‘মায়ের সঙ্গে লুকিয়ে পাসপোর্ট বানাই, বাংলাদেশে খেলবো বলে’
Published: 5th, February 2025 GMT
বাংলাদেশি বাবা মাসুদুর রহমান ও জাপানি মা মাতসুশিমা তমোমির একমাত্র মেয়ে মাতসুশিমা সুমাইয়া। জন্ম জাপানে। তবে ফুটবলের টানে অনেক আগেই বাংলাদেশে আসা। বছর দুই আগে লাল-সবুজ দলের ক্যাম্পে জায়গা করে নেন। এরপর থেকে ২৩ বছর বয়সী উইংগারের আবাসস্থল বাফুফে ভবন। সেখানে থেকেই জাতীয় দলের হয়ে অনুশীলন করছেন… খেলছেন।
সম্প্রতি পিটার বাটলারকে আবারও বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দলের কোচ করে আনায় বিদ্রোহের ডাক দিয়েছেন ফুটবলাররা। তারা ম্যাচ ও অনুশীলন বয়কটের ঘোষণা দিয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেছেন। এমন পরিস্থিতিতে সাফজয়ী দলের অন্যতম খেলোয়াড় জাপানি বংশোদ্ভূত মাতসুশিমা সুমাইয়াকে বেশ কিছু দিন ধরেই ধর্ষণ ও হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে এক ফেসবুকে পোস্টের মাধ্যমে জানিয়েছেন তিনি। এতে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন জাপানে জন্ম নেয়া ও বেড়ে ওঠা এই নারী ফুটবলার। মূলত কোচ পিটার বাটলারের অপসারণ চেয়ে বাফুফে সভাপতি বরাবর ইংরেজি চিঠি লেখার কারণেই এমন আক্রমণের শিকার হচ্ছেন তিনি।
হুমকি দেওয়াসহ নারী ফুটবলারদের আন্দোলনের বিষয়গুলো নিয়ে সমকালের সঙ্গে মন খুলে কথা বলেছেন মাতসুশিমা সুমাইয়া। সেখানেই সুমাইয়া জানান, তার বাংলাদেশি বাবা মাসুদুর রহমান চাননি মেয়ে লাল-সবুজের জার্সি গায়ে জড়াক। কিন্তু জাপানি মা মাতসুশিমা তমোমির সঙ্গে গোপনে বাংলাদেশের পাসপোর্ট করেন মাতসুশিমা সুমাইয়া। দুই বছর আগে বসুন্ধরা কিংসের ট্রায়ালে টিকে যাওয়া জাপানপ্রবাসী এই নারী ফুটবলার এখন জাতীয় দলের অন্যতম তারকা।
সমকালকে সুমাইয়া বলেন, আমার বাবার সঙ্গে ফাইট করে বসুন্ধরা কিংসে ট্রায়াল দিয়েছিলাম। সে সময় তিনি বলেছিলেন, তুমি এখানে (বাংলাদেশ) খেল না, এখানে খেললে ভালো হবে না। তুমি বিদেশে খেল। বাংলাদেশে তোমাকে কিন্তু খেলতে দেবে না। কিন্তু আমি আমার মায়ের সঙ্গে লুকিয়ে পাসপোর্ট বানাই। কিংসে ট্রায়ালে টেকার পর মালদ্বীপেও লিগ খেলেছি। এখন আমার নামে কত উল্টাপাল্টা লেখা হচ্ছে। পারফরম্যান্স না থাকা সত্ত্বেও আমাকে নাকি টিমে রাখা হয়েছে সাবিনা খাতুনের জন্য। আমার যদি পারফরম্যান্স না থাকত, তাহলে কোচ (পিটার বাটলার) বাদ দেওয়ার তালিকায় আমার নাম রাখতেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হুমকির ব্যাপারে পরিবার থেকেও সাপোর্ট পাচ্ছেন সুমাইয়া। জাতীয় দলের তারকা এই ফুটবলার জানান, আমার মা সব সময় আমাকে সাপোর্ট দেন। প্রথমে আমার বাবা অনেক ভয় পেয়েছিলেন, আমি বাংলাদেশে খেলব, সবাই চিনবে আর এই চেনাই ছিল তার ভয়ের কারণ। পাবলিক ফিগার হওয়া একটা ঝুঁকিরও বিষয় আছে। সবাই আপনাকে রাস্তায় দেখবে। এখন আমি যে বাইরে যাব, সেই নিরাপত্তা নেই। কারণ আমি খোলামেলা হুমকি পাচ্ছি, সেখানে কেউ কোনো প্রতিবাদ করছে না। শুধু আমাকেই নয়, অনেককেই হুমকি দিচ্ছে। সেগুলোর ভয়ে আমি সোশ্যাল মিডিয়া বন্ধ করে দিয়েছি। এ জন্য একটা স্ট্যাটাস দিয়েছি, যেটা কেবল আমিই সাহস করে দিয়েছি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ফ টবল র
এছাড়াও পড়ুন:
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভারত ও নিউ জিল্যান্ডের সামগ্রিক পারফরম্যান্
