যুবদল নেতা তৌহিদ হত্যা: ৬ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা
Published: 5th, February 2025 GMT
কুমিল্লায় বাড়ি থেকে উঠিয়ে নিয়ে তৌহিদুল ইসলাম নামের এক যুবদল নেতাকে হত্যার ঘটনায় ৬ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে।
মঙ্গলবার দিবাগত রাতে নিহতের স্ত্রী ইয়াসমিন নাহার বাদী হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় এ হত্যা মামলা দায়ের করেন।
বুধবার দুপুরে মামলার বিষয়টি সমকালকে নিশ্চিত করেছেন কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিনুল ইসলাম।
তিনি বলেন, নিহতের স্ত্রীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমরা মামলা এফআইআর করেছি। ঘটনায় অভিযুক্তদের কেউই এলাকায় নেই। তাদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।
মামলার আসামিরা হচ্ছেন- জেলার আদর্শ সদর সদর উপজেলার পাঁচথুবি ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর (পান্ডানগর) গ্রামের সাইফুল ইসলাম, নিহত তৌহিদুলের প্রতিবেশী তানজিল উদ্দিন, নাজমুল হাসান টিটু, খাইরুল হাসান মাহফুজ, সাইদুল হাসান সবুজ ও একই উপজেলার বামইল গ্রামের সোহেল। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ২০/২৫ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে- অভিযুক্তদের সঙ্গে তৌহিদুলের পরিবারের জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে এলাকায় একাধিকবার সালিশ হয়। কিন্তু বিরোধ শেষ হয়নি। এ নিয়ে তৌহিদুলকে হত্যার হুমকি দেন আসামিরা। গত বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে মামলায় অভিযুক্তরা পূর্ব বিরোধের জের ধরে ২০/২৫ জন সিভিল পোশাকধারী এবং সেনাবাহিনীর মতো পোশাক পরিহিত লোক বাড়িতে গিয়ে যুবদল নেতা তৌহিদ ও প্রতিবেশী লুৎফুর রহমানকে আটক করে নিয়ে যান। পরদিন সকাল সাড়ে ৭টার দিকে একই ব্যক্তিরা আবারো আহত তৌহিদ ও লুৎফুরকে নিয়ে বাড়িতে এসে ঘরে তল্লাশি করে। এ সময় আটক লুৎফুর রহমানকে ছেড়ে দিলেও তৌহিদকে নিয়ে তারা চলে যান। পরে তারা সংকটাপন্ন অবস্থায় তৌহিদকে গোমতী বাঁধের ঝাঁকুনি পাড়ায় ফেলে যান। খবর পেয়ে কোতোয়ালি থানা পুলিশ দুপুর পৌনে ১২টার দিকে তাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মামলার বাদী ও তৌহিদুলের স্ত্রী ইয়াসমিন নাহার বলেন, ৪টি শিশু সন্তান নিয়ে আমি বিধবা হলাম। আমার স্বামী পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের শিকার। আমরা সরকারের কাছে ন্যায় বিচার চাচ্ছি। মামলার রায় না হওয়ায় পর্যন্ত দেশের সকল মিডিয়াকে কাছে পাবো বলে আশা করছি।
তৌহিদুলের বড় ভাই আবুল কালাম আজাদ বলেন, যাদের মামলায় আসামি করা হয়েছে এর বাইরেও কেউ কেউ থাকতে পারেন। এখানে রাজনৈতিক কোনো বিষয় আছে কি না তাও তদন্ত করে পুলিশ বের করবে বলে আশা করি।
এদিকে তৌহিদুলের মৃত্যুর ঘটনায় দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি হয়। তৌহিদুলের মরদেহের সুরতহালে পুলিশ তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে নির্যাতনের চিহ্ন ছিল বলে উল্লেখ করেছে। তিনি জেলার আদর্শ সদর উপজেলার পাঁচথুবি ইউনিয়নের ইটাল্লা গ্রামের মৃত মোখলেছুর রহমানের ছেলে। তিনি ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক ছিলেন। রাজনীতির পাশাপাশি তিনি চট্টগ্রামে একটি বেসরকারি শিপিং কোম্পানিতে চাকরি করতেন। গত ২৬ জানুয়ারি তার বাবা মারা যাওয়ার খবরে তিনি বাড়ি এসেছিলেন। তৌহিদুলের মারা যাওয়ার দিন ছিল বাবার কুলখানির আয়োজন। গত শনিবার দুই দফায় জানাজা শেষে তাকে বাবার কবরের পাশে সমাহিত করা হয়।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
বাকৃবিতে রিকশা ও অটোর ভাড়া নির্ধারণ, অমান্য করলেই ব্যবস্থা
