বিএনপি নেতার বক্তব্য ভাইরাল, তৌহিদি জনতার বিক্ষোভ
Published: 5th, February 2025 GMT
কুমিল্লার তিতাস উপজেলার কলাকান্দি ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিব ছাবিকুল ইসলামের একটি বক্তব্য ভাইরাল হয়েছে। রোববার কলাকান্দি ইউনিয়নে কালাচান্দকান্দি গ্রামে বার্ষিক ওরস মাহফিলে বক্তব্যটি দেন তিনি।
সোমবার ভাইরাল হওয়া ২ মিনিট ২৬ সেকেন্ডের বক্তব্যে বিএনপি নেতা ছাবিকুল ইসলামকে বলতে শোনা যায়, ‘আমরা ওয়াজ মাহফিল দিলে কোনো লোক হয় না, আশেকের গানের মধ্যে কেন এত হাজার হাজার জনতা। ওয়াজ দিয়ে কী লাভ, যদি লোক না আসে। তাহলে আমরা গানই করি।’ এই বক্তব্য অনলাইনে ছড়িয়ে পড়লে নানা প্রতিক্রিয়া জানাতে শুরু করেন নেটিজেনরা। উপজেলার একাধিক স্থানে তৌহিদি জনতার ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়। পরে সোমবার রাতে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ওসমান গণি ভূঁইয়া ও সদস্য সচিব মেহেদী হাসান সেলিম ভূঁইয়ার যৌথ স্বাক্ষরিত দলীয় প্যাডে ছাবিকুল ইসলামকে কারণ দর্শনোর নোটিশ দেওয়া হয়। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়। মঙ্গলবার বিকেলে নোটিশের জবাব দিয়েছেন ছাবিকুল ইসলাম। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে উপজেলা বিএনপি।
কলাকান্দি ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিব ছাবিকুল ইসলাম বলেন, ‘কয়েকদিন আগে আমি একটি ওয়াজ মাহফিল দিয়েছিলাম, সেখানে লোক হয়নি। গানের আসরে গিয়ে দেখলাম অনেক লোক। আক্ষেপ করে ওই বিষয়টি আমি আমার বক্তব্যে তুলে ধরেছিলাম। আমার ও দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে একটি চক্র উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমার মূল বক্তব্যের একটি অংশ প্রচার করে। তার পরও অনাকাঙ্ক্ষিত ভুলের জন্য আমি দেশবাসী ও দলীয় নেতাকর্মীর কাছে ক্ষমা চেয়েছি।’
উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মেহেদী হাসান সেলিম ভূঁইয়া জানান, শোকজের জবাব পেয়েছেন। দলীয় নেতাকর্মীর সঙ্গে বৈঠক করে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব র হ মণব ড় য় ব এনপ ছ ব ক ল ইসল ম ব এনপ র উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
রাজশাহীতে নির্ধারিত দামে সয়াবিন তেল পাওয়া যাচ্ছে না, অন্য পণ্যের দামও বাড়তি
রাজশাহীর বাজারে সবজিসহ বেশ কিছু নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। বাজারে সয়াবিন তেলেরও সংকট রয়েছে। এ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন ক্রেতারা। যদিও রমজান মাস শুরুর আগেও বাজারে স্বস্তি ছিল। রোববার রাজশাহী নগরের সাহেববাজার কাঁচাবাজার ও বিনোদপুর কাঁচাবাজারের ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ চিত্র পাওয়া গেছে।
ক্রেতারা বলছেন, বাজারে কাঁচা সবজির সংকট রয়েছে। বেগুন, ফুলকপি, আলু, মরিচ, পেঁয়াজের দাম আগের চেয়ে বেড়েছে। এ ছাড়া মুরগির দামও রোজা শুরু হওয়ার পর থেকে ১৫ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে কাঁচা সবজির সরবরাহ কিছুটা কমেছে, এ কারণে কিছুটা বেড়েছে। তবে গত বছর রমজান মাসের তুলনায় বাজার এবার অনেকটা ক্রেতার জন্য ভালো।