ছাত্র ও তরুণদের নেতৃত্বে নতুন রাজনৈতিক দল আসছে বলে জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। 

বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভেরিফায়েড আইডি থেকে দেওয়া পৃথক পোস্টে এ তথ্য জানিয়েছেন তারা।

একই লেখা পোস্ট করে হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস বলেন, ছাত্র-তরুণদের নেতৃত্বে নতুন রাজনৈতিক দল আসছে! আপনি কেমন দল চান আমরা তা জানতে চাই এবং সে আদলেই দলটি গড়তে চাই। কমেন্টে দেওয়া ফর্মে আপনার মতামত জানান। ফর্মটি পূরণ করতে মাত্র ৫ মিনিট সময় লাগবে। 

ফেসবুকে দেওয়া ওই পোস্টের কমেন্টে একটি ফর্মও যুক্ত করেছেন তিনি। ‘আপনার চোখে নতুন বাংলাদেশ’ শীর্ষক শিরোনামের ওই ফর্মটিতে নতুন রাজনৈতিক দলের নাম ও প্রতীক কী হতে পারে সে বিষয়ে পরামর্শ চাওয়ার পাশাপাশি নতুন রাজনৈতিক দলের কাছে প্রত্যাশা ও বেশকিছু মতামত চাওয়া হয়েছে।

এদিকে দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে ছাত্র-তরুণদের নেতৃত্বে নতুন রাজনৈতিক দল গঠনে জনমত সংগ্রহের লক্ষ্যে সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে নতুন রাজনৈতিক দল গঠনে অন্তত ১ লাখের বেশি জনমত সংগ্রহের পাশাপাশি সর্বস্তরের জনগণকে নতুন রাজনৈতিক দলের নাম ও প্রতীক প্রস্তাবের আমন্ত্রণ জানানো হয়।

দুপুরে রাজধানীর বাংলামোটরে আয়োজিত ওই সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসিরউদ্দীন পাটোয়ারী বলেন, ফেব্রুয়ারি মাসেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতৃত্বে নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ হতে যাচ্ছে। দলে যোগ দিতে হলে উপদেষ্টাদের অবশ্যই সরকারি পদ থেকে পদত্যাগ করতে হবে।

নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, আমরা ১ লাখ মানুষের কাছে যাবে। ‘আপনার চোখে নতুন বাংলাদেশ’ এ স্লোগানকে সামনে রেখে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির যৌথ উদ্যোগে নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের জন্য অনলাইন ও অফলাইনে ক্যাম্পেইন শুরু হয়েছে। এ ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে দল গঠনে মানুষের প্রত্যাশা জানতে চাওয়া হবে।

এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, জুলাই আন্দোলনে ফ্যাসিবাদকে হটাতে পারলেও এখনো বিভিন্ন জায়গায় তাদের বিচরণ রয়েছে। আমরা পরোপুরিভাবে এখনো বিজয় লাভ করতে পারিনি। রাজনৈতিক দলগুলো ও রাজনৈতিক কাঠামো মানুষের আশা আকাঙ্ক্ষা ধারণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। ২০২৪ পরবর্তী স্পিরিট ধারণ করে আমার মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার কথা মাথায় রেখে নতুন দল গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: দল গঠন

এছাড়াও পড়ুন:

ভারতের সংসদের আসন বৃদ্ধি নিয়ে ৭ মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিলেন স্ট্যালিন

জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ভারতের সংসদের আসন বাড়ানোর সম্ভাবনা রুখতে দেশের সাত মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখলেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন। সাত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তিনি আমন্ত্রণ জানিয়েছেন তিন সাবেক মুখ্যমন্ত্রীকেও। সবাইকে অনুরোধ করেছেন, আগামী ২২ মার্চ চেন্নাইয়ের সভায় উপস্থিত থাকতে। সেখানে দাক্ষিণাত্যের বিরুদ্ধে কেন্দ্রের ‘গণতান্ত্রিক অবিচারের’ প্রতিবাদে দেশব্যাপী জনমত গড়ার চেষ্টা হবে। 