দেখতে দেখতে শেষের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি ২০২৫। আর মাত্র একটি ম্যাচ। এরপরই পর্দা নামবে মিনি বিশ্বকাপ খ্যাত এই টুর্নামেন্টের। আজ রোববার (০৮ মার্চ, ২০২৫) বিকেলে শিরোপা নির্ধারণী ফাইনালে মুখোমুখি হবে ভারত ও নিউ জিল্যান্ড। তার আগে চলুন দেখে নেওয়া যাক চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভারত ও নিউ জিল্যান্ডের সামগ্রিক পারফরম্যান্স কেমন।
:: ভারতের রেকর্ড ::
আইসিসি নকআউট ট্রফি-২০০০:
পারফরম্যান্স: রানার্স-আপ। ভারত ফাইনালে পৌঁছালেও দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হেরে শিরোপা হাতছাড়া হয়।
আরো পড়ুন:
ভারতীয় ড্রেসিংরুমে রোহিতের অবসর নিয়ে ‘আলোচনা নেই’
নিউ জিল্যান্ডের প্রেরণা নাইরোবির স্মৃতি
আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি-২০০২:
পারফরম্যান্স: যৌথ চ্যাম্পিয়ন (শ্রীলঙ্কার সঙ্গে)। ফাইনাল ম্যাচ বৃষ্টির কারণে বাতিল হয় এবং ভারত ও শ্রীলঙ্কাকে যৌথ চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করা হয়।
আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি-২০০৪:
পারফরম্যান্স: গ্রুপপর্ব থেকে বিদায় (নকআউট পর্বে পৌঁছাতে ব্যর্থ)।
আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি-২০০৬:
পারফরম্যান্স: গ্রুপপর্ব থেকে বিদায় (নকআউট পর্বে পৌঁছাতে ব্যর্থ)।
আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি-২০১৩:
পারফরম্যান্স: চ্যাম্পিয়ন। ফাইনালে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে শিরোপা জিতে নেয় ভারত। সেমিফাইনালে ভারত শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে ফাইনালে আসে।
আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি-২০১৭:
পারফরম্যান্স: রানার-আপ। ভারত ফাইনালে পৌঁছালেও পাকিস্তানের কাছে পরাজিত হয়।
:: নিউ জিল্যান্ডের রেকর্ড ::
আইসিসি নকআউট ট্রফি-২০০০:
পারফরম্যান্স: ফাইনাল এবং চ্যাম্পিয়ন। ভারতকে হারিয়ে প্রথমবার শিরোপা জিতে নেয় নিউ জিল্যান্ড।
আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি-২০০২:
পারফরম্যান্স: গ্রুপপর্ব থেকে বিদায় (নকআউট পর্বে পৌঁছাতে ব্যর্থ)।
আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি-২০০৪:
পারফরম্যান্স: সেমিফাইনাল। সেমিফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হেরে ফাইনালে যেতে ব্যর্থ হয় নিউ জিল্যান্ড।
আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি-২০০৬:
পারফরম্যান্স: রানার-আপ। নিউ জিল্যান্ড ফাইনালে পৌঁছালেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হেরে শিরোপা হাতছাড়া হয়।
আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি-২০১৩:
পারফরম্যান্স: গ্রুপপর্ব থেকে বিদায় (নকআউট পর্বে পৌঁছাতে ব্যর্থ)
আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি-২০১৭:
পারফরম্যান্স: সেমিফাইনাল। সেমিফাইনালে পাকিস্তানের কাছে হেরে ফাইনালে যেতে ব্যর্থ হয়।
সারসংক্ষেপ:
ভারত একাধিকবার আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির নকআউট পর্বে পৌঁছেছে এবং ২০১৩ সালে একবার শিরোপা জিতেছে।
নিউ জিল্যান্ডও একাধিকবার নকআউট পর্বে খেলেছে, তবে তারা কখনও ট্রফি জিততে পারেনি। তাদের সেরা ফলাফল ছিল ২০০৬ সালে রানার-আপ হওয়া এবং বিভিন্ন আসরে সেমিফাইনাল খেলা। উল্লেখ্য, ২০০০ সালে তারা ভারতকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল। তবে তখন এটার নাম ছিল আইসিসি নকআউট ট্রফি।
ঢাকা/আমিনুল/নাভিদ