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে চলাচলকারী রিকশা ও অটোরিকশার নতুন ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক বিভাগের উদ্যোগে এ ভাড়া নির্ধারণ করা হয়।
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এছাড়া এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করা হয়েছে।
ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থান থেকে নির্দিষ্ট গন্তব্য পর্যন্ত রিকশা ও অটোরিকশার ভাড়া তালিকা প্রকাশ করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, কেআর মার্কেট থেকে প্রশাসনিক ভবন, টিএসসি, হেলথ কেয়ার সেন্টার, করিম ভবন, ঈশা খাঁ হল, শহীদ জামাল হোসেন হল, শেষ মোড়, শহীদ শামসুল হক হল, আশরাফুল হক হল, শহীদ নাজমুল আহসান হল ও কৃষি সম্প্রসারণ ভবনে যেতে রিকশা ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ টাকা এবং অটোরিকশার ভাড়া ৫ টাকা।
কেআর মার্কেট থেকে ফজলুল হক হল, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হলে যেতে রিকশা ভাড়া ২০ টাকা এবং শাহজালাল হলে যেতে রিকশা ভাড়া ১৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
করিম ভবন থেকে শহীদ জামাল হোসেন হল, শাহজালাল হল, শহীদ শামসুল হক হল, আশরাফুল হক হল ও শহীদ নাজমুল আহসান হলে যেতে রিকশা ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ টাকা। ফজলুল হক হল, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হলে যেতে রিকশা ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ২০ টাকা।
জব্বারের মোড় থেকে ফজলুল হক হল, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হল, টিএসসি, প্রশাসনিক ভবন, সুলতানা রাজিয়া হল, তাপসী রাবেয়া হল, জুলাই ৩৬ হল, কৃষিকন্যা হল, বেগম রোকেয়া হল, কেআর মার্কেট, করিম ভবন, শহীদ নাজমুল আহসান হল, শহীদ শামসুল হক হল, শাহজালাল হল ও আশরাফুল হক হলে যেতে রিকশা ভাড়া ১০ টাকা এবং অটো ভাড়া ৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
ঈশা খাঁ হল, শহীদ জামাল হোসেন হল, শেষ মোড় রিকশা ভাড়া ১৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া জব্বারের মোড় থেকে অ্যাগ্রোনমি ফিল্ড, ফার্ম, ফিশারিজ ফার্ম ও হর্টিকালচার ফার্মে যেতে রিকশা ভাড়া নির্ধারিত হয়েছে ১৫ টাকা। ডেইরি ফার্ম ও পোল্ট্রি ফার্মে যেতে রিকশা ভাড়া হবে ২০ টাকা।
এছাড়া, টিএসসি ও প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে করিম ভবন, ফজলুল হক হল, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হলে যেতে রিকশা ভাড়া ১০ টাকা এবং শেষ মোড়ে যেতে রিকশা ভাড়া ১৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ বলেন, “ক্যাম্পাসে রিকশা ও অটোরিকশার ভাড়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থীদের নানা অভিযোগ ছিল। এসব সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে বাকৃবি উপাচার্যের নির্দেশে আলোচনা করে নতুন ভাড়া তালিকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এখানে আমাদের লক্ষ্য ছিল শিক্ষার্থী ও রিকশাচালক—এ দুই পক্ষকে সন্তুষ্ট রাখা।”
তিনি বলেন, “শিক্ষার্থীদের সুবিধার কথা যেমন বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে, তেমনি রিকশাচালকদের স্বার্থও গুরুত্ব সহকারে দেখা হয়েছে। আমি শিক্ষার্থীদের প্রতি অনুরোধ করবো, তারা যেন রিকশায় ওঠার আগে নির্ধারিত ভাড়া সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে নেয় এবং ভাড়া নিয়ে চালকদের সঙ্গে অস্পষ্টতা এড়ানোর জন্য পূর্বেই আলোচনা করে।”
তিনি আরো বলেন, “যদি কেউ নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি দাবি করে, তাহলে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে জানাতে হবে। কোন চালক অতিরিক্ত ভাড়া চাইলে বা নিয়ম মানতে অস্বীকৃতি জানালে, তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
ঢাকা/লিখন/মেহেদী