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রোজা শুরু হওয়ার পর ৩৫ টাকা কেজির বেগুন ৫০ টাকা, ৩০ টাকা কেজির কাঁচা মরিচ ৫০ টাকা, ১৬ থেকে ২০ টাকা কেজির আলু ২০ থেকে ২৫ টাকা, ২০ টাকার পেঁয়াজ ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৭ থেকে ১০ টাকার প্রতিটি ফুলকপি ২০ টাকা, ১০ টাকার বাঁধাকপি ২০ টাকায়, ১০ টাকা আঁটির লালশাক ও পালংশাক ১৫ টাকায়, ২৫ টাকার লাউ ৫০ টাকায় উঠেছে। প্রকারভেদে ১০ থেকে ১৫ টাকা হালির লেবু বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৬০ টাকায়। বাজারে টমেটো ও শসার দাম কিছুটা কমেছে। এ ছাড়া বাজারে নতুন আসা সবজির মধ্যে পটোল ১২০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ১০০ টাকা, করলা ১০০ টাকা, বরবটি ১৪০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে রমজানের আগে ব্রয়লার মুরগির দাম ছিল ১৬০ থেকে ১৭০ টাকার মধ্যে। এখন সেই মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৮৫ থেকে ১৯০ টাকায়। বাজারে ডিমের দামও হালিতে দুই টাকা করে বেড়েছে। দাম বেড়ে লাল ডিম ৪০ ও সাদা ডিম ৩৬ টাকা হালি বিক্রি হচ্ছে। এদিকে বাজার ঘুরে পাঁচ লিটারের সয়াবিন তেলের খোঁজ পাওয়া যায়নি। বাজারে সরকার নির্ধারিত খোলা সয়াবিন ১৫৭ টাকা লিটারে বিক্রির কথা থাকলেও বিক্রি হচ্ছে ১৭৫ টাকায়। এ ছাড়া ১ লিটার ও ২ লিটার সয়াবিন তেলের বোতল পাওয়া যাচ্ছে। সরকার নির্ধারিত বোতলজাত সয়াবিনের দাম ১৭৫ টাকা নির্ধারণ করা হলেও বাজারে তা ১৮৫ থেকে ১৯০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
নগরের বিনোদপুর কাঁচাবাজার থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়–সংলগ্ন এলাকার বেশির ভাগ ক্রেতা শিক্ষক, শিক্ষার্থী। একটি সবজির দোকান থেকে বেগুন কিনতে এসে শিক্ষার্থী রাব্বি হোসেন বলেন, দুইটা বেগুনের দামই পড়ল ১৮ টাকা। কয়েকজন মিলে আজকে ইফতারের আয়োজন করেছেন। আগে ১৮ টাকায় আধা কেজি বেগুন কেনা যেত। রমজানে এসে দাম বেড়ে গেছে।
একই বাজারে ব্রয়লার মুরগি কিনতে এসেও হোঁচট খেতে হচ্ছে ক্রেতাদের। সাবিনা খাতুন নামের এক ক্রেতা বলেন, ব্রয়লার মুরগির দাম রমজানের আগে ১৬০ বা ১৭০ টাকায় ছিল। এখন সেই মুরগি কিনতে হচ্ছে বাড়তি দাম দিয়ে। ওই বাজারের ব্যবসায়ী রায়হান আলী বলেন, বাজারে সবজির সরবরাহ কিছুটা কম। নতুন সবজিও এখনো আসছে না। এ কারণে দাম বেড়েছে। তবে গত রমজানের চেয়ে অনেক কম।
নগরের সাহেববাজার কাঁচাবাজার থেকে ইফতারের আগে বাজার করছিলেন নগরের আলুপট্টি এলাকার বাসিন্দা রমজান আলী। লেবুর দোকানে দাঁড়িয়ে দামদর করছিলেন তিনি। রমজান বলেন, কয়েক দিনের ব্যবধানে বাজারে সবজির দাম বেড়েছে। এ ছাড়া মুরগির দামও চড়া। লেবুর কাছে তো ভেড়াও যায় না। তখন লেবু ব্যবসায়ী আলী হোসেন বলেন, উৎপাদন এলাকা থেকে লেবু বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। এ কারণে দাম বেশি।
সয়াবিনের পাঁচ লিটারের বোতল না পেয়ে কয়েকটা দুই লিটারের বোতল কিনলেন হাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, দোকানগুলোতে লিখেই দেওয়া হয়েছে, অমুক কোম্পানির পাঁচ লিটারের তেল নেই। বাড়িতে একটি অনুষ্ঠান আছে। তাই বেশি সয়াবিন তেল কিনতে হয়েছে। ব্যবসায়ী রতন আলী বলেন, রোজা শুরুর আগে থেকেই বাজারে পাঁচ লিটারের সয়াবিন তেলের সংকট রয়েছে। কোম্পানিগুলোই তেল দিচ্ছে না। বাজারে সংকট রয়েছে। তাঁদেরও বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। এ কারণে দাম একটু বেশি।
এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের রাজশাহী জেলার সহকারী পরিচালক বিপুল বিশ্বাসের মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি ধরেননি। কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) রাজশাহী জেলার সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা বলেন, বাজারে সয়াবিন তেলের সংকট তৈরি করা হয়েছে। অন্য পণ্যগুলো মোটামুটিভাবে নাগালের মধ্যে। তবে কয়েক দিন কিছু সবজির দাম বেড়েছে। সরবরাহ কমবেশি হওয়ার কারণে এমনটা হতে পারে। বাজার মনিটরিং জোরদার করে অসাধু ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় আনলে বাজার স্থিতিশীল থাকবে।