মুখ্যমন্ত্রী স্ট্যালিন গত শুক্রবার আমন্ত্রণ জানিয়ে চিঠি লিখেছেন দক্ষিণের চার রাজ্য কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন, কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া, তেলেঙ্গানার রেবন্ত রেড্ডি ও অন্ধ্র প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডুকে। পাশাপাশি চিঠি লিখেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, পাঞ্জাবের ভগবন্ত সিং মান ও বিজেপি শাসিত ওডিশার মুখ্যমন্ত্রী মোহন চরণ মাঝিকেও। এই সঙ্গে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন তিন সাবেক মুখ্যমন্ত্রীকে। তাঁরা হলেন চন্দ্রশেখর রাও (তেলেঙ্গানা), জগনমোহন রেড্ডি (অন্ধ্র প্রদেশ) ও নবীনচন্দ্র পট্টনায়েক (ওডিশা)। প্রত্যেক নেতাকে তিনি লিখেছেন, কেন্দ্রীয় সরকার যেভাবে সংসদীয় সীমানা পুনর্নির্ধারণের মাধ্যমে লোকসভার আসন বৃদ্ধি করতে চাইছে তা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর প্রতি মারাত্মক আঘাত। কেন্দ্রীয় ফর্মুলায় তারাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে, যারা জন্মনিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি সাফল্যের সঙ্গে রূপায়ণ করে সুশাসনের নজির সৃষ্টি করেছে।

আসন বৃদ্ধির এই সম্ভাবনা রুখতে স্ট্যালিন ইতিমধ্যেই তাঁর রাজ্যে সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছিলেন গত ৫ মার্চ। বিজেপি ও তার সহযোগী স্থানীয় দল তামিল মানিলা কংগ্রেস ও এনটিকে সেই বৈঠকে যোগ দেয়নি। বৈঠকে দুটি প্রস্তাব সর্বসম্মতভাবে পাস হয়। একটিতে কেন্দ্রীয় সরকারকে বলা হয়েছে, লোকসভার আসন বৃদ্ধি আরও ৩০ বছর স্থগিত রাখা হোক। এই সময়ের মধ্যে সরকার সর্বত্র জন্মনিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি সফল করুক, যাতে সংসদে প্রতিনিধিত্বের প্রশ্নে কোনো রাজ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত হতে না হয়।

দ্বিতীয় প্রস্তাব ছিল, এই নিয়ে দেশব্যাপী জনমত গড়ে তুলতে এক যৌথ অ্যাকশন কমিটি গঠন করা হবে। ২২ মার্চের বৈঠকের উদ্দেশ্য সবাইকে নিয়ে সেই কমিটি গড়ে তোলা।

শুধু মুখ্যমন্ত্রীদেরই নয়, ২২ মার্চের বৈঠকে বিজেপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকেও স্ট্যালিন আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। সে জন্য চিঠি লিখেছেন কংগ্রেস, সিপিআই, সিপিএম, এআইএমআইএম, জেডিএস, অকালি দল, ওয়াইএসআর কংগ্রেস, টিডিপি, বিআরএস, জন সেনা, আপ ও তৃণমূল কংগ্রেসকে। কেরালা, কর্ণাটক, তেলেঙ্গানা, অন্ধ্র প্রদেশ, পাঞ্জাব, ওডিশা ও পশ্চিমবঙ্গের বিজেপির রাজ্য শাখার নেতাদেরও তিনি আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।

ত্রিভাষা নীতি জবরদস্তি চাপিয়ে দেওয়ার মধ্য দিয়ে হিন্দি আগ্রাসন রোখা এবং সংসদের আসন বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে দাক্ষিণাত্যের রাজ্যগুলোকে অপ্রাসঙ্গিক করে তোলার বিরুদ্ধে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী সবাইকে জোটবদ্ধ করতে চাইছেন। হিন্দি ভাষা শিক্ষার নামে কেন্দ্রীয় সরকার তামিলনাড়ুকে ব্ল্যাকমেল করছে বলে তিনি অভিযোগ করেছেন। স্ট্যালিন বলেছেন, রাজ্যের প্রাপ্য বরাদ্দ কেন্দ্র দিচ্ছে না। আগামী বছর তামিলনাড়ু বিধানসভার নির্বাচনের আগে এই দুই বিষয়কে হাতিয়ার করে মুখ্যমন্ত্রী স্ট্যালিন তামিল জাত্যভিমান জাগানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন, যাতে বিজেপির চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করে আরও পাঁচ বছর ক্ষমতাসীন থাকতে পারেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভারতের সংসদের আসন বৃদ্ধি নিয়ে ৭ মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিলেন স্ট্যালিন