতে পারেননি। শুধু তিনটি ১০০ টাকার স্ট্যাম্প উপস্থাপন করেন। আয়কর নথিতে তিনি ২০১১-১২ করবর্ষে মৎস্য চাষে ১৩ লাখ টাকা, ২০১১-১৩ বর্ষে ১৫ লাখ, ২০১৩-১৪ বর্ষে ২০ লাখ, ২০১৪-১৫ বর্ষে ৩০ লাখ, ২০১৫-১৬ বর্ষে ৩৫ লাখ, ২০১৬-১৭ বর্ষে ২০ লাখ, ২০১৭-১৮ বর্ষে ২২ লাখ, ২০১৮-১৯ বর্ষে ২৩ লাখ, ২০১৯-২০ বর্ষে ২৩ লাখ টাকাসহ ২ কোটি ১ লাখ ২০ হাজার টাকা আয় করেছেন উল্লেখ করেন। কিন্তু এসবের বৈধ উৎস পায়নি দুদক।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, ২০১১-১২ করবর্ষ থেকে ২০১৮-১৯ করবর্ষ পর্যন্ত নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা উপজেলার দলধলা মৌজার ৩০৪ শতাংশ জমি লিজ নিয়ে মাছ চাষ করেছেন উল্লেখ করা হয়। কথিত দেলোয়ার হোসেনের কাছ থেকে ২০১১ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ১০ বছরের জন্য মাছ চাষের লিজ চুক্তির তিনটি স্ট্যাম্প যাচাই করে দুদক। ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের ট্রেজারি শাখা থেকে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, এ তিনটি স্ট্যাম্প ২০১৭ সালের ২৬ ডিসেম্বর ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে রাজু আহমেদ নামক ভেন্ডারের কাছে ছাড়করণ করা হয়। এছাড়া পপি ময়মনসিংহ জেলার ছয়টি ব্যাংকে আটটি অ্যাকাউন্টের মধ্য থেকে দুদকে সম্পদ বিবরণী দাখিলের আগে অপরাধের দায় থেকে অব্যাহতি পাওয়ার জন্য তিনটি ব্যাংক থেকে ৫৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা উত্তোলন করে সরিয়ে ফেলেছেন। তাঁর নামে প্রিমিয়ার ব্যাংক ও মার্কেন্টাইল ব্যাংকে ৫০ লাখ করে ১ কোটি টাকার দুটি এফডিআর আছে।